Saturday, July 21, 2012

শেরপুরে মেধাবী মুখ আঙ্গুরার চমক!






Thu 19 Jul 2012 11:50 AM BdST
rtnn

শেরপুর, ১৯ জুলাই:মাধ্যমিকে (এসএসসি) গোল্ডেন জিপিএ-৫।
অভাবী সংসারে খরচ যোগানের শঙ্কায় পড়ালেখা বন্ধের উপক্রম। কতিপয় মানুষের সহায়তায় ফের কলেজমুখী, উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি) আবারও গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করে চমক! গল্প নয়, বাস্তবের এই প্রতিচ্ছবি শেরপুরে দিনমজুর আব্দুল আজিজের মেয়ে আঙ্গুরার।

আঙ্গুরা এবার শেরপুর মডেল গার্লস কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে অভাবনীয় এই সাফল্য অর্জন করেছে। তাদের বাড়ি শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ঘেষা রামনগরের চতল গ্রামে। আঙ্গুরার বাবা আব্দুল আজিজ দিনমজুর, মা আমেনা গৃহিনী।আঙ্গুরার বাবা অন্যের জমিতে দিনচুক্তি কাজ করে চালান চার ভাই-বোনের সংসার। ছনের ঘরে কুপি বাতিতে পড়ালেখা করে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিল আঙ্গুরা।  অভাবের কাছে হার মেনে পড়াশোনা বাদ দিয়ে মেয়েকে ঘরে বসিয়ে রাখেন বাবা আব্দুল আজিজ




জেলার বিভিন্ন কলেজে ভর্তির সময় শেষ হয়ে যায়। দরিদ্রতার কারণে ভর্তি হতে পারে না আঙ্গুরা। তবে মেধাবী আঙ্গুরার খবর পেয়ে জেলার কয়েকজন সাংবাদিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। তারা মেয়েটিকে জেলা শহরের মডেল গার্লস কলেজে ভর্তি করে দেন। কলেজের অধ্যক্ষ আঙ্গুরার ফলাফল ও পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ দেখে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দেন। একই সাথে তিনি তার সার্বিক দায়িত্ব নেন। দুই মাস আগে এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলেও বাড়ি পাঠাতে পারেননি অধ্যক্ষ আতাউর রহমান। বাড়িতে অভুক্ত থাকবে জেনে অধ্যক্ষ নিজ তত্ত্বাবধানে কলেজ হোস্টেলেই রেখে দিয়েছেন।

কলেজের সহযোগিতা আর নিজের অদম্য ইচ্ছা শক্তিতে আঙ্গুরা এবার এইচএসসিতেও মানবিক শাখা থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এমন ফলাফলের পরেও আঙ্গুরার চিন্তার শেষ নেই। দারিদ্রতা তার সোনালী ভবিষ্যতকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।

কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান জানিয়েছেন, ‘দরিদ্র এই মেয়েটি সুযোগ পেলে দেশের অহঙ্কার হবে। তার মেধা ও মনন ঐশ্বরিক। তাকে সহায়তায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।’

দরিদ্র পিতা আব্দুল আজিজ মেয়ে কি ফল করেছে তা বুঝতে না পারলেও ভালো যে করেছে- তা মানুষের মুখে মুখে শুনে বুঝতে পারছেন। তবে তার মনেও শঙ্কা মেয়ে নিয়ে তিনি কি করবেন? তিনি বলেন, ‘মেয়েটিকে তিনি ওই কলেজেই রেখে পড়ালেখা করাবেন।’

কলেজটিতে যে উচ্চ মাধ্যমিকের বেশি পড়ালেখা করা যায় না- অক্ষরজ্ঞানহীন সহজ-সরল এই মানুষটি জানেন না। তাকে বিষয়টি স্মরণ করে দেওয়া হলে যেন আকাশ ভেঙে তার মাথায় পড়ার অবস্থা। শুধু একটি শব্দই উচ্চারণ করেন- ‘তাহলে আমার আঙ্গুরা মায়ের কি হবে?’
রিয়েল-টাইম নিউজ ডটকম

No comments:

Post a Comment