Saturday, September 1, 2012

মাধ্যমিকের বই ছাপাতে ২১ কোটি ৭৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা কম খরচ





আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপার খরচ ধরা হয়েছিলো ৯৩ কোটি ৯৭ লাখ সাড়ে ৬৬ হাজার টাকা। কিন্তু সরকার অনুমোদিত দরপত্র অনুযায়ী খরচ পড়বে ৭২ কোটি ২৪ লাখ সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা। প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ২১ কোটি ৭৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা খরচ কম হচ্ছে। খরচ কমের শতকরা হার ২৩ দশমিক ১৩ ভাগ।
বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ২০১৩ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) এবং এসএসসি ভোকেশনাল স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই কাগজসহ মূদ্রণ, বাধাঁই ও উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পরিবহনের দরপত্র অনুমোদন করেছে। প্রাক্কলিত দরের চেয়ে দরপত্রে অংশগ্রহনকারীদের মধ্য থেকে যোগ্য হিসেবে চিহ্নিতদের উল্লেখিত দর কম হওয়ার কারন হিসেবে বলা হয়েছে, প্রতিবছর আলাদাভাবে কাগজ কেনা হয়। আর বাধাঁই মূদ্রন ও পরিবহনের কাজ আলাদাভাবে করা হয়। এবার এদুটি কাজ একত্রে করা হচ্ছে। আলাদাভাবে কাগজ না কেনার কারনে খরচ কমেছে।
জানা গেছে, এবছরের বাজেটে বিনামূল্যে পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরনের জন্য ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
মাধ্যমিকের তিন কোটি ২৯ লাখ১৯ হাজার ৯৮৩ কপি বই ছাপার জন্য মোট ৪৯ টি লটে দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্র জমা পড়ে ১৭০ টি। এরমধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে মাধ্যমিকের বইয়ের জন্য মোট ৭২ কোটি ২৪ লাখ সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, প্রাক্কলিত দরের চেয়ে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত দরদাতাদের দর গড়ে ২৩.১৩% কম। লটপ্রতি সবচেয়ে বেশি দর কমেছে ২৭.১১%, আর সবচেয়ে কম কমেছে ১৬.৬১%।
দরদাতাদের মধ্যে একই প্রতিষ্ঠান একাধিক লটে নিম্ন দরদাতা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম প্রমা, প্রিয়াংকা, আনন্দ চারটি করে লটের নিম্ন দরদাতা। দরদাতাদের বৈধতার মেয়াদ থাকবে আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত।

Thursday, August 30, 2012

যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রবাসী বাংলাদেশি মো. আলী ইমামকে কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি চিহ্নিত অপরাধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে


মনট্রিয়ল, ২৬ আগষ্ট- যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রবাসী এক বাংলাদেশিকে কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি (সিবিএসএ) তাদের চিহ্নিত অপরাধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। ওই ব্যক্তির নাম মো. আলী ইমাম (৫৯)। কানাডায় বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে পাঁচজনকে গত বৃহস্পতিবার 'ওয়ান্টেড' তালিকাভুক্ত করে সংস্থাটি। বাকি চারজন জ্যামাইকা, ইকুয়েডর ও আজারবাইজানের নাগরিক। তাঁরাও বিভিন্ন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত।
দৈনিক ন্যাশনাল পোস্ট জানিয়েছে, অভিযুক্ত আলী ইমাম মন্ট্রিয়েল শহরে বসবাস করতেন। বর্ডার সার্ভিসের তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি আত্মগোপন করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ করার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে কানাডা জুড়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তবে তাঁর অপরাধের বিশদ বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। ধরা পড়লে তাঁকে কানাডা থেকে বের করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া অন্য শাস্তিও হতে পারে।
তালিকাভুক্ত অন্য চার অভিযুক্ত হচ্ছেন জ্যামাইকার নাগরিক ডারব্যান্ট ডেভ জ্যাক ও ডোনোভান সিনক্লেয়ার, ইকুয়েডরের মার্কোস ইয়ামিল ডি মোলিনা ও আজারবাইজানের ফরিদ ইউসুপোভ। তাঁরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে দেশ থেকে পালিয়ে কানাডায় এসে নির্বাসিত জীবন যাপন করছিলেন।
সিবিএসএ গত জুলাই মাসে তাদের ওয়েবসাইটে চিহ্নিত অপরাধীদের যে তালিকা প্রকাশ করে, তাতে মো. আলী ইমামসহ বেশ কিছু বিদেশির নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। এই তালিকা অনুসরণ করে কানাডার ফেডারেল ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি ২৭ জন বিদেশিকে চিহ্নিত করে। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনকে এরই মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আলী ইমামসহ অন্যদের ঘোষিত ঠিকানায় খুঁজে না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার নতুন করে ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির ওয়েবসাইটে আলী ইমাম সম্পর্কে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তাতে তাঁর নাম মো. আলী ইমাম। এ ছাড়া তিনি সে দেশে ইমাম এ হোসাইন, আলী মোহাম্মদ ইমাম, ইমাম আলী ইত্যাদি নামেও পরিচিত। বসবাস করতেন মন্ট্রিয়েল শহরে। তাঁকে শনাক্ত করার বিশেষ কোনো চিহ্ন বা তথ্য কানাডা পুলিশের কাছে নেই। তাঁর সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে, 'এই ব্যক্তিকে কানাডা থেকে বের করে দেওয়ার জন্য দেশজুড়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো। এটা প্রতীয়মান হয়েছে যে তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধ অপরাধ অথবা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে মানবতা ও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছেন। তাই তিনি কানাডায় আর গ্রহণীয় নন।'
তবে সমালোচকরা কানাডা সরকারের এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অপরাধের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির লোক দেখানো কড়া পদক্ষেপ হিসেবে সমালোচনা করেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এতে আপত্তি জানিয়ে বলেছে, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কাউকে শনাক্ত করা হলে তাঁকে দেশে ফেরত না পাঠিয়ে কানাডাতেই বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।