Tuesday, June 17, 2014

ডুবন্ত বিএনপিকে রক্ষায় ড. কামাল হোসেনের শেষ চেষ্টা -সরদার সিরাজুল ইসলাম


বাংলাদেশে এখন মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান, সংবিধান, নির্বাচন ইত্যাদি নিয়ে ফ্রি স্টাইল কথাবার্তা, টকশো ও পত্র-পত্রিকায় সুশীলদের অক্লান্ত অপপ্রচার সরকারের বিরুদ্ধে এবং বিএনপি জামায়াতের পক্ষে। একথা সবাই জানেন যে, বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। জিয়া সামরিক পোশাক পরে বেতার-টেলিভিশনের মাধ্যমে অন্তত তিনটি বাজেট ঘোষণা করেছিলেন (’৭৬, ’৭৭, ’৭৮)। এমনি অবৈধ কর্মকা-ের উত্তরাধিকার বিএনপি নেতারা কোন আক্কেলে গত ৫/৬/১৪ তারিখে জাতীয় সংসদে পেশকৃত বাজেটকে অবৈধ সরকারের অবৈধ বাজেট বলে?
জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে নিহত হওয়ার মাত্র ১৩দিন আগে শেখ হাসিনা দেশে ফেরেন। জিয়া খালি মাঠে গোল দিয়েছেন কিন্তু ৫ বছর রাজত্বকালে প্রতিদিনই ক্যান্টনমেন্টে সৈনিক হত্যা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তিনি যদি ওইভাবে মারা না যেতেন তাহলে শেখ হাসিনার গণআন্দোলনে ২/৩ বছরের মধ্যেই তাকে স্বৈরাচার খেতাব নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হতো। কিন্তু চক্রান্তকারীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনর্প্রতিষ্ঠাকে বিলম্বিত করার লক্ষ্যে জিয়াকে হত্যা করে এরশাদের সৌজন্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে ঢাকা শহরে সংসদ প্লাজায় একটি বিরাট উদ্যানে রাজকীয় দাফনের মাধ্যমে তাকে একটি অমরত্ব প্রদানের চেষ্টা করেন। তাকে শহীদ বা ঘোষক টাইটেল দেন তার ভক্তরা। জিয়াউর রহমান কিভাবে শহীদ হয় এর কোন ব্যাখ্যা নেই। কারণ তার মৃত্যু হয়েছিল জাতির কোন গৌরবময় পদক্ষেপ বা ধর্মযুদ্ধের জন্য নয়। জিয়াউর রহমানের কোন জীবনী গ্রন্থ এ পর্যন্ত কেউ লিখতে পারেননি। তার দলের লোকেরা বহুবার সরকারী টাকা খেয়ে শেষ পর্যন্ত তা লিখতে পারেননি। সর্বশেষ ৮লাখ টাকা খেয়েছিলেন মরহুম ড. আফতাব আহম্মেদ (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি)। 
বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ রাজনীতি বিষয়ক একজন ভাল লেখক কিন্তু জিয়াকে নিয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের এমন কোন মূল্যায়ন নেই যা তাকে শহীদের মর্যাদা দিতে পারে। বরং যা আছে তা পাঠ করলে তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। সে যাই হোক, মওদুদ আহমদ কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ওপর লিখিত গ্রন্থ Bangladesh: Era of Sheikh Mujibur Rahman
 গ্রন্থের উপসংহার তাকে শহীদের মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন। 
জিয়াউর রহমানের পরবর্তীতে বিএনপির ভগ্নদশা থেকে সাইডলাইনে ম্যাডাম খালেদাকে নামালেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কারণ এরশাদ নিশ্চিত ছিলেন যে, আওয়ামী লীগকে হত্যা করা যায়নি বরং তার শক্তি আরও প্রবল মাত্রা পেয়েছে। তাই শেখ হাসিনার আন্দোলনের (’৮৩-’৯০) মুখে এরশাদের পতনের সম্ভাব্য চিন্তায় জিয়া-এরশাদের অভিন্ন ধারা প্রলম্বিত করার জন্য ম্যাডাম খালেদাকে সাইডলাইনে রাজপথে নামালেন। ১৯৮৬ সালে বিএনপির ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার মতো লোক ছিল না। এবং জিয়া-এরশাদের ভোট ভাগাভাগি ঠেকাতে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাইরে রেখেছিলেন এরশাদ। চট্টগ্রামে শেখ হাসিনাকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা এরশাদও করেছিলেন ১৯৮৮ সালে ২৪ জানুয়ারি। এরশাদবিরোধী আন্দোলন এককভাবে চালিয়ে তুললেন শেখ হাসিনা। আর আপোসহীন খেতাব পেলেন এরশাদকে নেপথ্যে সহযোগিতাকারী ম্যাডাম খালেদা। এসব সুশীল মিডিয়ার কারসাজি। সেই সুশীলরাই ১৯৯১ সালে ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনাকে ঠেকাতে সফল হয়েছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে নানা কৌশল ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপি বিজয়ী হয়ে যেসব অপকর্ম করেছে তার লম্বা ফিরিস্তি এখানে দেয়া সম্ভব নয়। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ২৬ জানুয়ারি ২০০৮ সংখ্যায় ২১ আগস্টের হামলা: সত্য বেরিয়ে আসছে ‘আষাঢ়ে গল্পকারদের’ কী হবে? 
শিরোনামে বিএনপির ভবিষ্যত নিয়ে যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন সেই নিবন্ধ থেকে কিছুটা উদ্ধৃতি করা হলো-
‘মনে আছে, ২৬ আগস্ট অপরাহ্ণে বেগম জিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দীর্ঘ আলোচনার সময় তারেক রহমানও উপস্থিত ছিলেন। সেদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বেশ বিচলিত মনে হয়েছিল। সে সময় খালেদা জিয়ার আমন্ত্রণে পত্রিকার সম্পাদকরা তাঁর সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে দেখা করেছিলেন। বেগম জিয়া শুরুতেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কারা এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আপনি মনে করেন? আমার সরাসরি উত্তর ছিল ‘সুনির্দিষ্টভাবে আমার পক্ষে বলা মুশকিল। তবে হরকত-উল-জিহাদ, ভারতের অসমের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘উলফা’ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সংগঠন ফ্রিডম পার্টি প্রভৃতি হয়ত এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। এসব গোষ্ঠীর পরস্পরের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তারা পরস্পরকে সাহায্য-সহযোগিতা করে বলেও শোনা যায়।’
বেগম জিয়া শুরুতেই ‘ফ্রিডম পার্টির এখন আর অস্তিত্ব নেই’ বলে তাদের জড়িত থাকার সম্ভবনা নাকচ করে দেন। কিন্তু হরকত-উল-জিহাদ ও উলফা সম্পর্কে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। আমার এখনও মনে পড়ে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেই আলোচনাটি ছিল কখনও স্বাভাবিক, কখনও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। সেদিন অপরাহ্ণের আলোচনায় বেগম জিয়া বার বার আওয়ামী লীগকে প্রয়োজনে শায়েস্তা করা হবে এবং কিছুতেই ’৯৬ সালের অবস্থা তৈরি করতে দেবেন না বলে জানিয়েছিলেন। 
সম্প্রতি প্রথম আলোর অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, জোট সরকারের প্রভাবশালী অংশ থেকে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থাকে সে সময়ে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা সম্পর্কে কোন তদন্ত করতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছিল। তৎকালীন সরকার তাদের পছন্দের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের দিয়ে ২১ আগস্টের হত্যাকা-ের উদ্দেশ্যমূলক তদন্ত করিয়েছিল বলে জানা যায়। এসব তথ্যের পটভূমিতে এখন যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন, তাহলে কি ২১ আগস্ট হামলার সঙ্গে জোট সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কোন যোগসাজশ ছিল? সে সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থায় কর্মরত কোন কোন কর্মকর্তার মনেও এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। ওই হামলার পরপর বিভিন্ন ঘটনা থেকে এমন ধারণাই হয়েছিল তাদের।
আজ যখন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে হত্যা করতে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো অবিশ্বাস্য ভয়াবহ ঘটনাবলীর অনেক তথ্য বের হয়ে আসছে তখন এটা সত্যি বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ে যে, একটি নির্বাচিত সরকার ও নেতৃত্ব কীভাবে তাদের প্রতিপক্ষ শক্তিকে ধ্বংস করতে কী নিলর্জ্জভাবে সত্যকে উল্টোপথে পরিচালিত করতে পারে! এবং সেই জঘন্য কাজটি হয়েছে এই ঢাকায়, এই বাংলাদেশে।
২১ আগস্টের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের এই ভূমিকাকে দেশের মানুষ কীভাবে গ্রহণ করবে? এক ঘটনা বিএনপির জন্য এখন এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবেই বিবেচিত হবে। 
এই বক্তব্যই সাক্ষ্য দেয় যে, বিএনপিকে জাতি ২০০৮ সালে বর্জন করেছেন এবং ভবিষ্যতে তার এগোবার আর কোন পথ নেই। সেই কারণেই তারা বিকল্প পথের সন্ধান না পেয়ে নির্বাচন বর্জন করেছে তার প্রধান কারণ যে ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিলেন তার চাইতে কম পেলেও তার বিএনপি জামায়াতের চেয়ে অনেক বেশি। 
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান দিয়ে যে সংবিধান সংশোধন করেছিলেন তা গ্রহণযোগ্য ছিল না। পরে জিয়ার রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছে। সেই সংবিধানের আওতায় ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০২ এবং ২০০৮-এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা দু’দুবার ক্ষমতায় এসেছে।
২০০৮-এ ৯০ শতাংশ আসনে আওয়ামী জোট নির্বাচিত হয়েছে। সে নির্বাচনে শতভাগ স্বচ্ছতা ছিল; যা নিয়ে জামায়াত-বিএনপির সুশীল বাটপাররাও কোন প্রশ্ন তুলতে পারেননি। বিএনপি-জামায়াত জোট পেয়েছিল ৩০টি আসন। ২০০১ সালের কথিত নিরপেক্ষ নির্দলীয় দুই প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন-লতিফুর রহমান ম্যাডাম খালেদাকে অদেয় কিছু না রাখার নির্বাচনের কলঙ্ক দেশবাসী ভুলে যায়নি। দৃষ্টি এড়ায়নি সুপ্রীমকোর্টের। যার প্রমাণ পাওয়া যায় সুর্প্রীমকোর্টের আদেশ। তথাকথিত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেই সুপ্রীমকোর্ট ক্ষান্ত হয়নি বরং এই মর্মে একটি ড়নংবৎাধঃরড়হ (যা বাধ্যতামূলক নয়) দিয়েছে যে “সংসদ মনে করলে দশম ও একাদশ নির্বাচন করলে তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে তবে অনির্বাচিত কাউকে নেয়া যাবে না।” যারা তত্ত্ববধায়ক সরকার পদ্ধতির কথা বলেন তারা এর বাইরে একজন লোক ঠিক করুন তো? 
সুপ্রীমকোর্টের এই আদেশটির প্রেক্ষাপট্ হচ্ছে এক নাগরিক হাইকোর্টে একটি রিট করেন যাতে সামরিক শাসকদের বৈধতার প্রশ্ন প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে। সুপ্রীমকোর্ট জিয়া-এরশাদের শাসনকালকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং নির্দলীয় তত্ত্ববধায়ক সরকার প্রথা আর্টিকল ৫৮-(থ) বাতিল ঘোষণা করে।
যেহেতু আওয়ামী লীগ পঁচাত্তর পরবর্তীতে বিশেষ করে ২০০৮’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোটের নির্বাচনী ওয়াদা ছিল ১৯৭২- এর সংবিধান পুনঃস্থাপন করবেন এবং যেহেতু সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের জিয়া-এরশাদের সামরিক ফরমান দ্বারা সংবিধানের সংযোজনী বাতিল হয়ে যায় সেহেতু সংবিধানে সংশোধন অপরিহার্য হয়ে যায়। আওয়ামী জোটের তিন-চতুর্থাংশ সংসদীয় আসন থাকায় বাহাত্তরের সংবিধান (বিসমিল্লা-রাষ্ট্রধর্ম ব্যতীত) পুনর্বহাল হয় (৩০.০৬.২০১১)
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সুপ্রীমকোর্টের আদেশের পর যদি সংবিধান সংশোধনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য নাও থাকত তবুও জিয়া-এরশাদের সামরিক ফরমানের সংবিধান অকার্যকর হওয়ায় এবং বিরোধী দল বিএনপিকেই পঞ্চদশ সংশোধনীতে ভোট দিতে হতো। অথবা বিএনপি রাজি না হলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে ১৯৭২-এর সংবিধান পুনঃস্থাপিত হতো। কেননা সুপ্রীমকোর্টের আদেশ বাধ্যতামূলক। তাই পঞ্চদশ সংশোধনী আইনও ন্যায়সঙ্গত।
কিন্তু বিএনপি-জামায়াত এই সংবিধান মানে না। পল্টনের জনসভায় ম্যাডাম খালেদা জিয়া বলেছেন, এই সংবিধান এখন ডাস্টবিনে ফেলে দেবেন অথচ সেই সংবিধানের আওতায় তিনি তখনও বিরোধী দলের নেত্রী। সংসদ থেকে পদত্যাগ করেই এ কথা বলতে পারতেন। যতদিন এই সংবিধান বহাল থাকবে তা মেনেই রাজনীতি করতে হবে। আর কোনদিন নির্বাচন না করলে সেই দলের শাস্তিস্বরূপ নিবন্ধন বাতিল হওয়া উচিত। অবাক হওয়ার কিছু নেই যখন দেখা যায় বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধুর আইন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন তার সংবিধানের ফিরে যাওয়া ভাল লাগছে না বরং বাতিল চাইছেন। ড. কামাল হোসেনের মনে এখন গভীর বেদনা ও হতাশা। কারণ এখন দলে থাকলে রাষ্ট্রপতি হতে পারতেন। ১৯৯১ সালে তিনি আওয়ামী লীগ ঠেকাতে সচেষ্ট থেকে শেষ পর্যন্ত দলত্যাগ করেন। তার কাছে রাজনীতির মাধ্যমে দেশ সেবার চাইতে আইন ব্যবসা বেশি লাভজনক বলে সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত। ড. কামাল হোসেন ছাড়াই শেখ হাসিনার অবিশাস্য সাফল্য কি তাকে রাতে নিদ্রাহীন করেছে? তিনি এখন বঙ্গবন্ধু খুনী জিয়ার বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আবার দুঃশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন, কিন্তু সেই দুর্নীতিবাজ রাজাকারের পক্ষে লড়াই করে বরং তা ‘শেয়ার’ (ংযধৎব) করেন।
সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হয়েছে একথা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন বিরোধী নেতা ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে টেলিফোন সংলাপ করে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেখিয়েছেন এবং শুনিয়েছেন (২৬.১০.১৩)। শেখ হাসিনা হরতাল প্রত্যাহার করে ২৮.১০.১৩ তারিখে সন্ধ্যায় গণভবনে যতজন ইচ্ছা ততজন নিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানান। ‘নির্বাচনসহ সবকিছু নিয়ে কথা হবে।’ কিন্তু খালেদা জিয়া তা প্রত্যাখ্যান করলেন এই বলে যে হরতাল প্রত্যাহার করবেন না। আর হরতালের মধ্যে তিনি নিজে বের হন না। সদিছা থাকলে ৩ দিনের হরতাল প্রথম একদিন (২৭.৬.১৩) পালন করে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ বন্ধ করে পরবর্তী দুই দিন হরতাল প্রত্যাহার করে ২৮-১০-১৩ শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করতে পারতেন, নির্বাচনের ইচ্ছা থাকলে। তিনি নির্বাচনে যাওয়ার বদলে শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে অটল থাকলেন আপোসহীনভাবে। 
২০০৮ সালের নির্বাচন আইন ও সংবিধানসম্মত হয়েছে। পরাজয়ের ভয়ে যদি কেউ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় তাতে নির্বাচনের বৈধতায় এতটুকু কমতি থাকে না। এতদসত্ত্বেও আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে ড. কামাল হোসেন এবার কোর্টে গেছেন নির্বাচন অবৈধ ঘোষণার আবদার নিয়ে। ডুবন্ত বিএনপিকে বাঁচানোর জন্য তিনি এখন আদালতে গেছেন। হায়রে! বঙ্গবন্ধুর প্রিয় ড. কামাল হোসেন। এরা এখন ইতিহাসের করুণার পাত্র। 
উত্তরা, ঢাকা।

২১ আগস্টের হামলা: সত্য বেরিয়ে আসছে ‘আষাঢ়ে গল্পকারদের’ কী হবে? 
মতিউর রহমান,সম্পাদক, প্রথম আলো