Monday, December 31, 2018

লড়ে নেবে নারী তার অধিকার-সুমি খান

একদিন জেগে ওঠে
চির প্রবঞ্চিত নারী-
পক্ষ থেকে পক্ষান্তরে
হয়ে ওঠে ভয়ঙ্করী!

আজন্ম লালিত
পুরুষ শাসিত সমাজের আধিপত্য ভাঙ্গে
প্রবল বিদ্রোহে !

জেনে গেছে লড়ে নিতে
বাঁচবার অধিকার!

পয়লা জানুয়ারী, ২০১৯, সকাল ৯টা
বসুন্ধরা, ঢাকা।

ব্রাত্যজনের কাব্য- সুমি খান

ব্রাত্যজনের কাব্য-১

নামেই বিধাতা তুমি
 মানো না জন্মের অধিকার !
মানো না  মাতৃত্বের অধিকার !
মানো শুধু প্রবঞ্চকের
শঠতার জয়-
 তাই বুঝি কেড়ে নিতে হয় ?

নিষ্প্রাণ দেহের
নিঃশেষিত প্রাণবায়ু
ভেসে বেড়ায় অনন্ত আকাশে!
তার পূর্বকালেই
সব কেড়ে নিতে পারো-
নীরবে নিঃশেষে!

শঠতার হঠকারী
অথবা নীরবতার তীব্রতা
জানা নেই তোমার যেমন!
অনন্তলোকের প্রতীক্ষা কি
পলে পলে ফুরায় এমন!

নাড়িছেঁড়া ধন আর
মায়ের মমতা যতো
সবই তুমি কেড়ে নিতে পারো?
বলো নি তো দুঃস্বপ্নেও!

এতোটা ধৃষ্টতা যেন
তুমিই দেখাতে পারো-
জেনে রাখো তবু দিনশেষে
আমরা নারীরা লিখি
মায়েদের হাত দিয়ে
বোনেদের প্রাণ দিয়ে
 আমার ই গভীর দীর্ঘশ্বাস
ভাসে  তোমার বাতাসে!!

সত্য কঠিন মেনে-
কঠিনেরে ভালোবেসে-
অষ্টপ্রহর বেনোজলে ভেসেছি
নিজেকে  চিতায় পুড়েছি   !
চিতার ছাইভস্ম থেকে
ফিনিক্স পাখির মতো
জেগে উঠে
চিরউদ্বাস্তু সীতা !

ভালোবেসে দিনশেষে
যুগ থেকে যুগান্তর
স্তব্ধতা ভাঙ্গবার
স্পর্ধিত ভালোবাসা
 ব্রাত্যজনের প্রাণে
 স্পর্শে নিরন্তর!

 (২০১৮ ছেড়ে ২০১৯ এ পদার্পন -)
০১০১১৯ সকাল ৮.১৫


Saturday, December 29, 2018

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির জয় অর্জনের মাধ্যমে রচিত হোক নতুন ইতিহাস-সুমি খান


আজ ৩০ ডিসেম্বর, রোববার আমাদের সামনে  অসামান্য এক সকাল এসেছে- নাগরিক অধিকার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষ নির্ধারণ করবে কারা পরবর্তী বছরের জন্য দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসছে।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবমুখর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ‘সর্বাধিক সংখ্যক প্রার্থী এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। উৎসবমুখর ভোট হবে এটাই আশা।তিনি ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানান।
১০ কোটিরও বেশি ভোটারের হাতে আজ ক্ষমতা। আজ আমরাই বাংলাদেশ। আমরা ভোট দিয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য আমাদের নেতা নির্বাচন করব। দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ রোববার সকাল আটটায় শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এবারের ভোটে দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় গত নভেম্বর। এরপর একবার পুনঃ তফসিল করা হয়। এর ফলে ভোটের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়।
৩৯টি রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত আওয়ামী লীগ (নৌকা) বিএনপির (ধানের শীষ) মধ্যে। ভোটে আওয়ামী লীগ মহাজোট ১৪ দলীয় জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে।  বিএনপি ২০ দলের নেতৃত্বে . কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক  
এবারও কী বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জিতছে না কি, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি জিতবেএমন নানামুখী আলোচনার উত্তর পাওয়া যাবে আজই। বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণের পর শুরু হবে ভোট গণনা। এবারই প্রথমবারের মতো ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট হচ্ছে। ইভিএমে ভোট হবে ঢাকা-, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-, রংপুর-, খুলনা- সাতক্ষীরা- আসনে। এসব আসনে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। তবে ব্যালটে ভোট হওয়া আসনগুলোর ফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আশা করছেন, রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে পরবর্তী সরকার কারা গঠন করছে, সে সম্পর্কে জানতে পারবে সাধারণ মানুষ।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে একটি আসন (গাইবান্ধা-) ছাড়া বাকি ২৯৯টি আসনে আজ ভোট গ্রহণ হচ্ছে। গাইবান্ধা- (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জাতীয় পার্টির (জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান . টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী ২১ ডিসেম্বর ভোরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আইন অনুযায়ী প্রার্থীর মৃত্যুতে এই আসনের নির্বাচন বন্ধ রেখেছে নির্বাচন কমিশন।এই আসনে ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ আগামী ২৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মী সমর্থকদের শেষ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী নিজের ভোট দিয়ে বেরিয়ে বিজয়ের চিহ্ণ দেখিয়ে বলেছেন, নৌকাই বিজয়ী হবে। একই সাথে তিনি বলেছেন, জনগণের রায় তিনি মাথা পেতে নেবেন। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা . কামাল হোসেন বলেছেন, ভোটে কারচুপি না হলে তাঁরাই জিতবেন। তিনি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে লাখ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, ্যাব, আনসার, কোস্টগার্ড, বিজিবি সদস্যরা রয়েছেন। সারা দেশে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্র নিরাপদ রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন ভোটার এর মধ্যে পুরুষ ভোটার কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন ,মহিলা ভোটার কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন ।নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯টি ।মোট প্রার্থী হাজার ৮৬১ জন, রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হাজার ৭৩৩ জন ,স্বতন্ত্র প্রার্থী ১২৮ জন
এই বাস্তবতায় ভোটারদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে দেশের ভবিষ্যৎ কাদের নিয়ন্ত্রণে দেবেন তারা। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না , তিরিশ লাখ শহীদের আত্মদানে আমরা দেশ পেয়েছি। আমাদের মাতৃভাষা, আমাদের পতাকা, আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি সবকিছু অর্জন করতে হয়েছে লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে।ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলনে যারা আত্মদান করেছেন , তাঁদের রক্তের স্রোতধারায় স্বাধিকার আদায়ের জন্য  দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের রক্তাক্ত পটভূমি তৈরি করে দিয়েছেন তিরিশ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ বীরাঙ্গনা। তাঁদের মহান আত্মদান যেন আমরা ভুলে না যাই। একই সাথে এই মহান আত্মদান নিয়ে যারা বারবার প্রশ্র তুলেছে, তাদের চিনতে যেন আমরা ভুল না করি।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া একাত্তরে কী ভূমিকা পালন করেছেন, কম বেশী অনেকেই তা জানেন। কারণেই হয়তো তিনি এবং তার অনুসারীরা প্রশ্ন তুলেন তিরিশ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে। স্বাধীনতার ৪৫ বছরের মাথায় এসে ২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবি দিবসে ঢাকায় আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া একাত্তরের মহান শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত মানুষদের আনুষ্ঠানিক যে সংখ্যা সেটি নিয়ে বিতর্কের কথা তুলে তিনি বলেন, মক্তিযুদ্ধের সময় কতো মানুষ নিহত হয়েছিলো তা নিয়ে বিতর্ক আছে।সেই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজউদ্দীনআহমেদ। (বিবিসি,২১শে ডিসেম্বর,২০১৫)
(https://www.bbc.com/bengali/news/2015/12/151221_bangladesh_khaleda_zia_1971)

   খালেদা জিয়ানিজামী জোটের ২০০১-২০০৫ শাসনামল, ভয়াবহ সংখ্যালঘু নিধনের ধারাবাহিকতা, হাওয়া ভবনের পার্সেন্টেজ এবং গ্রেনেড হামলার বর্বোরোচিত কালো অধ্যায় গত ১০ বছরে অনেকে ভুলে গেলেও ইতিহাসের কাছে বারবার আমাদের ফিরে যেতে হবে। নাহয় সেই বর্বর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি কেউ রোধ করতে পারবে না।
প্রতিনিধিত্বমূলক শাসন ব্যবস্থাই আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি। আজ আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন বা ধারাবাহিকতা রক্ষার সবচেয়ে বড় উৎসব, নির্বাচনে অংশ নেব। আজ আমরা ভোট দিয়ে আমাদের অধিকার বুঝে নেব। আর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে- মুক্তিযুদ্ধের উদার গণতান্ত্রিক চেতনাকে আমরা সমুন্নত রাখবো। আমাদের হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আর অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ যেন কোন ভাবেই ভূলুন্ঠিত না হয়।
একটি উদার, মুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল রাষ্ট্রব্যবস্থাই আমাদের কাম্য।

স্মরণ করতে হবে ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত শাসন ব্যবস্থার কথা। ২০১৪ সালের জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নিয়মরক্ষার নির্বাচন আর সেই নির্বাচন প্রতিরোধের নামে আগুন-সন্ত্রাসের বিভীষিকা ভুলে গেলে  নিজেদের সাথে জাতির সাথে চরম হঠকারী হবে। আর সেই বাস্তবতায় এবারের নির্বাচনটি জাতির জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
 নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সবাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যাদের নিবন্ধন নেই, তারাও একাকার হয়ে গেছে বড় দুই জোটে। বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোও জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, জনসমর্থনে অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, অর্থ আর পেশিশক্তির বিরুদ্ধে শক্ত বক্তব্য উপস্থাপন করছে তারা। ধর্মীয় দলগুলোও যার যার মতো করে তাদের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।জামায়াতকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে নামার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। একাত্তরের চিহ্নিত স্বঘোষিত ঘাতকদের আবারো তিরিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত আমাদের পবিত্র জাতীয় পতাকা গাড়িতে উড়িয়ে জাতীয় সংসদে যাবার সুযোগ করে দিয়ে যেন ইতিহাস কলঙ্কিত হতে না দিই। 

বাংলাদেশের নির্বাচনে সহিংসতার ভয়াবহতায় বারবার আক্রান্ত হচ্ছে নিরীহ মানুষ। নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনের দিন নির্বাচনপরবর্তী- তিন ক্ষেত্রেই সহিংসতা ছড়ানো হয়। এসব সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন জাতিগত এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন নারীরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিশু কিশোরী প্রবীণ দেরও ধর্ষণ করা, জীবন্ত পুড়িয়ে মারার দৃষ্টান্ত চাক্ষুষ করেছি আমরা ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল অবধি।। সেই বর্বরতা আবার ফিরে আসুক নিশ্চয়ই কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ চান না। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ শনিবার বলেছেন, ’সারাদেশের সংখ্যালঘু এলাকাগুলোয় সেনাবাহিনী গিয়ে আশ্বস্ত করছে, ভোটাররা যেন নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে এবং যার যার ভোট প্রদান করতে পারে। এজন্য সেসব এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনী টহল আজকেও যাচ্ছে, নির্বাচনের পরেও যাবে।' তিনি বলেন, 'সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে আমরা দেখেছি, নির্বাচনের অত্যন্ত চমৎকার সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। সেনাপ্রধান হিসেবে বলছি, আমিও এই দেশের নাগরিক। গত এক সপ্তাহ সারাদেশ ঘুরে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, বিগত ৪৭ বছরে এরকম শান্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আমি দেখিনি।'
 এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বিগত ১০টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে কোনোটির চেয়ে সহিংসতার মাত্রা কম।আজ ভোটের দিন, যাতে একটিও সহিংসতা না ঘটে, এটাই সাধারণ দেশের মানুষ চায়।
যে দল নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবেন বিজিত দল তাদের মেনে নেবেন এই আশা করা হয়তো বেশি চাওয়া। তবু জনগণের কাছে সেটাই কাঙ্খিত। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় কার্যকর বিরোধী দল অপরিহার্য। যদিও আমরা গত ১০ বছরে সত্যিকার অর্থে কোন রাজনৈতিক দলকেই বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে দেখিনি। তবু প্রত্যাশা থাকে । সেই অনুযায়ী রাজনৈতিক দলের যারা এবার নিবন্ধিত হয়েছেন নির্বাচনের জন্যে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন, তাদের রাজনৈতিক নীতিনিষ্ঠতা থাকলে , তাঁরা নির্বাচনে বিজয়ী না হলেও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক হিসেবে দেশের এবং দশের কাজে নিজেদের উৎসর্গ করবেন, তা না হলে আগামীতে কখনো ভোটারদের কাছে নিজেদের প্রার্থীতা দাবি করার কোন যোগ্যতা তাঁরা রাখেন কিনা, সেটা প্রশ্নের দাবি রাখে।
এ কারণেই যারা বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করবেন, তারা কোন ধ্বংসাত্মক পথে না গিয়ে গঠনমূলক রাজনীতি করবেন। বিরোধী দলের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। যারা বিজয়ী হবেন, তারা সরকার গঠন করবেন, তাই বলে ধরাকে সরা জ্ঞান করে দেশের নিরীহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ভিটে মাটি দখল করার জন্যে তাদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, নির‌্যাতন, বা বিরোধী দলকে গ্রেনেড বিষ্ফোরণে নিশ্চিহ্ণ করা বা  প্রতিবেশী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে লালন করে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মতো ভয়ঙ্কর সর্বনাশা কান্ডের ধারাবাহিকতা জনগণ দেখতে চায় না।
 গত ১০ বছরে রাজনীতিতে ইতিবাচক, নেতিবাচক দু’ধরণের পরিবর্তন মানুষ দেখতে পেয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকার কারণে একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের মুখোমুখি করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়েছে।  বোমা হামলার ধারাবাহিকতা এবং আগুন সন্ত্রাসের ভয়াবহতা প্রায়  বন্ধ করা গেছে বলা যায়। তবে এর পাশাপাশি ভোটের রাজনীতির কাছে হার মেনে  আওয়ামী লীগ সরকারের অদূরদর্শী পদক্ষেপে সভ্যতার জন্যে চরম হুমকি জঙ্গী সংগঠন হেফাজতে ইসলামী এবং কওমী মাদ্রাসার ধারক বাহকদের ব্যাপক উথ্থান কাউকে গ্রাস করেছে, আবার কাউকে সন্ত্রস্ত, উদ্বিগ্ন এবং শঙ্কিত করেছে। বাঙ্গালীর হাজার বছরের সংস্কৃতি এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ রক্ষা করতে হলে এই নেতিবাচকতা কাটিয়ে উঠতেই হবে আওয়ামী লীগকে। সেটা দুরূহ হলেও একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষেই তা সম্ভব। এ কারণে সাধারণ মানুষের অনেক বেশি নির্ভরতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উপর। তারা রাজনীতিতে ইতিবাচক এবং গুণগত পরিবর্তন আশা করে। আর তার প্রমাণ দিতে হবে আজ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির প্রতীকে ভোট দানের মাধ্যমে ।

   পরিশেষে ,সার্বিক ভাবে জনগণের কাছে কাঙ্খিত গণতন্ত্র বজায় রাখতে হলে আবারো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে আজকের ভোটারদের।  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রগতিশীল শক্তিকে বিজয়ী করতে সম্মিলিতভাবে আমরা কাজ করে যাবো এই শপথে একাত্ম হতে হবে আমাদের। সকল উদ্বেগ-উৎকন্ঠা কাটিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির বিজয়ের মাধ্যমে আরেকটি নতুন ইতিহাস রচনা করুক আজকের এই দিন।
Sumikhan29bdj@gmail.com