Saturday, October 20, 2012

১২ শ’ কোটি ডলারের রেকর্ড রিজার্ভ


ঢাকা, অক্টোবর ১৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- প্রবাসী আয়ের ওপর ভর করে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১২ শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান এ তথ্য জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৪০ বছরের ইতিহাসে এটা রেকর্ড রিজার্ভ।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এই প্রথমবারের মতো এক হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।

এদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২০২ কোটি ৭৬ লাখ ডলার।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্মরতদের পাঠানো রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অন্যদিকে, ‘রবি’ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা প্রাপ্তি এবং আসন্ন ঈদ উপলক্ষে এক্সপোর্ট বিল দ্রুত সময়ে নিস্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়াতে খাদ্যদ্রব্য আমদানি কমার পাশাপাশি আমদানিযোগ্য পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কমে আসা এবং বিলাস দ্রব্যের আমদানি নিরূৎসাহিত হওয়ায় সার্বিক আমদানি ব্যয় কমেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়।

আর এই সব কারণে রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব। সন্তোষজনক রিজার্ভের পরিমাণ অভ্যন্তরীণ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে আশা প্রকাশ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ১২ দিনেই ৫৯৩ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ১২ দিনে এ পরিমাণ রেমিটেন্স এর আগে কখনো আসেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী সাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন।”

সাইদুর রহমান জানান, গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। যা ছিল অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সোমবার তা আরও বেড়ে ১১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। বৃহস্পতিবার তা ১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা আরো জানান, চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম পাঁচ দিনে (৫ অক্টোবর পর্যন্ত) ২০৩ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। আর ৬ থেকে ১২ অক্টোবর (৬ থেকে ১২ অক্টোবর) এই সাত দিনে এসেছে ৩৯০ মিলিয়ন ডলার।

একক মাস হিসেবে অক্টোবর মাসে রেমিটেন্সের পরিমাণ অতীতের যে কোনো মাসকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন সাইদুর রহমান।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের আগে রিজার্ভ ১১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। আকুর ৭০০ মিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধের পর রিজার্ভ ১১ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে আসে।

এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই রিজার্ভ বেড়ে ১২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) ইসিএফ (বর্ধিত ঋণ সুবিধা) তহবিলের দ্বিতীয় কিস্তির ১৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড় করতে পারে। তখন রিজার্ভ আরো বাড়বে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেমিটেন্স সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রবাসীরা তিন দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।

চলতি অক্টোবর মাসের পাঁচ দিনেই (৫ অক্টোবর পর্যন্ত হিসাব পাওয়া গেছে) ২১০ ডলার রেমিটেন্স এসেছে।

গত ২০১১-১২ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে মোট ২ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার পঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

এর মধ্যে গত বছরের জুলাই মাসে এসেছিল ১ দশমিক ০১৫ লাখ ডলার। এছাড়া অগাস্টে ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স আসে।

চলতি বছর জানুয়ারিতে ১ দশমিক ২২ বিলিয়ন লাখ ডলার রেমিটেন্স দেশে আসে, যা একক মাস হিসাবে রেমিটেন্স আসার ক্ষেত্রে রেকর্ড।

Thursday, October 18, 2012

উত্তমের মা-মাসীকে নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ :খাদ্য ও নিরাপত্তা দেবে রাষ্ট্র


Thu, Oct 18th, 2012 7:09 pm BdST

ঢাকা, অক্টোবর ১৮ - কক্সবাজারের রামুর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনায় আলোচিত উত্তম বড়–য়ার মা ও মাসীকে আটক রাখা অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণার পাশাপাশি তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী বসবাসে নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ফরিদ আহমদের বেঞ্চ আদেশে বলেছে, ওই দুই নারী যে কোনো স্থানে বসবাস করতে করতে পারবে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উত্তমের ফেইসবুক পাতায় একটি অবমাননাকর ছবি দেখে রামুতে মিছিল বের হয়। পরে উগ্রপন্থিরা বৌদ্ধ মন্দির ও বসতিতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট চালায়। আগুনও দেয়া হয় বিভিন্ন স্থানে।ঘটনার পর থেকে উত্তমের কোনো সন্ধান পাওয়া না গেলে তার মা মাধু বড়ুয়া (৪১) এবং খালা আদি বড়ুয়াকে (২৬) ঘটনার পরদিনই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের রিমান্ডেও নেয়া হয়। কোনো অভিযোগ না থাকার পরও গ্রেপ্তারের এই খবর সংবাদপত্রে দেখে হাই কোর্টের ওই বেঞ্চ বুধবার মাধু ও আদিকে মুক্তি দেয়ার মৌখিক নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি ওই আদেশের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে জানাতে বলা হয় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদারকে। বৃহস্পতিবার অমিত তালুকদার জানান, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণেই তাদের দুজনকে আটক করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলে, নিরাপত্তার বিষয়টিকে আমরা হালকভাবে নিতে পারি না। ঝুঁকিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের (মাধু ও আদি) সম্মতি সাপেক্ষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাইজে অথবা মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিস কেন্দ্রের সেফ হাউজে তাদের রাখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে খাদ্য ও নিরাপত্তা দেবে রাষ্ট্র। সেখানেও থাকতে তারা রাজি না হলে অন্য যে কোনো স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে তাদের রাখতে সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত।

আদালত আদেশে আরো বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাদের আটক রাখা ও রিমান্ডে নেয়া অবৈধ ও অসাংবিধানিক। যতদ্রুত সম্ভব তাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। যে কোন মূল্যে তাদের জীবনের সুরক্ষা দিতে হবে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, মেরে ফেললেও তারা নিজেদের বাড়িতেই থাকতে চান।” তখন আদালত বলে, পরিস্থিতি খুবই নাজুক। তাদের স্বাধীনতা রয়েছে, কোথায় তারা বসবাস করবেন। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তার বিষযটিও ভাবতে হচ্ছে। তাদের স্বাধীনতা আমরাও খর্ব করতে পারি না।

এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৪ নভেম্বর পরবর্তী দিন ঠিক হয়েছে।

নাফিজের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ | বাংলাদেশ | bdnews24.com

নাফিজের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ | বাংলাদেশ | bdnews24.com