Monday, September 14, 2015

আইএস-এর টার্গেটে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ?-সুমি খান

বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-এর (আইএস বা আইসিস) সঙ্গে সরাসরি জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিক ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক আইএস-এর সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পুলিশের৷ সামিউন ওরফে ইবনে হামদান নামের এই তরুণকে গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন রবিবার রাতে৷ তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন এবং জঙ্গি তত্‍পরতায় জড়িত থাকার প্রমাণ সম্বলিত কিছু কাগজ-পত্রও উদ্ধার করা হয়েছে৷ জানা গেছে, সামিউনকে গ্রেপ্তার করা হয় এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া হাফিজুর রহমান নামে আরেকজনের তথ্যের ভিত্তিতে৷ তার তথ্যমতে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সামিউন বাংলাদেশে আইএস-এর তত্‍পরতা জোরদার করার কাজ করছিল৷

গত কয়েক সপ্তাহে আইএস-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরো কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ৷ গত বুধবার ঢাকা থেকে জঙ্গি তত্‍পরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. আসিফ আদনান ও মো. ফজলে এলাহী তানজিল নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এদের মধ্যে আদনান সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এক বিচারপতির ছেলে এবং তানজিলের মা যুগ্ম সচিব৷ তারা নাকি ‘জিহাদে' অংশ নিতে তুরস্ক ও সিরিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল৷


 গত কয়েক সপ্তাহে আইএস-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরো কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ
গোয়েন্দারা গত ১৯শে সেপ্টেম্বর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুল্লাহ আল তাসনিম ওরফে নাহিদসহ সাতজনকে আটক করেন৷ তারাও আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল বলে গ্রেপ্তারের পর সংবাদমাধ্যমকে জানান গোয়েন্দারা৷

মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বাংলাদেশে আইএস-এর অনুসারীদের তত্‍পরতা তাদের নজরে আসছে৷ কোণঠাসা হয়ে যাওয়া জঙ্গি সংগঠনগুলোর সদস্যরা ইরাক এবং সিরিয়ার ঘটনায় এখন নতুন করে আইএস-এর দিকে ঝুকছে৷ তারা উদ্বুদ্ধ হচ্ছে৷''
তিনি জানান, ‘‘এর আগে আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ আছে বা যোগাযোগের চেষ্টা করছেন এমন কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে৷ আর রবিবার আইএস-এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত একজনকে আটক করা হলো৷''

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, ‘‘আটক সামিউনের কাছ থেকে তার ব্রিটিশ পাসপোর্ট, এটিএম কার্ড এবং ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে যে, সে সিরিয়ায় আইএস-এর সদস্য হিসেবে যুদ্ধ করেছে৷ তার মোবাইল ফোনের এসএমএস থেকেও এর প্রমাণ পাওয়া গেছে৷''
মাসুদুর রহমান জানান, ‘‘এর আগে আটক হওয়া দু'জন জঙ্গি তাদের জানিয়েছেন সামিউন বাংলাদেশে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে আসে৷ আইএস-এর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্যই সে বাংলাদেশে এসে কাজ শুরু করে৷ শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে আসার আগে থেকেই সে এখানকার জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলে৷''

তিনি জানান, ‘‘সামিউনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসবাদ করা হবে৷ আর তখনই জানা যাবে আইএস বাংলাদেশে আদৌ কোনো শক্ত নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পেরেছে কিনা৷''