Friday, July 25, 2014

‘সাদাসিধে জীবনে কর্মের দ্যুতি’ -এ এন মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদ

"আমি প্রিয় বন্ধুকে হারিয়েছি”- শোকবিহ্বল প্রধানমন্ত্রী

“তার মৃত্যুতে আমি আমার দীর্ঘদিনের একজন প্রিয় বন্ধুকে হারিয়েছি”।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বান্ধবী, সাংবাদিক ও সাবেক সংসদ সদস্য এ এন মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদকে শেষবারের মতো দেখতে হাসপাতালে গিয়ে শোকবিহ্বল হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বিকালে বেবী মওদুদের মৃত্যুর খবর পেয়েই প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে বন্ধুর মরদেহের পাশে তিনি কিছুক্ষণ সময় কাটান এবং শোকস্তব্ধ পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।

 শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেবী মওদুদের মৃত্যুতে জাতি এক নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক ও লেখককে হারালো।

 

বঙ্গবন্ধু ছিলেন আমার রাজনৈতিক গুরু: জিল্লুর রহমান

আমার বন্ধু বেবী মওদুদ - নির্মলেন্দু গুণ

দ্বিতীয়বারের মতো বিএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পর ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে ১৯৬৭ সালে আমি বাংলায় অনার্স নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। বাংলা বিভাগে পড়ার সুবাদে আমার বেশ ক’জন নতুন বন্ধু-বান্ধবী জোটে। আমার সহপাঠী ও সহপাঠিনীদের মধ্যে যাদের সঙ্গে আমার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন তৎকালীন মস্কোপন্থী ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী বেবী মওদুদ।
১৯৬৮ সালের ২৯ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং জেল-পলাতক খুনী জেমস আর্ল রে-র হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মেম্ফিসে নিহত হলে বিশ্বজুড়ে একটা তীব্র মার্কিন-বিরোধী জনরোষ তৈরি হয়। আমরা ক’জন সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী তরুণ কবি তখন মার্টিন লুথার কিংকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘শ্বেতাঙ্গের শরে বিদ্ধ’ ( আমার লেখা কবিতাটির নাম অনুসারে) নামে একটি মার্কিন-বিরোধী কবিতাপত্র প্রকাশ করি। ঐ কবিতা সংকলনটির সম্পাদক ছিলেন আতিকুল ইসলাম খোকন আর বেবী মওদুদ ছিলেন প্রকাশক। ঐ চটি সংকলনটিতে আমার, আবুল হাসান, হুমায়ুন কবির, সেলিম সারওয়ার ও সেলিম আল দীনের কবিতা ছাপা হয়েছিলো। ড. আনিসুজ্জামান তখন দৈনিক পাকিস্তানের সাহিত্য পাতায় ঐ সংকলনটির আলোচনা করেছিলেন। আমার আত্মজীবনীর দ্বিতীয় খণ্ড আমার কণ্ঠস্বর গ্রন্থে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের সেই বন্ধুত্ব অটুট ছিলো।
আমি শান্তিনিকেতনের আদলে আমার গ্রামে কাশবন বিদ্যানিকেতন গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি জেনে, এমপি থাকাকালে কাশবন বিদ্যানিকেতনের সাহায্যার্থে তিনি চার টন চাল ও নগদ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। দুঃসময়ে সেটা আমাদের খুব কাজে লেগেছিলো। সময় করে আমার স্বপ্নের কাশবন পরিদর্শনের আশাও তিনি ব্যক্ত করেছিলেন।

কিন্তু তা আর সম্ভব হলো না। আজ তাঁর মৃত্যুর ভিতর দিয়ে আমাদের ৪৭ বছরের বন্ধুত্বের চির অবসান ঘটলো।
২৬ জুলাই ২০১৪ ২:০৭ পূর্বাহ্ন