Wednesday, October 1, 2014

জামায়াতের কাছে সারদা গ্রুপের অর্থের চালান তদন্তে এনএসআই তদন্ত দল কোলকাতায়-সুমি খান

বাংলাদেশে জামায়াতের কাছে সারদা গ্রুপের অর্থের চালান তদন্তে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনএসআই এর তিন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত দল কোলকাতায় কাজ শুরু করেছে।এদিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে জামায়াত এবং জঙ্গীবাদের অর্থায়নে নজরদারীর জন্যে এখনো সরকারের উচ্চপর্যায়ে কোন উদ্যোগ নেই।  কাউন্টার টেররিজম নিয়ে এখনো সরকারের উচ্চপর্যায়ে কোন টীম গঠিত হয়নি বলে জনকন্ঠকে জানালেন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল।
পশ্চিমবঙ্গ আমাদের প্রতিবেশী । মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত  উগ্র সাম্প্রদায়িক দল জামায়াতের সাথে পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আর্থিক লেনদেন বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্যে উদ্বেগজনক -বললেন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল । তিনি বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রশ্নে বিষয়টি উদ্বেগ জনক । তবে  এ বিষয়গুলো তদন্তে উচ্চপর্যায়ে টীম গঠন করা সম্ভব হয়নি। তার  দাবি, সরকারী কাজ;  ইচ্ছে করলেও জরুরীভাবে করা সম্ভব হয়না। তাই বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বললেন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী।

 সাম্প্রতিক সময়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আইএস এবং নুসরা সংগঠক গ্রেফতারের পর সরকার এ  নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং  রাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রশ্নে  জরুরী ভাবে কাউন্টার টেররিজম টীম গঠনে তৎপর বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জনকন্ঠকে বলেন,  মহানগর গোয়েন্দা দলের নিজস্ব কাউন্টার টেররিজম টীম গঠন করে দেশে  আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল-কায়দার অনুসারীদের  জঙ্গী তৎপরতার তথ্যপ্রমাণ অনুসন্ধান করছি আমরা। তবে এই জঙ্গীদের অর্থের উৎস অনুসন্ধান এবং এই উগ্রবাদী জঙ্গীদের শেকড়ের সন্ধানে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কোন সুষ্পষ্ট নির্দেশনা আমরা এখনো  পাইনি। এ কারণে আমাদের তেমন কিছু করার নেই ।
সম্প্রতি  গ্রেফতারকৃত আল-কায়দা, আইএস এবং সিরিয়ার  আত্মঘাতী জঙ্গী সংগঠন জাভাত -আল-নুসরা ফ্রন্টের সক্রিয় জঙ্গী সদস্য সামিয়ুন রহমানের ব্যাপারে সিরিয়া পুলিশ এবং ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম  জনকন্ঠকে বলেন, এই জঙ্গীকে রিমান্ডে আনা হয়েছে। তার ব্যাপারে নিঃসন্দেহে গভীর অনুসন্ধান প্রয়োজন। তবে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা না পেলে , আমরা এ ব্যাপারে এগুতে পারি না। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় নেই।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী তার সাম্প্রতিক নয়াদিল্লী সফরে জামায়াতকে সারদা গ্রুপের অর্থ দেবার অভিযোগ তদন্তের দাবি তোলেন ভারত সরকারের  কাছে । এ এইচ মাহমুদ আলী ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোতালকে বলেন, “বংলাদেশের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন বানচালে বড়ো ধরণের নৈরাজ্য ঘটাতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক আহমেদ হাসান ইমরানের মাধ্যমে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর কাছে সারদা গ্রুপের  বড়ো অংকের অর্থ গেছে।” ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের এক কর্মকর্তা  নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেছেন , আমাদের নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিয়ে বাংলাদেশের হাসিনা সরকার খুব সচেতন। তাদেও বিষয়ে আমরা অমনোযোগী হতে পারি না। ”
ভারতের আলোচিত সারদা গ্রুপের অর্থ কেলেংকারী তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশান (সিবিআই) ও এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি) কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এনআইএ’র তিন কর্মকর্তা। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সূত্রে প্রকাশ, সারদার অর্থ কার হাত থেকে কোথায় গেছে এবং এই অর্থ লেনদেনে সম্পৃক্ত রাজনীতিকদের ভ’মিকা কী ছিল-তা এনআইএ তদন্ত দল খতিয়ে দেখছে।
জানা যায়, তৃণমূল নেতা আহমেদ হাসান ইমরানের আদি বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটে। ইমরানের বাবা  জামায়াতে ইসলামীর সংগঠক হিসেবে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে এলাকার রাজাকার বাহিনীর নেতৃত্ব দেন বলে  সূত্রে প্রকাশ।  
স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ভারত সফরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমুল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানের মাধ্যমে অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান সারদার কেলেঙ্কারির টাকা বাংলাদেশে জামায়াতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে উচ্চ পর্যায়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। ইমরানের আদি বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটে, তার বাবা একাত্তরে রাজাকার ছিল, সবই সত্য। তবে এ ব্যাপারে গভীর অনুসন্ধান এবং তদন্ত করার ব্যাপারে কোন কাজ হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই। শীগগীর এ ব্যাপারে আমরা কাজ শুরু করবো।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এবং ভারতের সীমান্তে গরু চোরাচালান ও মাদক ব্যবসায় সারদা কেলেঙ্কারির টাকার একটি বিরাট অংশ বিনিয়োগ হয়েছে। বিনিয়োগের লভ্যাংশ দেশের ভেতর অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ব্যয় হচ্ছে বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা। এই বিপুল বিনিয়োগের একটিই উদ্দেশ্য,  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করে  একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী অপশক্তি  জামায়াত নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রবর্তন।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, বাংলাদেশের মৌলবাদী গোষ্ঠী জামায়াতকে দেশের ভেতর অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল এমপি আহমেদ হাসান ইমরানের মাধ্যমে  অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান সারদার কেলেঙ্কারির টাকা বাংলাদেশে জামায়াতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, বাংলাদেশের মৌলবাদী গোষ্ঠী জামায়াতকে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল এমপি আহমেদ হাসান ইমরানের মাধ্যমে  অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান সারদার কেলেঙ্কারির টাকা বাংলাদেশে জামায়াতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয়  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সারদা গ্রুপের জামায়াত সম্পৃক্ততা এবং বিনিয়োগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রে প্রকাশ। বিষয়টি বন্ধু-রাষ্ট্র ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও খুব সংবেদনশীল বলে উল্লেখ করেছেন রাজনাথ সিংহ । আহমেদ হাসান ইমরান ২০০১ সালে ভারতে নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ (সিমি)-র পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি ছিলেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন  জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ভারতের  নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ইসলামিক ষ্টুডেন্টস মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (সিমি)  বহুগুণে শক্তিশালী হয়ে ভারত-বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত।  তিনি এ ও বলেছেন , সিমির প্রাক্তন অনেক নেতা এখন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতিতে যুক্ত।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিজস্ব গোয়েন্দা বিভাগও ইমরানের বিরুদ্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একই ধরনের রিপোর্ট করেছিল। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে  পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নলিয়াখালিতে জঙ্গি-গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় ইমরানের সক্রিয় সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তৃণমূলের আরেক সংসদ সদস্য বিখ্যাত অভিনেত্রী মুনমুন সেন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র এবং   পাকিস্তানের তেহরিক-ই ইনসাফ নেতা ইমরান খানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন বলে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার সংস্থা দাবি করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দারা বলছেন, মুনমুন, ইমরান খান এবং আইএসআই এর  ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে।

ধর্মীয় উগ্রবাদী-অধ্যুষিত প্রদেশ খাইবার পাখতুনখাওয়াতে ইমরানের তেহরিক-ই ইনসাফের ক্ষমতায় শরিক পাকিস্তানী জামায়াত। প্রদেশটি উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠীর স্বর্গরাজ্যে  পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি নেওয়াজ শরীফ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আইএসআই’র প্রেসক্রিপশনে আজাদি মার্চ করে ইমরানের পিটিআই। ইমরানের উদ্যোগে অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত তেহরিক-ই ইনসাফের চেয়ারম্যান জাভেদ হাশ্মির গণমাধ্যমকে বলেছেন আন্দোলনটি আইএসআইয়ের নির্দেশনায় হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের উগ্র- সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর মধ্যকার নিবিড় যোগাযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতার মাধ্যমেই হয়েছে মনে করছেন গোয়েন্দারা।  সারদার মাধ্যমে জামায়াতের কাছ থেকে টাকা নেওয়া দেওয়া ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি বিশ্বাসযোগ্য ঘটনা তাই প্রমাণ করে।
পাকি¯তানি হাইকমিশনারের কলকাতা সফর ও মমতার সাথে সাক্ষাতের পেছনে মুনমুন সেন ও ইমরান খানের  আগ্রহ এবং ঘনিষ্ঠতা ক্যাটালিস্ট হিসাবে কাজ করেছে। চির বৈরি পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের সাথে একজন মুখ্যমন্ত্রীর দেখা হতেই পারে। কিন্তু সেই সাক্ষাৎটি যখন আইএসআইপন্থি পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুর আগ্রহে অনুষ্ঠিত হয়, তখন এর পেছনের উদ্দেশ্য বেশ পরিষ্কার হয়ে যায়।সাক্ষাতের পরপরই কলকাতার একটি সাংবাদিক দলকে পাকিস্তান সফরের ব্যবস্থা করা হয়। কলকাতায় পাকিস্তান ডেপুটি হাইকমিশনারের কাছে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের পাকিস্তান যাওয়ার ভিসা পদ্ধতি  সহজ করার অনুরোধের অভিযোগও রয়েছে মমতার বিরুদ্ধে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও মুসলিম বাস করেন। সেই প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীদেও কেউ পাকিস্তানী ভিসা সহজ করার অনুরোধ করেন নি। মমতা যদি সারা ভারতের মুসলিমদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করার কথা বলতেন, কারো তেমন কিছু বলার থাকত না।  সাম্প্রতিক ভারত সফরে গিয়ে তারা দেখতে পেয়েছেন এসব নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উত্তপ্ত -বললেন  স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল ।
বিধানসভা এবং লোকসভার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় বাংলাদেশের জামায়াতের নেতা-কর্মীরা তৃণমূল পক্ষে কাজ করেছিল। বিশেষ করে মালদা, দক্ষিণ ও উত্তর দিনাজপুর (৬০-৮০%), মুর্শিদাবাদ জেলাতে (৯০%)সহ বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকায় জামায়াতের কর্মীরা তৃনমূলের পক্ষে গণসংযোগ করেন।ভারতের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে  সারদা ১৩০ কোটি টাকা তৃণমূলের নির্বাচনে অর্থায়ন করেছিল, যার একটি বড় অংশ বাংলাদেশের জামায়াতকে  দিয়েছিল। তিস্তা পানি চুক্তিতে আপত্তির পেছনেও অন্যতম কারণ মমতা তিস্তা তীরে বসবাসকারী ৮০ শতাংশ  ভারতীয় মুসলমানকে রাজলনৈতিক খোলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।
ভারতের গোয়েন্দা তথ্যে আরও প্রকাশ, তৃণমূল কংগ্রেসও নির্বাচনে জামায়াতের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছিল। গোয়েন্দারা এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে। সারদা কেলেঙ্কারির অন্যতম মূল অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ অর্থের আদান প্রদান বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণ কমিশনের সাথে কথা বলার অনুরোধ জানালেও মমতার সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসার আশঙ্কায়  মমতা সরকারের নির্দেশে গঠিত কল্যাণ কমিশন কুনালকে এড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন এবার এনআইএ’র তদন্তে বেরিয়ে আসবে  জামায়াতে সারদা গ্রুপের আর্থিক বিকিয়োগ এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্যে বড়ো ধরণের হুমকি জঙ্গীবাদে ভারতের তৃণমূল নেত্রী মমতা সহ অন্যান্য রাজনীতিকদের সম্পৃক্ততা। 

সারদা কেলেঙ্কারিতে তার তৃণমূল সংসদের জঙ্গি-বান্ধব রাজনীতিবিদ ইমরান থেকে শুরু করে মুনমুন সেনের মত অনেক সেলিব্রেটি জড়িত। যদি ইমরানের মাধ্যমে বাংলাদেশের জামায়াত টাকা নিয়ে ২০১১ সালের বিধান সভা ও ২০১৪ সালে লোকসভার নির্বাচন করেছে এমন প্রশ্ন উঠেছে।
সিরিয়া ফ্রন্টে আল-কায়দা, আইএস এবং সিরিয়ার সশস্ত্র সন্ত্রাসী জিহাদে মুজাহিদ সংগ্রহের জন্যে বাংলাদেশে আসে আইএস এবং জাভাত -আল-নুসরা জঙ্গী ব্রিটিশ নাগরিক  সামিয়ুন রহমান ওরফে ইবনে হামদান।  চরম উগ্রবাদী এই জঙ্গীরা যাদের কে ‘ইনফিদেল’  বা ইসলামের শত্রু মনে করে , তাদের হত্যাা এবং নাশকতার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামিয়ুন রহমান এবং তার সহযোগীরা। আল-কায়দা, আইএস এবং সিরিয়ার  আত্মঘাতী জঙ্গী সংগঠন জাভাত -আল-নুসরা ফ্রন্টের সক্রিয় জঙ্গী সদস্য সামিয়ুন রহমানের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করে আল কায়দা নেতা আইমান আল জাওয়াহিরির ঘোষিত ‘একিআইএস’ বা আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট এর জন্য বাংলাদেশ ও মায়ানমারে জঙ্গি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম  একথা জানিয়ে জনকন্ঠকে বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ আদালতে উপস্থাপিত করা হবে ।
২৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোয়েন্দা পুলিশের জঙ্গিবিরোধী এক অভিযানে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে ‘আইএস বাংলাদেশ’ প্রধান হিসেবে দাবিদার হিফজুর রহমানকে আটক করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান , বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে আইএস দক্ষিণ এশিয়া শাখা সংগঠিত করছিলো হিফজুর ।সিলেটের সরকারি তিব্বিয়া কলেজের ছাত্র জেএমবি সদস্য হিফজুর রহমান ইন্টারনেট বিষয়ে পারদর্শী। ‘আইএস বাংলাদেশ’ নামে ফেসবুক ফ্যান পেজ খুলে আইএস বাংলাদেশ প্রধান বলে নিজেকে দাবি করে। সেই পেজের মাধ্যমে সিরিয়া ও ইরাকে জিহাদ করতে যাওয়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ কওে তরুণদের। দেশে ও প্রবাসে থাকা জঙ্গিবাদে উদ্ধুদ্ধ এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে জঙ্গীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করে। এর  আগে বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা ও রমনা এলাকা থেকে মো. আসিফ আদনান (২৬) ও মো. ফজলে এলাহী তানজিল (২৪) নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যারা ইসলামিক স্টেটে যোগ দেয়ার পরিকল্পনা করছিল বলে  তথ্য নিশ্চিত হয়েছে গোয়েন্দা রা।আদনান ও তানজিল উগ্রপন্থী সংগঠন ‘আনসারউল্লাহ বাংলাটিম’ এর সদস্য। এদের মধ্যে আদনান সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতির ছেলে এবং তানজিলের মা একজন যুগ্ম সচিব (ওএসডি ) বলে গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা  জনকন্ঠকে জানিয়েছেন। ২০ সেপ্টেম্বর নিষিদ্ধ সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদিনের (জেএমবি) একাংশের ভারপ্রাপ্ত আমির তাসনিমসহ সাত জঙ্গিকে গ্রেফতার কওে মহানগর গোয়েন্দা দল। তাসনিম সহ এই সাত জঙ্গী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশে তাদের জন্য কাজ করার পরিকল্পনা করেছিল।
 জঙ্গীবাদ বিষয়ে অনুসন্ধানী কাজে অভিজ্ঞ গোয়েন্দা কর্মকর্তা  মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জনকন্ঠকে বলেন, কিছুদিন থেকে চরম উগ্রবাদী জঙ্গীরা দেশে বেশ তৎপর। এরা আল-কায়দার অনুসারী বলেও নিশ্চিত হয়েছে গোয়েন্দারা। এদের সাথে জামায়াতের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা। তবে জঙ্গীদের অর্থের উৎস সম্পর্কে গভীর অনুসন্ধানের এখতিয়ার তাদের নেই বলে জানান মনিরুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী জনকন্ঠকে বলেন.সম্প্রতি আমি সৌদী আরব সফরে গিয়ে দেখেছি জামায়াত- শিবির সৌদী আরবের প্রবাসী বাংলাদেশীদের থেকে বড়ো অংকের ফান্ড পায়। ভারতের সারদা গ্রুপের ফান্ড পেয়েছে জামায়াত, এটাও আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তবে এ ব্যাপারে আরো গভীর তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এ ব্যাপারে এ পর্যন্ত কথা বলা হয়নি, আমি আইজির সাথে কথা বলবো । যতো দ্রুত সম্ভব এদের বিরুদ্ধে জোর তদন্তে নামতে হবে আমাদের গোয়েন্দা দলের।” আন্তর্জাতিক জঙ্গী তৎপরতার হুমকি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে জঙ্গী দলগুলোর অর্থের উৎস সনাক্ত করা এবং আল-কায়দা দলের অনুসারীদের দমনে কাউন্টার টেররিজম টীম গঠন জরুরী হলেও সমন্য়হীনতার কারণে এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে বলে স্বীকার করেন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী ।    ### ০১.১০.২০১৪