Saturday, March 2, 2013

১৯ পুলিশকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা:চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় জামায়াতের বর্বরতা


গুলি ছুড়তে ছুড়তে উদ্ধারকারী পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে না গেলে ১৯ পুলিশ সদস্য পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আমিরাবাদে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে এই দলেরই এক কনস্টেবলকে কুপিয়ে হত্যা করে জামায়াত-শিবির। হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে লোহাগাড়ার আমিরাবাদের তিনতলা ভবনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশের বাকি ১৯ জন আশ্রয় নেন। কমিউনিটি সেন্টারের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয় জামায়াত-শিবির। ভবনে অবরুদ্ধ ১৯ পুলিশ সদস্যকে পুড়িয়ে মারতে এই আগুন দেওয়া হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরই স্থানীয় জামায়াত-শিবির বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ওই দিন বেলা তিনটা থেকে শত শত নেতা-কর্মী লোহাগাড়া সদরে জড়ো হয়ে রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জামায়াত-শিবিরের একটি জঙ্গি মিছিল লোহাগাড়া সদরের আমিরাবাদের ‘জমির কমপ্লেক্স’ নামের তিনতলার একটি কমিউনিটি সেন্টার অতিক্রম করছিল। এ সময় চারজন পুলিশের উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ২০ পুলিশ সদস্য জমির কমপ্লেক্সের দিকে ঢুকে যান। বিক্ষোভকারীরা কমিউনিটি সেন্টারের লোহার কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। এর আগ মুহূর্তে টানাহেঁচড়া করে তারেকুল ইসলাম নামের এক কনস্টেবলকে নিয়ে যায় বিক্ষোভকারীরা। বাকি ১৯ পুলিশ সদস্য দ্বিতীয় তলায় অবস্থান নেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) মো. ইলতুৎ মিশ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা বিকেল পাঁচটার দিকে জমির কমপ্লেক্সের ফটকে তালা ঝুলিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়লে অবরুদ্ধ ১৯ পুলিশ সদস্য বেতার বার্তার মাধ্যমে আমাদের সাহায্য চান। আমি আরও ১৮ পুলিশ নিয়ে চায়নিজ রাইফেলের গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘটনাস্থলে যাই। বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে অবরুদ্ধ ১৯ পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।’
ইলতুৎ মিশ আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা জমির কমপ্লেক্স থেকে আমাদের কনস্টেবল তারেকুল ইসলামকে ধরে নিয়ে কোপাতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর মাথায় লোহার খন্তা ঢুকিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।’
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. হাফিজ আক্তার বলেন, ‘হামলাকারীরা আমাদের ১৯ পুলিশ সদস্যকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। পুলিশের আরেকটি দল গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে না গেলে তাদের বাঁচানো সম্ভব ছিল না। এই দলের আমাদের আরেক কনস্টেবলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মী, যাঁদের অনেককে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি।’
- See more at: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-02/news/333291#sthash.a3YDQ6ZG.dpuf

Friday, March 1, 2013

রাজীব হত্যার মূল পরিকল্পনায় শিবিরের ‘বড় ভাই’: 'রাজীব হত্যা ঈমানের অঙ্গ'


ঢাকা: ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা‍কাণ্ডের মূল পরিকল্পনা করেন ছাত্র শিবিরের এক বড় ভাই।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচ ছাত্র জানান, তারা রাজীবকে ফেসবুকের মাধ্যমে চিহ্নিত করেন। পরে তারা শাহবাগে তাকে খুঁজে বের করে এবং হরতালের মধ্যে রাজীবের বাড়িতে গিয়ে ক্রিকেট খেলার সময় দেখে আসেন।

অনিক, ফয়সাল বিন নাঈম ধারালো ছুরি দিয়ে রাজীবকে কুপিয়ে হত্যা করে। বাকিরা এলাকাটি চারদিক দিয়ে ঘেরাও করে রাখে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিবি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে জয়েন্ট কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। গত শুক্রবার রাতে রাজীব হত্যাকাণ্ডে জড়িত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচ ছাত্রকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন ফয়সাল বিন নাইম (২২), মাকসুদুল হাসান অনিক (২৬), এহসানুর রেজা রোমান (২৩), নাঈম সিকদার (১৯) ও নাফিস ইমতিয়াজ (২২)।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সবাই রাজীব হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, “আটক ছাত্ররা জানিয়েছেন রাজীবকে হত্যা করা তাদের ইমানের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।”

মূল পরিকল্পনাকারী শিবিরের সেই বড় ভাইকে গ্রেফতার করা হয়নি জানিয়ে মনিরুল ইসলাম জানান, তাকে গ্রেফতারে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনিও নর্থ সাউথের ছাত্র।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গোয়েন্দা পুলিশের ‍উপকমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম (পশ্চিম), ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান, এডিসি মশিউর রহমান, অতিরিক্ত উপকমিশনার মানস কুমার পোদ্দার, সিনিয়র সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম।

বিএনপির হরতাল অনাকাঙ্খিত ও অপ্রত্যাশিত: গণজাগরণ মঞ্চ



গণজাগরণ চত্বর থেকে: জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর সহিংসতায় বিএনপির ডাকা হরতালের তীব্র হতাশা প্রকাশ করে একে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রত্যাশিত বলে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে জানানো হয়েছে।শুক্রবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে গণজাগরণ চত্বরের সমাবেশে এক বিশেষ বিবৃতিতে এ হতাশা প্রকাশ করা হয়।

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বিবৃতিতে বলেন, “আমরা জানি বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। তার দল বিএনপি দাবি করে তাদের দলে সর্বোচ্চ সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। তাই বিএনপির প্রতি আমাদের আহ্বান, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্র শিবিরকে বর্জন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সহযোগিতামূলক ভূমিকা রাখবেন।”

ডা. ইমরান আরও বলেন, “সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধীদলীয় প্রধান হচ্ছেন জাতির অন্যতম আশ্রয়ের জায়গা। জাতি প্রত্যাশা করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করার মধ্য দিয়ে প্রিয় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় অগ্রসর হবে। বিরোধী দলীয় নেত্রীর সক্রিয় ইতিবাচক ভূমিকার মাধ্যমে এ অগ্রযাত্রা আরও গতিশীল হবে বলে মনে করে গণজাগরণ মঞ্চ।”

একাত্তরে মানবতাবোরোধী অপরাধে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়ার পর থেকে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের উদ্যোগে শাহবাগে আন্দোলন শুরু হয়।

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনের ২৫তম দিন বিকেলে এক সমাবেশে ছাত্রনেতারা তাদের বক্তব্যে জামায়াত ও বিএনপির হরতাল প্রতিহতের আহ্বান জানান।

এর আগে সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে, যাতে রাষ্ট্রপক্ষের আপলি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। আন্দোলন ২৪তম দিনে জামায়াতের আরেক নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সাঈদীর রায়ের দিন জামায়াতের হরতালে দেশব্যাপী পুলিশ ও নারীসহ অর্ধশত মানুষ খুন হয়। এদিকে রোববার ও সেমাবার হরতাল দিয়েছে দলটি।এদিকে সরাসরি রায় নিয়ে কোনো কথা না বললেও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মঙ্গলবার হরতালের ডাক দিয়েছে।

জাময়াত ও বিএনপির হরতাল প্রতিহত করতে সবাইকে মাঠে নামার আহ্বান জানান গণজাগরণ মঞ্চের নেতারা।

আমরা সবাই বাঙালি এটাই আমাদের পরিচয়: ডা. ইমরান এইচ সরকার



গণজাগরণ চত্বর থেকে: “আমরা সবাই বাঙালি এটাই আমাদের পরিচয়। আমাদের পূর্ব পুরুষরা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছে। আমরা তাদের দোসরদের পরাজিত করে ঘরে ফিরবো।”
শুক্রবার গণজাগরণ চত্বরের সমাবেশে এ কথা বলেছেন গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার।
তিনি বলেন, “গণজাগরণ মঞ্চ অহিংস আন্দোলন করছে। কোনো নৈরাজ্য সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেবে না গণজাগরণ মঞ্চ। আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নেব না। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিশালী করে জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করবে বলে আশা করি।”
তিনি বলেন, “আমাদের রক্তে লালন রবীন্দ্রনাথের মানবতাবোধ যেমন মিশে আছে, তেমনি আছে সুকান্ত নজরুলের বিদ্রোহী চেতনা। বাংলার মানুষ মাথা নত করতে শেখেনি। যারা যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছেন তাদের হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, ভয় দিয়ে লাভ নেই। আমরা আন্দোলন শেষ না করে ঘরে ফিরছি না।”
ইমরান বলেন, “জামায়াত শিবিরের হায়েনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ১৬ কোটি দেশপ্রেমিক জনতা জাগ্রত রয়েছে। পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। এখনও সময় আছে ভালো পথে আসার।”
তিনি বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল, যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়ে আসছিল। আমরা বার বার আহ্বান করেছিলাম তাদের সঙ্গ ত্যাগ করার জন্য। তারা আমাদের কথা শোনেনি। তারা মঙ্গলবার হরতাল দিয়েছে।”

ইমরান বলেন, “আমরা ৫ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়েছিলাম, যুদ্ধাপরাধীদের আর কোনো আঁচড় ফেলতে দেবোনা বাংলার মটিতে। সে কারণে তাদের হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। আগামীতে হরতাল প্রতিহতের জন্য প্রস্তুতি নিন।”

তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবির একটি পতাকা ছিঁড়েছে। শনিবার পতাকা ওড়ানো কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। তাদের বুঝিয়ে দিতে চাই, এখনও ১৬ কোটি পতাকা রয়েছে।”
ডা. ইমরান বলেন, “দেল্যা রাজাকারের রায়ে ১৬ কোটি মানুষের আশার প্রতিফলন ঘটেছে। গণজাগরণ মঞ্চ কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমাদের এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের যেতে হবে অনেক দূর।”
তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব নজিরবিহীন। তারা পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মানুষ প্রতিরোধ শুরু করেছে। আপনারা সবাই এতে সামিল হন।”
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার স্পষ্ট হয়েছে হায়েনাদের চেহারা। তারা ২০টির বেশি স্থানে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। মন্দির পুড়িয়ে দিয়েছে। আপনারা হিন্দু ভাইয়ের পাশে দাঁড়ান। যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে।“
তিনি বলেন, “বিভ্রান্ত করে কিছু তরুণদের রাজপথে নামানো হয়েছে। আমরা ধিক্কার জানাই। আর সেইসব তরুণদের বলতে চাই, আপনারা ভুল পথে আছেন। সঠিক পথে আসুন। এই রাজাকাররা আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না।"

শহীদ তাজুল শ্রমিক আন্দোলনের অগ্নি মশাল’




ঢাকা: “শহীদ তাজুল ইসলাম ছিলেন শ্রমিক আন্দোলনের অগ্নি মশাল। তার নির্মোহ আত্মত্যাগই তা প্রমাণ করেছে। তাই আজকের এ দিনটিতে সব শ্রমজীবী মানুষের নতুন করে শপথ নেওয়ার দিন। তার দেখানো পথ ধরেই সকলকে শোষণ মুক্তির পথে এগুতে হবে।”
স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের শহীদ কমরেড তাজুল ইসলামের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শুক্রবার সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আজ সারা দেশে যে সাম্প্রদায়িক তাণ্ডব শুরু হয়েছে, এই অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্যও শহীদ তাজুল আমাদের স্মরণীয়। এজন্য শ্রমিকশ্রেণীকে আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে।”
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার লক্ষ্যে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনের নীচে অস্থায়ী শহীদ বেদি নির্মাণ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কমরেড তাজুলের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
এসময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ-বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম শুভ প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জিলানী শুভ ও কে এম রহুল আমীন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসময় অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
উল্লেখ্য, তাজুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর ১৯৭৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশ অনুযায়ী শ্রমিক আন্দোলন সংঘটিত করার পথ বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ দেশব্যাপী আহুত শিল্প ধর্মঘট ও হরতালের সমর্থনে আগের মধ্যরাতে আদমজী জুটমিল এলাকায় কমরেড তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে শ্রমিকরা প্রচার মিছিল বের করলে তৎকালীন স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের হামলায় কমরেড তাজুল ইসলামসহ কয়েকজন শ্রমিক মারাত্মক আহত হন। ভোরবেলা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।

Thursday, February 28, 2013

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছে


একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় একাত্তরে সামান্য তাবিজ বিক্রেতা বর্তমানে জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, ধর্মান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে তাকে সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রায় ঘোষণার পর পরই এ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এই রায় ‘ঐতিহাসিক’। অন্যায় করে যে পার পায় না এ রায়ের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হলো। এ রায়ের মাধ্যমে দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির কষ্ট দেশ কিছুটা হলেও ভুলতে পারবে, ৩০ লাখ শহীদের আত্মা শান্তি পাবে। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ বলেছেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির দন্ডাদেশের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে।


১২টি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সেগুলো থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট বেঞ্চ এই ঐতিহাসিক রায় প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দু’সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগের মধ্যে ৬, ৭, ৮, ১০, ১১, ১৪, ১৬, ১৯ অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ ও ১০ নম্বর অভিযোগে তাঁকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করার আদেশ দেয়া হয়েছে। অন্য ছয়টি অভিযোগে আলাদা করে কোন শাস্তি দেয়া হয়নি। অন্যদিকে ১২টি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাঈদীকে সেই সমস্ত অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়েছে।মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে তাঁকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছে ট্রাইব্যুনাল। বাকি ১২টি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়াত সেগুলো থেকে তাঁকে খালাস দেয়া হয়েছে। দুটিতে ফাঁসি দেয়া হলেও অন্যগুলোতে কোন সাজা দেয়া হয়নি। এ ঘটনায় আসামিপক্ষ আপীল করলে যদি ২টি অভিযোগ থেকে খালাস পান সে ক্ষেত্রে তিনি কি মুক্ত হবেন।
এ প্রসঙ্গে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, যেহেতু ২টিতে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন, অন্য ৬টিতে দোষী সাব্যস্ত হলেও কোন সাজা দেয়া হয়নি। সাঈদীকে মুক্ত হতে হলে ৮টি অভিযোগ থেকেই মুক্ত হতে হবে। যেহেতু ২টিতে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে। সে কারণে অন্যগুলোতে কোন সাজা দেয়া হয়নি।
অন্যদিকে প্রধান সমন্বয়কারী এমকে রহমান বলেছেন, ৮টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ২টিতে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। ধরে নেয়া যায় অন্য ৬টিতেও মৃত্যুদন্ড- সমান অপরাধ। এগুলো সুপ্রীমকোর্ট ঠিক করবে।


এদিকে সাঈদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, যুদ্ধাপরাধের মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদ-ের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই আপীল করব। কারণ উনি (সাঈদী) নির্দোষ। উনার বেকসুর খালাস পাওয়ার কথা ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে মিথ্যা সাক্ষী উপস্থাপন করে এই রায় পেয়েছে। রায় ঘোষণার উপলক্ষে ট্রাইব্যুনাল অঙ্গনে নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। প্রধান গেট ছাড়ায় মূল ভবনের তিন বার চেকিং করে সাংবাদিক আইনজীবী ও পর্যবেক্ষকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম ॥ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ট্রাইব্যুনাল অঙ্গনে সাংবাদিক, আইনজীবী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। সকাল ১১টা ১০ মিনিটের সময় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে এজলাস কক্ষে আনা হয়। ১১টা ১১ মিনিটে ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার জন্য চেয়ারম্যানসহ অন্য দু’বিচারপতি আসন গ্রহণ করেন। শুরুতেই চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর বলেন, এটি ১২০ পৃষ্ঠার রায়। তবে আমরা রায়ের ৫৬ পৃষ্ঠার সারাংশ পড়ব।
চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর বলেন, ‘আমরা রায়ের আগে দুটি কথা বলতে চাই। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পরিচয় দেয়ার কোন দরকার নেই। ওনার ওয়াজ শোনার জন্য হাজার মানুষ যান। ওনার বর্তমান নাম আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। উনি শুধু প্রখ্যাত মাওলানা নন, উনি দুবারের এমপি। জামায়াতের নায়েবে আমির। কিন্তু আমরা তাঁকে নায়েবে আমির কিংবা সাংসদ হিসেবে বিচার করছি না। আমরা আজ থেকে ৪২ বছর পূর্বে সংঘটিত অপরাধের বিচার করছি। ওই সময় সাঈদী ছিলেন ৩০ বছরের যুবক। তিনি ছিলেন বিবাহিত, এক সন্তানের জনক। পিরোজপুরে সাউদখালীতে বাড়ি। তখন তিনি কোন ধর্মীয় বা রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পিরোজপুরের শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি আলেম পাস। উর্দুতে ভাল কথা বলতে পারতেন। তাই পাকিস্তানী সেনাদের সঙ্গে তাঁর ভাল যোগাযোগ তৈরি হয়। আমাদের বিচার করতে হবে, তিনি সে সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না। আমরা সেই ৩০ বছরের যুবকের বিচার করছি। বর্তমানের সাঈদীর বিচার করছি না, যার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে গ্রামের নিরীহ লোক ও সাধারণ মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে ২৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন ১৭ জন।
রায় পড়া শুরু ॥ সাঈদীর বিরুদ্ধে রায়ের ৫৬ পৃষ্ঠার সারাংশ পড়া শুরু হয় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে। পিনপতন নীরবতার মধ্যে বিচারপতি আনোয়ারুল হক প্রথমে রায় পড়া শুরু করেন। এর পর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সর্বশেষে চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর দুপুর ১টা ২০ মিনিটে শুরু করেন। শেষ করেন ১টা ৪৫ মিনিটে। সর্বশেষে পিনপতন নীরবতার মধ্য দিয়ে চেয়ারম্যান সাজা ঘোষণা করেন। ৮ ও ১০ এই দুটি চার্জে সাঈদীকে ফাঁসি দেয়া হয়।
চার্জ দুটিতে কী আছে ॥ মামলার রায়ে ৮ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ মে বেলা ৩টায় সাঈদীর নেতৃত্বে তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা পাকিস্তানী বাহিনীর সহায়তায় সদর থানার চিতলিয়া গ্রামের মানিক পসারীর বাড়িতে হানা দিয়ে তার ভাই মফিজ উদ্দিন এবং ইব্রাহিমসহ দুই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যান। সেখানে পাঁচটি বাড়িতে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। সেনা ক্যাম্পে ফেরার পথে সাঈদীর প্ররোচনায় ইব্রাহিমকে হত্যা করে লাশ ব্রিজের কাছে ফেলে দেয়া হয়। মফিজকে ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
পরে সাঈদী ও অন্যদের আগুনে পারেরহাট বন্দরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় সাঈদী সরাসরি অপহরণ, খুন, যন্ত্রণাদানের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিলেন, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ৩(২)(এ) ধারা অনুসারে অপরাধ।
অভিযোগ-১০-এ বলা হয়েছে, ২ জুন সকাল ১০টার দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে তার সশস্ত্র সহযোগীরা ইন্দুরকানি থানার উমেদপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ার হানা দিয়ে ২৫টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসব বাড়ির মালিক হলেন, চিত্তরঞ্জন তালুকদার, হরেণ ঠাকুর, অনিল ম-ল, বিসা বালি, সুকাবালি, সতিশ বালা প্রমুখ। সাঈদীর ইন্ধনে তার সহযোগীরা বিসা বালিকে নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে গুলি করে হত্যা করে। বেসামরিক মানুষের বসবাসের বাড়িতে আগুন দেয়া নিপীড়নের শামিল। সাঈদী এ ঘটনায় বাড়িঘর পোড়ানো, বিসা বালিকে হত্যার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন, যা আইনের ৩(২)(এ) ধারায় অপরাধ।
অন্য ৬টিও প্রমাণিত ॥ এ দুটি বাদে আরও ছয়টি অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সেই চার্জগুলো হচ্ছে, ৬, ৭, ১১, ১৪, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগ। চেয়ারম্যান রায়ে বলেন, ২টি অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় এসব অপরাধে নতুন সাজা দেয়ার প্রয়োজন নেই।
কী আছে ঐ অভিযোগে ॥ অভিযোগ-৬-এ বলা হয়েছে, ৭ মে সাঈদীর নেতৃত্বে একদল শান্তি কমিটির সদস্য পিরোজপুর সদরের পারেরহাটে গিয়ে পাকিস্তানী সেনাদের ওই এলাকায় স্বাগত জানান। মুকুন্দ লাল সাহার দোকান থেকে বাইশ সের স্বর্ণ ও রৌপ্য লুট করেন সাঈদী।
অভিযোগ-৭-এ বলা হয়, সাঈদী তার সশস্ত্র সাঙ্গোপাঙ্গ ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে সদর থানার ভাদুরিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম খানের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম সেলিমের বাড়িতে হানা দেন। পরে তিনি তাঁকে আটক করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেন, যারা তাঁকে নির্যাতন করে।
অভিযোগ-১১* সাঈদীর নেতৃত্বে শান্তি কমিটি ইন্দুরকানি থানার টেংরাখালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম হাওলাদারের বাড়িতে পাকিস্তানী সেনাদের নিয়ে যান। সেখানে সাঈদী তার বড় ভাই আবদুল মজিদ হাওলাদারকে ধরে নির্যাতন করেন।
অভিযোগ-১৪ *
মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একটি রাজাকার বাহিনী হোগলাবুনিয়ার হিন্দুপাড়ায় যায়। মধুসূদন ঘরামীর স্ত্রী শেফালী ঘরামী ঘর থেকে বের হতে পারেননি। তখন সাঈদীর নেতৃত্বে রাজাকাররা তাঁকে ধর্ষণ করে।
অভিযোগ-১৬ *
সাঈদীর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের রাজাকার দল পারেরহাট বন্দরের গৌরাঙ্গ সাহার বাড়ি থেকে তার তিন বোন মহামায়া, অন্ন রানী ও কমলা রানীকে ধরে পাকিস্তানী সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তিন দিন ধরে ধর্ষণ করে পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
অভিযোগ-১৯ *
সাঈদী প্রভাব খাটিয়ে পারেরহাটসহ অন্য গ্রামের ১০০-১৫০ হিন্দুকে ইসলাম ধর্মে রূপান্তর করে তাদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে বাধ্য করা হতো।
যেগুলো প্রমাণিত হয়নি ॥ ১২টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে সেই সমস্ত অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। অভিযোগগুলো হলো, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৯, ১২, ১৩, ১৫, ১৭, ১৮ ও ১৯।
প্রথম মামলা॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর প্রথম মামলা হয় মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাসল গঠন করা হয়। ২০১০ সালের ২৯ জুন তাঁকে ধর্মীয় অনুভূতির আঘাতে গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় সাঈদীর বিরুদ্ধে বিচার কাজ। অবশেষে ২০১৩ সালের ২৯ জুন উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ (সিএভিতে) রাখেন। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়। বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল-১ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষনা করে।
তৃতীয় রায় ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২-এ ৯টি মামলার মধ্যে এটি তৃতীয় রায়। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাচ্চু রাজাকার হিসেবে পরিচিত আবুল কালাম আজাদকে মৃত্যুদ- ও কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করেন। এখন আরও ৬টি মামলা বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। মামলাগুলো হলো জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আব্দুল আলীম।
আমি সন্তুষ্ট ॥ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার প্রসিকিউশনপক্ষের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন আমরা সাঈদীর বিরুদ্ধে ৮টি অভিযোগ প্রমাণে সচেষ্ট হয়েছি। আদালত পূর্ণাঙ্গভাবে পর্যালোচনা করে এ রায় দিয়েছে। আমরা আটটি অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের ধারণা ছিল, ১৯টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হবে। তারপরও এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। রায় ঘোষণার সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম, প্রধান সমন্বয়ক (এ্যার্টনি জেনারেল পদমর্যাদায়) এম কে রহমান, অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, মমতাজ উদ্দিন ফকির, চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান, প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, প্রসিকিউটর হায়দার আলী, প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী, প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম, প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান, প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল, প্রসিকিউটর নুর জাহান মুক্তা, প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আনোয়ার হোসেনসহ সিনিয়র আইনজীবিগণ। ডিফেন্স পক্ষের সিনিয়র কোন আইনজীবী এজলাস কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না। তবে জুনিয়র আইনজীবী সাজ্জাদ আলী চৌধুরীসহ চার জুনিয়র ডিফেন্স আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এ্যাম্বুলেন্সে সাঈদী ॥ কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ঢকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি এ্যাম্বুলেন্সে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। আগে দুটি ও পিছনে একটি পুলিশ ভ্যান পাহারা দিয়ে তাঁকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। জামায়াতে ইসলামী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকায় ট্রাইব্যুনালে আরও বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া হয়।
চুপ চুপ তুই রাজাকার ॥ রায় ঘোষণার পর ডকে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দাঁড়িয়ে যান এবং বলতে থাকেন, ‘আপনারা বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে রায় দেননি। আপনারা শাহবাগের কিছুসংখ্যক নাস্তিক ও ব্লগারদের...’ এ সময় এজলাস কক্ষে উপস্থিত অনেকে ‘ তুই রাজাকার, তুই রাজাকার, চুপ কর্’ বলে তীব্র ধিক্কার দিতে থাকেন। পরে পুলিশ তাঁকে আসামীর কাঠগড়া থেকে নামিয়ে হাজতখানায় নিয়ে যায়।

দেলু ওরফে দেইল্লা ওরফে দেলোয়ার হোসেন শিকদার-মূল ব্যবসা ছিল তাবিজ বিক্রি


একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় মক্তব ও মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার কারণে আরবি ও উর্দু ভাষায় পারদর্শী ছিলেন দেলু ওরফে দেইল্লা ওরফে দেলোয়ার হোসেন শিকদার। একাত্তরে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই থাকাকালে পিরোজপুর জেলার পারেরহাট বাজারে প্রথমে ছোলামুড়ি বিক্রি শুরু করেন দেলু। কিছুদিন পর ভায়রা ভাইয়ের মুদি দোকানে বসলেও আড়ালে তাঁর মূল ব্যবসা ছিল তাবিজ বিক্রি। এক পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে শান্তি কমিটির সদস্য হয়ে যান। পরে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডারের দায়িত্ব নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের সংগঠিত করে এলাকায় শুরু করেন হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ, লুট, ধর্ষণসহ জঘন্যতম মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ। ওই সময়েই 'দেইল্লা রাজাকার' নামে পরিচিতি লাভ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীনের পর ছারছীনা মাদ্রাসায় ভর্তি হন দেইল্লা। সেখানে কিছুদিন থাকার পর জামায়াতের ছাত্ররাজনীতি করার কারণে ওই মাদ্রাসা থেকে তিনি বহিষ্কৃত হন। পরে বারইপাড়া মাদ্রাসা থেকে মোস্তফা দেলোয়ার হোসেন নামে দাখিল এবং পরে নাম পরিবর্তন করে আবার আবু নাঈম মো. দেলোয়ার হোসাইন নামে আলিম পাস করেন।
পরবর্র্তী সময়ে দীর্ঘদিন পালিয়ে থেকে উচ্চতর ডিগ্রি না নিলেও নামের সঙ্গে আল্লামা টাইটেল ব্যবহার করে 'আল্লামা মাওলানা' পরিচয়ে আবির্ভূত হন। ওয়াজ করে বেড়ান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ওই সময়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আড়ালে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন তিনি। পরে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও চলে তাঁর এই কার্যক্রম। কালক্রমে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের নায়েবে আমিরের দায়িত্ব পেয়ে যান। এই সময়েই মা-বাবার দেওয়া দেলোয়ার হোসেন শিকদার, এলাকার সেই দেইল্লা রাজাকার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নামে ব্যাপক পরিচিতি পান।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, একাত্তরের অপরাধ ঢাকতেই দাখিল ও আলিম পরীক্ষা এবং পরবর্তী সময়ে ধর্ম প্রচারের নামে জামায়াতের রাজনীতির প্রচারণার সময় জন্মতারিখ পাল্টানোসহ ভিন্ন নামে আত্মপ্রকাশ করেন দেইল্লা রাজাকার। এসব অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠিত উপকমিটি।
দাখিল পরীক্ষা অনুযায়ী সাঈদীর জন্মতারিখ ১৯৪৭ সালের ১ মার্চ হলেও নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা জীবনবৃত্তান্ত অনুযায়ী সাঈদীর জন্ম ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর জেলার তৎকালীন ইন্দুরকানীর (বর্তমানে জিয়ানগর উপজেলা) সাউথখালী গ্রামে। তাঁর বাবা মরহুম ইউসুফ আলী শিকদার। পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে- এমন আশঙ্কায় আবার ২০০৮ সালের ১০ নভেম্বর দাখিল ও আলিম পাসের সনদে নিজের নাম ও বয়স পরিবর্তন করান সাঈদী।
জানা গেছে, আরবি ও উর্দু ভাষায় পারদর্শী এবং বাকপটু ছিলেন সাঈদী। তাঁর এই পারদর্শিতাকে ব্যবহার করে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে তিনি সখ্য এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এজাজের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেন। এ কারণে তিনি রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হতে সক্ষম হন। তাঁর নেতৃত্বে এবং সহযোগিতায় পিরোজপুরের পারেরহাট বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং রাজাকার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ, লুট, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করে।
বালিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান জানান, এলাকার মানুষের কাছে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পরিচিতি পান মূলত আশির দশকের শুরু থেকে। তখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় তিনি 'ওয়াজ মাহফিল' নামে পরিচিত ধর্মীয় সমাবেশগুলোতে একজন সুবক্তা হিসেবে হাজির হতে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮০ সালে প্রথম দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নিজ এলাকায় এক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করেন। ওই মাহফিলের পর এলাকাবাসী তাঁকে চেনে।
সাঈদীর মামলার বাদী জিয়ানগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাহাবুবুল আলম হাওলাদার জানান, মুক্তিযুদ্ধের আগে সাঈদী পারেরহাটে তাঁর ভায়রা ভাইয়ের সঙ্গে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলে দেলোয়ার শিকদার ও তাঁর বড় ভাই এনায়েত শিকদার পিরোজপুরের সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাস্তায় চিলা শিকদারের বাড়িতে থাকতেন। তখন তাঁকে তেমন কেউ চিনত না। কিন্তু আশির দশকে ওয়াজ নসিহত শুরু এবং পরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর ব্যাপক পরিচিতি পান সাঈদী।

Wednesday, February 27, 2013

জামায়াত-ই-ইসলামি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সিরাজুল হক গ্রেপ্তার


জামায়াত-ই-ইসলামি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সিরাজুল হককে আজ বুধবার পেশোয়ারের দির এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘ডন নিজউ’-এর খবরে বলা হয়, কয়েক বছর আগে পাকিস্তানের আদিবাসী অধ্যুষিত বাজৌর এলাকায় উগ্রপন্থী তালেবান ও অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর তত্পরতার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী যখন অভিযান চালাচ্ছিল, তখন সিরাজুল হকের নেতৃত্বে জামায়াত-ই-ইসলামি সে অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়ে সভা-সমাবেশ করেছিলেন। এসব রাজনৈতিক তত্পরতায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে আজ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০০৮ সালের ২২ নভেম্বরে জামায়াত-ই-ইসলামি বাজৌর, সোয়াত ও ওয়াজিরিস্তানে সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করে এবং অভিযান বন্ধের দাবিতে দির এলাকার তিমারগারায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছিল। সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জামায়াত-ই-ইসলামির বাজৌর শাখার প্রধান সরদার খান ও জানদুল এলাকার প্রধান ইজাজুল মুলক আফকারি বক্তব্য দেন। সমাবেশের পর কয়েক ঘণ্টার জন্য জামায়াত-ই-ইসলামির কর্মীরা মুন্দা-বাজৌর সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

Sunday, February 24, 2013

ঘরে ফেরা নেই যুদ্ধটা চলবেই :সৈয়দ শামসুল হক



লেখার টেবিলে মগ্ন হয়ে আছি, কখনো আর কখনো ল্যাপটপে
অক্ষরগুলো শব্দগুলো বাক্যগুলো করোটির ভেতরে সরবে
যে ফেটে পড়ছে, তার লিপি কী দ্রুতই না গড়ে উঠছে,
আর ওদিকে ওরা ওই তরুণেরা পায়ে পায়ে যে এসে জুটছে
শাহবাগ সড়ক মোহনায়_ এও তো এক কবিতাই!
খাতার শাদা পৃষ্ঠায় ল্যাপটপের দুধ শাদা পর্দায় তাকাই!
কবিতা কবিতা আজ, আমাকে লিখিয়ে নিচ্ছে নতুন একটা দিন_
কতদিন পরে! আর কত দিনের না পরেই রক্তের ঋণ
শোধ করতে ওরা_ গ্রথিত হচ্ছে পঙক্তির পর পঙক্তিতে
বাংলা মায়ের সবুজ আঁচলে ফের লাল সূর্য ফিরে এনে দিতে।
ফিরে এনে দিতে সত্যের উজ্জ্বলতা_ যা ছিলো অমাবস্যা ঢাকা_
কত দীর্ঘ রাত ছিলো বাংলাদেশ নামে একটি দেশের জেগে থাকা
ওই ওদেরই জন্যে। আর আমার কবিতাও_ একাত্তর থেকে!
আজ এই ল্যাপটপের পর্দায় বা খাতায় পাতায় আমার হাত লেখে
যে কবিতা, আজ তারচেয়েও এক মেধাবী কবিতা লেখা হয়ে যাচ্ছে
ওদেরই একের পর এক সমাগমে_ যেন শব্দের পর শব্দ পাচ্ছে
একটি কবিতার পঙক্তির শরীর। আমি লেখা ছেড়ে রাজপথে এবার।
ওদের কবিতাটিই তো আজ আমার_ আমাদের_ কণ্ঠে তুলে নেবার_
আর সেই কবিতাটির শিরোনাম লাল সবুজ অক্ষরে এই_
পতাকা যারা পোড়ায়_ তাদের ক্ষমা নেই_ নেই!
যতদিন না বাংলার মাটি হয় দালাল-ঘাতক মুক্ত_ ঘরে ফেরা নেই!
যতক্ষণ না মায়ের বুকে দুধ ফিরে দিতে না পারি_ যুদ্ধটা চলবেই...