Monday, October 7, 2013

হেফাজতি জঙ্গী সংগঠক মুফতি ইজাহারের গ্রেনেড :টার্গেট প্রধানমন্ত্রী? -সুমি খান


১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ আগষ্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা সহ ৪৮ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে এ দেশে। এর পর ও প্রশাসনের জঙ্গী প্রীতি দেখে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না।
চট্টগ্রামের লালখানবাজারে হেফাজতের নায়েবে আমির,জমিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল এবং নেজামে ইসলামী পার্টির সভাপতি মুফতি ইজাহারের জমিয়াতুল উলুম আল মাদ্রাসায় সোমবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত একজন রাতে মারা গেছে। একজনের হাতের পাঁচটি আঙ্গুল উড়ে গেছে। মাদ্রাসার ওই কক্ষটি থেকে তিনটি তাজা গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে।
রাতে তাকে তার পুত্র হারুণ ইজাহার সহ পালাতে সহায়তা করার পর থানায় মামলা করা হলো, তল্লাশী করা হলো তার কক্ষ। ১১ বোতল এসিড সহ বেশকিছু বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর পর ও মুফতি ইজাহার ও তার ছেলে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে ‘আইপিএস’ ‘ ইউপিএস’ বিস্ফোরণ সহ নানান গল্প ফেঁদে বসলেন! পুলিশ ও নীরবে মেনে নিলেন সব! এমন অথর্ব পুলিশ কর্তাদের পুষছে কেন প্রশাসন- সেটা একটা প্রশ্ন বটে। প্রশ্ন উঠে চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসন কি জঙ্গী ইজাহারের কেনা ? এতোবড়ো গ্রেনেড বিষ্ফোরণের ঘটনার পর কেন তাকে সারাদিন আগলে আগলে রাখা হলো?
জঙ্গীবাদী হেফাজত নেতা মুফতি ইজাহার ‘তালেবান আফগানিস্তানের জান্নাত দেখে এলাম’শীর্ষক প্রবন্ধে ১৯৯৮ সালের অক্টোবর-নবেম্বর সংখ্যা ‘মাসিক দাওয়াত’ নামের ইসলামী পত্রিকায় নিজেই এক সময় আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে কাজ করার কথা লিখেছিলেন । নিজেই গর্বের সঙ্গে বর্ণনা করেছেন আফগানিস্তান সফর ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে যোগাযোগের বিস্তারিত গল্প। র্যা ব সদর দপ্তরে ইজাহার কে আটক করে আনার পর জঙ্গী তৎপরতায় নেতৃত্বের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ইজাহার। তবু কোথায় প্রশাসনের অসহায়ত্ব? কার কাছে?
জঙ্গী তৎপরতার অভিযোগে কয়েকবার গ্রেফতার হয়েছেন মুফতি ইজাহার। রাউজানের একটি গোপন আস্তানায় জঙ্গী প্রশিক্ষণের অভিযোগে ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে তাকে সর্বশেষ গ্রেফতার করে টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যা ব। র্যাসবের তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রামের রাউজান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইন মামলায় মুফতি ইজাহারসহ হুজির আট প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেয়া হয়। আদালতে মামলার নথিতে তদন্ত কর্মকর্তা তখন উল্লেখ করেছিলেন, দেশে নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে হুজির প্রশিক্ষকের সহযোগিতা ও মদদ দিয়ে নগরীর লালখানবাজার আল জামেয়াতুল ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল এবং নেজামে ইসলামী পার্টির সভাপতি মুফতি ইজহার রাউজানে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করছে। হুজির সদস্যদের এ ক্যাম্পে রাতের আঁধারে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ২০১০ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাউজান গোদারপাড় পাহাড়ী এলাকা থেকে হুজির পাঁচ প্রশিক্ষককে গ্রেফতার করা হলে পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে তাদের নির্দোষ দাবি করে মুক্তির দাবি জানান মুফতি ইজাহার। ওই দিনই লালখানবাজার মাদ্রাসা থেকে মুফতি ইজাহারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে ঢাকায় র্যা বের ইন্টারোগেশন সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আফগানিস্তানে তৎকালীন শাসক মোল্লা ওমরসহ তালেবানি নেতা ও ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলার মুল আসামী মুফতি হান্নানের সঙ্গে তার যোগাযোগ থাকার কথা স্বীকার করেন। আফগানিস্তানে মোল্লা ওমরের সঙ্গে তার সাক্ষাত হওয়ার কথা জানান জিজ্ঞাসাবাদে। ঘটনাস্থলে তখন মুফতি ইজাহারসহ গ্রেফতার হওয়া হুজির প্রশিক্ষকরা বিস্ফোরক তৈরি ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিছু প্রশিক্ষকের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হুজির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর প্রমাণও মেলে। এসবের ধারাবাহিকতায় সোমবারের বিষ্ফোরণের ঘটনা প্রমাণ করে আত্মঘাতী জঙ্গী সদস্যদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছিল বোমা তৈরির মাধ্যমে। এছাড়া মুফতি ইজহারের আরেক ছেলে মুসা বিন ইজহারও জঙ্গী সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক হয়েছিলেন।
এসব নিয়ে ১৯৯৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেছি, অনেক লেখা লিখি করেছি। বারবার প্রশাসন তাকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে – কিন্তু কেন? কার বা কিসের প্রভাবে? সারা জাতিকে এদের জঙ্গীবাদ আর বোমাবাজের হুমকির মুখে ঠেলে বিপন্ন করবেন ই যদি, পুলিশ প্রশাসনের কি দরকার? সোমবারের এই ভয়ংকর ঘটনার পর ও বালিতে মুখ গুঁজে আছে প্রশাসন । এর ভয়াবহ পরিণতি ঠেকাতে পারবেন তো তারা?

চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী তার জনসভায় অনেক বার বলেছেন, লালখানবাজারে উগ্রবাদী এ নেতার মাদ্রাসায় জঙ্গী প্রশিক্ষণ হয়। যেখান থেকে ২০ হাজার লোক আফগানিস্তান যুদ্ধে গেছে। ফিরে আসে ১০ হাজার। ইসলামী দলগুলোর পক্ষ থেকে ও তথ্য প্রমাণ নিয়ে একই অভিযোগ বহুবার তোলা হয়েছে। দু’একবার আটক হওয়া ছাড়া অপরাধের শাস্তির কোন উদাহরণ দেখেনি সাধারণ মানুষ।
কেবল আলোচনা নয় এবার পুরোপুরি ফেঁসে গেছেন উগ্রবাদী নেতা ও তার বিতর্কিত সেই মাদ্রাসা। যেখানে বিস্ফোরণে পাঁচ ছাত্রের গুরুতর আহত , পরবর্তীতে একজনের মৃত্যু ও গ্রেনেড উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। জেগে জেগে যেন ঘুমের ভান করছেন পুলিশ প্রশাসন।
অবিলম্বে ইজাহারসহ জঙ্গী নেতাদের আটক করে হেফাজতীদের মাদ্রাসায় অভিযান শুরুর দাবি তুলেছে ইসলামী দল ও সংগঠনগুলো। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও বিস্ফোরক দলের তদন্তে বেরিয়ে পড়েছে আলামত। বিস্ফোরক দ্রব্যের কারণেই ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আগামী ১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে সফর করবেন। এর আগে মাদ্রাসায় এ ধরনের বিস্ফোরক পাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করেছে জঙ্গীরা তাদের হত্যাযজ্ঞ সফলে তৎপর।মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে বিস্ফোরণস্থল পরীক্ষা করে পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে বিস্ফোরকের ‘বড় ধরনের মজুদ’ ছিল। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, বিস্ফোরণ ঘটার পর দমকল বাহিনী আগুন নিভিয়েছে। ছাইয়ের নিচে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরক পাওয়া গেছে। তিনি নিশ্চিত হয়ে বললেন সেখানে বিস্ফোরক দ্রব্যের বড় ধরনের মজুদ ছিল। হাতে তৈরি শক্তিশালী কিছু গ্রেনেড আছে, যা বেশ বিপজ্জনক স্বীকার করে তিনি সাংবাদিক দের চাপ এড়াতে বললেন, “সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে”।


মুফতি ইজহার ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে জঙ্গী কর্মকান্ডের অভিযোগ সবার জানা। তবু ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামের হেফাজতি ইসলাম নিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসা সফরকরেন অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার টিম বলটনিকফ। ২০০৯ সালে মার্কিন দুতাবাসে হামলা করার প্রস্তুতিকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আটককরেছিলেন ইজাহার। তবু বিদেশী দূতাবাসের প্রতিনিধি রা বিভিন্ন সময়ে সফর করেছে এই মাদ্রাসা।নেজামে ইসলামী পার্টির এই দুই সংগঠক ১৮ দলেরও নেতা। এ কারণেই হয়তো তাদের তোয়াজ করে চলে সবাই। যে কারণে দিনে দিনে এদের অপতৎপরতা বেড়েই চলেছে, যা আমাদের দেশের জন্যেই শুধু নয়, দক্ষিণ এশিয়া সহ সারা বিশ্বের জন্যেই উদ্বেগজনক।
হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকা জঙ্গীবাদের দায়ে অভিযুক্ত মুফতি ইজহারের মাধ্যমে সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকত-উল-জিহাদের মাঠে নামার খবর প্রকাশ হয়। ইজাহারের মাধ্যমে হেফাজতকে শক্তিশালী করার বিষয় নিয়ে হরকত-উল-জিহাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু নেতার বৈঠক হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শীঘ্রই ওলামা সম্মেলনের নামে হেফাজতকে সক্রিয় করার কৌশল নিয়েছে জামায়াত। আহমদ শফী আমির থাকলেও হেফাজতকে নেতৃত্ব দেয়ার কাছে মূল দায়িত্ব পালন করছেন মুফতি ইজহারুল ইসলাম। উদ্দেশ্য যে কোন ভাবে মহাজোট শাসন কালের পরিসমাপ্তি ঘটানো। সেটা যদি সম্ভব হয় বঙ্গবন্ধুর মতো তার কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কে হত্যার মধ্যে দিয়ে –তাহলে তো কেল্লাফতে!! যুদ্ধাপরাধের দায়ে কারাবন্দী দের পরিবার থেকে বড়ো অংকের টাকা ও তিনি নিয়েছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক সাইট ফেসবুক এবং ওয়েব সাইটে ছবি এবং তথ্য প্রচার হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মুফতি ইজহারুল ইসলামের লালখান বাজার মাদ্রাসায় বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে আহত হাবিব (২৫) নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার গভীর রাত দুইটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে একই বিস্ফোরণে আহত নূরুন্নবী নামে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিস্ফোরণের পর আহত হাবীব হালিশহর জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে গোপনে চিকিৎসা নেওয়ার সময় সোমবার দুপুরে পুলিশের হাতে আটক হয়। আর নূরুন্নবীও চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক হয়।
ঘটনার পর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার বোমা বিস্ফোরক দল ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে প্রথমে সীসাযুক্ত মার্বেল ও কাচের টুকরা উদ্ধার করা হয়। কিন্তু পুলিশ সীসাযুক্ত মার্বেল পাবার পরও সেখানে বিস্ফোরকের আলামত উদ্ধারের বিষয়টি চেপে যাবার চেষ্টা করেন। পুলিশ মাদ্রাসায় গেলেও মুফতি ইজহারুল ইসলাম মূল ফটকের সঙ্গে লাগানো বৈঠকখানায় বসে দীর্ঘক্ষণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় মুফতি ইজহার দাবি করেন, ল্যাপটপের চার্জার বিস্ফোরণে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি কোন ধরনের বোমা বানানোর কথা অস্বীকার করেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মুফতি ইজহারুল ইসলামকে তার বৈঠকখানায় নামাজ পড়তে দেখা গেছে। এসময়ও তার বৈঠকখানার সামনে পুলিশের কোন নজরদারি দেখা যায়নি।ঘটনাস্থলে অবস্থান করে দেখা গেছে, পুলিশ অভিযান চালানোর জন্য ফোর্স জড়ো করতেই প্রায় আধঘণ্টা সময় পার হয়ে যায়। এর মাঝে নির্বিঘ্নে আত্মগোপনে চলে যান মুফতি ইজহার। এর আগে দুপুরেই মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়ে যান হারুন ইজহার।

সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে প্রায় ১০ প্লাটুন পুলিশ পুরো মাদ্রাসা ঘিরে অভিযান শুরু করে। প্রথমেই মাদ্রাসার শ্রেণীকক্ষে অভিযান শুরু করলেও বৈঠকখানার যেখানে দীর্ঘক্ষণ মুফতি ইজহারুল ইসলাম বসেছিলেন সেখানে পুলিশের কেউ যাননি।
রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত পুলিশ মাদ্রাসার সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে প্রতিটি ভবন, ছাত্রাবাস, মুফতি ইজহারের বাসায় অভিযান চালায়। মুফতি ইজহারের বাসা থেকে ১৮ বোতল পিউরিক এসিড জব্দ করা হয় বলে জানান নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ হাজারী।

রাতে তিন ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান নাটক চালিয়েছে পুলিশ। এসময় জঙ্গী কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বহুল আলোচিত ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মুফতি ইজহার ও তার ছেলে হারুন ইজহার পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। দিনভর মুফতি ইজহার মাদ্রাসার ভেতরে প্রকাশ্যে অবস্থান করলেও পুলিশ তাকে আটক কিংবা হেফাজতে নেয়ার কিংবা নজরদারিতে রাখার কোন পদক্ষেপই নেয়নি। অভিযোগ উঠেছে, দিনের আলোয় মুফতি ইজহারকে পালিয়ে যাবার সুযোগ করে দিয়ে রাতের আঁধারে পুলিশ তল্লাশি অভিযানের নামে নাটক করেছে।
যে পাঁচজনকে হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরির কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করেছে-তারা হলেন মাদ্রাসার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক তফসির আহমেদ ,হেফজখানা শিক্ষা (আরবি) বিভাগের শিক্ষক মো.এছহাক, হাদিস মাধ্যামিক বিভাগের শিক্ষক আব্দুল মান্নান এবং কিতাব বিভাগ শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান ও বোর্ডিং সুপার মনির হোসেন।

মাসিক ‘দাওয়াত’ নামে একটি মাসিক ইসলামী পত্রিকায় সব সময়েই মুফতি ইজাহারসহ কয়েকজন উগ্রবাদী নেতা লেখালেখি করেন। দলটির কর্মসূচীও পাওয়া যায় এখানে। সেখানে নিজেই এক সময় আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে কাজ করার কথা লিখেছিলেন উগ্রবাদী এ নেতা।
বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করার নীলনক্সা বান্তবায়নে হেফাজতকে নেতৃত্ব দেয়ার মূল দায়িত্ব পালন করছেন মুফতি ইজাহারুল ইসলাম। ইসলামের বিভ্রান্তিমূলক বাণী দিয়ে উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে সক্রিয় করা হচ্ছে হেফাজতে ইসলামের মাধ্যমে। তাতে অন্যতম ভূমিকা পালন করছে হরকত-উল-জিহাদ (হুজি) কানেকশনে অভিযুক্ত মুফতি ইজাহারুল ইসলাম। হেফাজতে মুফতি ইজহার বরাবরের মতো তার নেপথ্য ‘খেলায়’ মহাসচিবসহ তিন শীর্ষ নেতাকে বহিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরেই আন্দোলনের নামে সহিংস তান্ডবে সক্রিয় মুফতি ইজাহার ও তার দুই ছেলে মুসা এবং হারুন বিন ইজাহার। পটিয়া, হাটহাজারী সহ দেশের কওমী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশ অস্থিতিশীল করা তার টার্গেট ।
কেন তাদের এতো প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে প্রশ্ন তুলেছেন তরিকত ফেডারেশনের নেতারা। বলেছেন, হেফাজত নেতারা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে ফায়দা লুটছে। এবার বেরিয়ে পড়েছে অপকর্ম। এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীতে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছে তরিকত ফেডারেশন। একই দাবি নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইসলামী ফ্রন্ট ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতারা। ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব ও আহলে সুন্নাতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা এমএ মতিন বলেন, ধর্ম ব্যবসায়ী জঙ্গীদের আসল চেহারা বেরিয়ে গেছে। অবিলম্বে এই জঙ্গী নেতাকে আটক করতে হবে। ওদের কওমি মাদ্রাসায় জঙ্গী প্রশিক্ষণ হয়। সরকারকে অবিলম্বে অভিযান চালাতে হবে। তিনি বলেন, আমরা বহুবার বলেছি হেফাজত নেতারা জঙ্গী। এরা একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী। একই কথা বলেছেন, সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, হেফাজত নেতারা ১৩ দফার নামে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করেছেন। এমন দাবি দেশের সাধারণ মানুষের ও ।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের নাহয় মাথাব্যথা নেই । কিন্তু দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে শপথ করেছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ই একজন। তার এবং তার জনগণের স্বার্থে প্রশাসন কি দায়িত্বে তৎপর হবেন? মুফতি ইজাহার , মুসা বিন ইজাহার এবং হারুণ বিন ইজাহার কে দ্রুততার সাথে গ্রেফতার না করলে ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবেন এই নিদ্রাকাতর সর্বনাশা প্রশাসন!
০৮ অক্টোবর২০১৩
Sumikhan29bdj@gmail.com