Friday, October 26, 2012

সঠিকভাবে গরু বা ছাগলের চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে- ত্রুটি থাকলে সেই চামড়ার মূল্য থাকে না


এই ঈদে পশু কোরবানির পর মূলত চামড়াটি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তবে সময়মতো বিক্রি করা না গেলে সঠিকভাবে গরু বা ছাগলের চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে।কেননা, ত্রুটি থাকলে সেই চামড়ার মূল্য থাকে না।বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম আনসারী বলেন, চামড়ার দাম অনেকটাই চামড়ার মানের ওপর নির্ভর করে। চামড়া ছাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় সংরক্ষণে অবহেলা করলে মান নষ্ট হতে পারে।
পশু কোরবানির পর জরুরি কাজ পশুর চামড়া সংরক্ষণ। চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজির (প্রস্তাবিত) প্রভাষক আবদুল্লাহ-আল-মাহমুদ।
 প্রথমেই চামড়াটি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এমনভাবে পরিষ্কার করতে হবে, যাতে চামড়ায় কোনো ধরনের ময়লা, রক্ত, চর্বি বা মাংস লেগে না থাকে। এভাবে পরিষ্কার করার পর চামড়া সংরক্ষণের উপযোগী হয়।
 কোরবানির পশুর চামড়া ছাড়ানোর সাত-আট ঘণ্টার মধ্যে চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে আবহাওয়া বেশি শুষ্ক ও গরম হলে তিন-চার ঘণ্টার মধ্যেই চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে।
 চামড়া সাধারণত লবণ-পদ্ধতি, রোদে শুকানো পদ্ধতি ও হিমাগার-পদ্ধতি—তিনভাবে সংরক্ষণ করা যায়।
 লবণ-পদ্ধতিতে চামড়ার মাংসল পিঠে লবণ মাখিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। এ জন্য মাংসল পিঠে চামড়ার ওজনের ৪০ শতাংশ লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা যাবে। লবণ লাগিয়ে প্রায় এক মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। লবণ লাগানোর পর দেখতে হবে, পুরো চামড়ায় পরিপূর্ণভাবে লবণ লেগেছে কি না। কারণ, লবণ ঠিকমতো না লাগলে চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
 রোদে শুকিয়েও চামড়া সংরক্ষণ করা যায়। পুরো চামড়াটি কাঠের বা বাঁশের কোনো ফ্রেমের ওপর রেখে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করতে হয়। তবে রোদে শুকিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করলে চামড়ার গুণাগুণ কিছুটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
 চামড়া যেকোনো শুকনো ও আলোযুক্ত ঘরে সংরক্ষণ করতে হবে। ঘরের পরিবেশ স্যাঁতসেঁতে হলে চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যায়।
 কোনো বদ্ধ ঘরে চামড়া রাখলে সেখানে আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ দূর করতে বৈদ্যুতিক ফ্যানের বাতাস দিতে হবে।
 সাধারণত একসঙ্গে অনেক চামড়া সংরক্ষণ করতে হিমাগার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। হিমাগারে মূলত ব্যবসায়ীরা চামড়া সংরক্ষণ করে থাকেন। তবে আমাদের দেশে সবচেয়ে কার্যকর ও সহজ উপায় হলো লবণ-পদ্ধতি।

কোরবানির পশুর উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ সুন্দর রাখতে কিছু পরামর্শ


পশু কেনা আর যত্ন-আত্তিতে ব্যস্ত সময় পার করেছন অনেকে। কারণ, কদিন বাদেই ঈদ। কিন্তু পশু কোরবানিতে পরিকল্পনার অভাব আর কোরবানির বর্জ্যে অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবেশ দূষিত হতে পারে। তাতে ফিকে হবে আপনার ঈদের আনন্দ। আর কোরবানির বর্জ্য দূষিত হয়ে তা থেকে ছড়াতে পারে রোগবালাই। তবে একটু সময় নিয়ে আর কিছু নিয়ম মেনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করলেই এসব সমস্যা এড়ানো যাবে। এ নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা সিটি উত্তর করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বিপন কুমার সাহা। তিনি বলেন, সামান্য অসচেতনতায় একজনের কারণে অনেকের কষ্ট হতে পারে। অথচ একটু খেয়াল রাখলে সমস্যা এড়ানো সম্ভব। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আর পরিবেশ সুন্দর রাখতে তাঁর কিছু পরামর্শ দেখুন।
 কোনো এলাকার লোকজন বিচ্ছিন্ন স্থানে কোরবানি না দিয়ে বেশ কয়েকজন মিলে একস্থানে কোরবানি করা ভালো। যেমন, মিরপুরের কোনো এলাকার কয়েকটি পরিবার মিলে একটি নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে কোরবানি দিতে পারেন। এতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাজ করতে সুবিধা হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোরবানির জায়গাটি যেন খোলামেলা হয়। আর জায়গাটি রাস্তার কাছাকাটি হলে বর্জ্যের গাড়ি পৌঁছাতে সহজ হবে।
 কোরবানির পর পশুর রক্ত ও তরল বর্জ্য খোলা স্থানে রাখা যাবে না। এগুলো গর্তের ভেতরে পুঁতে মাটিচাপা দিতে হবে। কারণ, রক্ত আর নাড়িভুঁড়ি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। আর যদি রক্ত মাটি থেকে সরানো সম্ভব না হয়, তা হলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
 এবার সিটি করপোরেশনের হাটগুলোয় প্রত্যেক ক্রেতাকে কোরবানির শক্ত বর্জ্য রাখার জন্য একটি বিশেষ পলিথিন দেওয়া হবে। মূলত ঈদের দিন বিকেল থেকেই কোরবানির পশুর উচ্ছিষ্ট ও অব্যবহূত বর্জ্য সংগ্রহ কাজ শুরু হবে।
কোরবানির বর্জ্য পলিথিনে করে রেখে দিতে হবে, যাতে ময়লা পরিবহন দ্রুততার সঙ্গে করা যায়। যাঁরা পলিথিন পাবেন না, তাঁরা এ রকম পলিথিন কিনে ময়লা রাখতে পারেন।
 যেসব এলাকায় গাড়ি পৌঁছানো সম্ভব নয় বা দেরি হবে, সেসব স্থানে বর্জ্য এ পলিথিনের ব্যাগে ভরে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। পশুর হাড়সহ শক্ত বর্জ্যগুলোও পলিথিনে দিয়ে দেওয়া ভালো।
 নাড়িভুঁড়ি বা এ জাতীয় বর্জ্য কোনোভাবেই পয়োনিষ্কাশন নালায় ফেলা যাবে না।
 যাঁরা চামড়া কিনবেন, তাঁরা কোনো বদ্ধ পরিবেশে চামড়া পরিষ্কার না করে এমন খোলামেলা স্থানে করতে পারেন, যেখানে ময়লা জমে দুর্গন্ধ হবে না। আর চামড়ার বর্জ্যগুলোও অপসারণের জন্য জমিয়ে রাখতে হবে।
কোরবানির পশুর বর্জ্য নিজের উদ্যোগে পরিষ্কার করাই ভালো।

অতিরিক্ত ভাড়া ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ যোগাযোগমন্ত্রীর


গাবতলী, ঢাকা : যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া ফেরৎ দেওয়ার জন্য বাস মালিকদের নির্দেশ দিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘‘যদি ভাড়া ফেরৎ না দেওয়া হয় তাহলে ‍তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামীতে এদের সাথে নিয়ে কোনো কাজ করা হবেনা ।

রাজধানীর গাবতলীর পশুরহাট পরিদর্শনে এসে যোগাযোগমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘‘যানজট পরিস্থিতি নিয়ে আমি সন্তষ্ট নই। বিশ বছরের জঞ্জাল সরাতে একটু সময় লাগবে।’’

যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘‘চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, দখলবাজ এসব লোকদের গলায় গলায় ভাব। এরা বিভ্ন্নি দল করে রাজনৈতিক ময়দানে একে অন্যের বিরুদ্ধে কথা বলে। কিন্তু চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে আসলে এদের গলায় গলায় ভাব। কোরবানি আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দেয়। এই ত্যাগের মধ্যে পশুর মনোবৃত্তি থাকবে কেন।’’

যোগাযোগমন্ত্রী ঝটিকা সফরে গাবতলী আসলে বেশ কয়েকজন যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেন। এ সময় বাড়তি ভাড়া নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার আন্তরিকভাবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। রাতারাতি কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। ধীরে ধীরে সমস্যাগুলো কেটে যাবে।’’

টার্মিনাল ও যানজট পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সন্তষ্ট কিনা এ পশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি সন্তষ্ট নই। তবে আগের চেয়ে কিছুটা ‍অগ্রগতি হয়েছে।

যোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তায় যানজট খুব একটা নেই বললেই চলে। আমি খবর নিয়েছি। একই সাথে রাস্তায় কোনো পশুর হাট নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ড্রাইভার এবং যাত্রীদের সতর্কভাবে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ড্রাইভার এবং যাত্রী উভয়েই বেপরোয়া। সবাই পড়িমরি করে বাড়ি ছুটছে । যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে।’’

এসব থেকে সাবধান হওয়ার জন্য সকলকে আহবান জানান তিনি। বাংলানিউজ

সবাইকে নিয়ে পরিমিত খান- ডা. শুভাগত চৌধুরী



অক্টোবর ২৫, ২০১২
আর দু’দিন বাদেই (২৭ অক্টোবর) মুসলমানদের পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। উৎসবের সময় খাওয়াটা একটু বেশি হবেই। কোরবানির উৎসবের সময় মাংস বেশি খাওয়া হয়। বিশেষ করে চর্বিওয়ালা গোশত। একে বারণ করা যাবে না। কারণ এটা উৎসবের অংশ। তবে আমার মতে, আজকাল মানুষ আগের চেয়ে বেশি সচেতন হয়েছেন। তাই পরিমিত ও সীমিত খাওয়ার দিকেই ঝুঁকছেন।

স্বাভাবিকভাবে যদি খান, সমস্যা নেই। মানে, গোশতটা একটু কম খান। পরিমাণে কম। তাহলে ক্যালোরি-ইনটেক একটু কম হল। দু’টুকরোর জায়গায় এক টুকরো। ব্যস, তাহলেই চলবে। যদি রয়ে-সয়ে খান, শেয়ার করেন, তাহলে ভয় নেই। বাইরে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে কী করেন? প্লেটে যা ছিল তার পুরোটা খান না, বাসায় নিয়ে যান, পরে খান বা বাসার অন্যরা সেটা খায়- সে রকমভাবে যদি পুরোটা দিলেই খেয়ে ফেলব–এই মানসিকতা না থাকে তাহলে সমস্যা হবে না।

খাওয়াটা উপভোগ করুন কিন্তু কম খান। অল্প-অল্প করে বারবার খান। স্বাভাবিকভাবে যা খান ততটুকুই। একেবারে বুভুক্ষুর মতো না। প্লেটে দিলেই খেতে হবে তা নয়।

ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেন। খাসির চর্বিটা যেমন খুব ক্ষতিকর। এটা ঈদের সময় খেলে পরের এক মাস আর খেলেন না। এটাও একটা কৌশল হতে পারে।

আরেকটা কৌশল হল পরিমাণে কম খাওয়া। আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞানে খুব গুরুত্বপূর্ণ হল ‘পোরশন সাইজ।’ এটা কমানো দরকার।

যে জিনিসটা একা খেতেন সেটা বাসার সবাইকে সঙ্গে নিয়ে খান। তাহলে আপনার খাওয়ার পরিমাণটা একটু কমল।

কেউ কেউ তিন-চারদিন একটানা মাংস খেতে থাকেন। এটাই ক্ষতিকর। আমি বলব, প্রথমদিনের পর আর মাংস না খেতে। এরপর সবজি বা মাছ খাওয়া যেতে পারে। তাতে শরীরের উপকার। প্রোটিন খেতে চাইলে চিকেনের ব্রোস্ট খান। তাতে ক্যালোরি-ইনটেক কম হবে। চর্বি কম খাওয়া হবে।

ধর্মীয় বিধানেও তো বলা হয়েছে, মাংস বণ্টন করে দিতে। তাই যত বেশি পারা যায়, গরীবদের মধ্যে মাংস বিলিয়ে দিলে ধর্মের নিয়ম মানা হল। ওদিকে শরীরও বেশি-বেশি রেডমিট খাওয়ার ঝুঁকি থেকে বেঁচে গেল।

উৎসবের দিন খান। অল্প করে। ধর্মরক্ষা হল, উৎসব উদযাপনও হল। প্রতিদিন টানা মাংস খাওয়া, মাংস ফ্রিজভর্তি রেখে দিয়ে প্রতিদিন বা মাসের পর মাস খাবেন- এর তো কোনও ধর্মীয় যুক্তি নেই। স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ তো বটেই।

রান্নার প্রস্তুতিতেও একটা সাবধানতা দরকার। বেশি করে মসলা দিয়ে কষিয়ে তেল-চর্বি সহযোগে রান্না উপাদেয় হবে, স্বাস্থ্যকর নয়। তার বদলে গ্রিল করে মাংস খাওয়া যেতে পারে। তাতে চর্বিটা মাংস থেকে সরে যাবে। গ্রিলে চর্বি মাংস থেকে ছেঁকে বের করে দেওয়া হয়। তবে সেটাও পরিমিত। কারণ চর্বি-ছাড়া রেডমিটও তো ক্ষতিকর।

রোগীদের বেলায়ও একই পথ। পরিমিত খাওয়া। শুধু একটুখানি টেস্ট করা। যাদের ডায়াবেটিস আছে, কিডনি ফেইলিওরের রোগী বা প্রেশার যাদের উচ্চ তাদের জন্য রেডমিট বা চর্বিওয়ালা মাংস খুব ক্ষতিকর। কিডনি ফেইলিওরের রোগীদের তো নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রোটিন খেতে হয়। এর বেশি খাওয়া বারণ। ওরা কেবল স্বাদ নেয়ার জন্য খেতে পারেন।

আরও ভালো হয়, ডায়াবেটিস বা কিডনি স্পেশালিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়া। তাহলে যারা মাংস খেতে উৎসাহ দেবেন, তারা অন্তত ডাক্তারের পরামর্শ শুনে আর কিছু বলবেন না।

আজকাল আমরা বলছি, শুধু নিজেরা স্বাস্থ্যসচেতন হলে চলবে না, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও বানাবেন। যার হার্ট ডিজিজ হয়েছে বা ডায়াবেটিস আছে তিনি যেমন ঝুঁকিপূর্ণ- যার এখন এমন কোনও রোগ নেই তার যে কোনওদিন এটা হবে না তা তো বলা যায় না। তাই সাবধান থাকতে হবে পরিবারের সবাইকেই। বেশি-বেশি চর্বি বা ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেয়ে অন্যরা কেন বিপদ ডেকে আনবেন?

সবাই মিলে সহযোগিতার মাধ্যমে এটা করা সম্ভব।

মানতে হবে, আজকাল সব বয়সের সব মানুষের হার্টের অসুখ হচ্ছে। এবারকার হার্ট দিবসের প্রতিপাদ্য তাই ছিল নারী ও শিশুদের হার্টের অসুখ সম্পর্কে সচেতন করা। আগে মনে করা হত, হার্টের অসুখ মূলত পুরুষদের অসুখ। এবং অবশ্যই পরিপূর্ণ বয়সী পুরুষদের। আজকাল উন্নত এমনকী উন্নয়শীল বিশ্বের দেশগুলোতেও যে-হারে নারী ও শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাতে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।

যেহেতু উন্নয়নশীল বিশ্বের নারীরা এখন বেশি হারে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাই তাদের খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতার প্রয়োজন আছে।

নারীদের বেলায় একটা বিষয় হল তারা পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য নিয়ে উৎকণ্ঠিত বা সচেতন হলেও, নিজেদের স্থাস্থ্য নিয়ে তেমন ভাবেন না। ফলে রোগটা গোপনে রয়ে যায়। নারীদের বেলায় লক্ষ্মণগুলোও একটু অন্যরকম। অনেকের দেখা যায় বদহজম হয়। ব্যথা হয় চোয়ালে বা থুতনিতে। মাথা ঝিমঝিম করা বা দুর্বল লাগাটাও অনেকের থাকে।

দেখা যায় ডাক্তাররা বদহজম হলে তার অষুধ দিয়ে দিচ্ছেন। অথচ রোগীর হয়তো ততদিনে ম্যাসিভ বা ইনফেকশন কিছু একটা হয়ে গেছে। সমস্যাটা হচ্ছে ডাক্তাররাও মনে করেন মেয়েদের হার্টের অসুখ হয় না। বিশেষ করে ঋতুমতী নারীদের হার্টের অসুখ কম হয়। ফলে তাদের বেলায় ডাক্তাররা এই ভুলটা করে ফেলেন।

আর এখন তো আমাদের জীবনযাপনের কৌশল, রীতিনীতি বদলে যাচ্ছে। আমরা ক্যালোরিযুক্ত খাবার বেশি খাচ্ছি। বাইরের খাবারের দিকে মনোযোগ বাড়ছে। কাজ করছি অফিসে বসে। ডেস্কে। ব্যায়াম, শরীরচর্চা বা শরীরের কোনও নড়াচড়া নেই। হাঁটাহাটি হয় না। এ সব কারণে বড়দের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক।

ছোটরাও একই কারণে নিরাপদ নয়। ওরা এখন কেবল স্কুল আর কোচিংয়ে দৌড়ায়। বাসার খাবারের চেয়ে বাইরের খাবারের দিকে ঝোঁক বেশি। ফাস্টফুডের ভক্ত হয়ে উঠছে। খেলার জায়গা পায় না ওরা। সারাদিন হয় পড়াশুনা নয়তো সোফায় আধাশোয়া হয়ে টিভি দেখা, কম্পিউটারের সামনে বসে গেম খেলা বা ডিভিডিতে গান শোনা, ছবি দেখা– এই প্রজন্মের শিশুরা বড় হচ্ছে খুব ঝুঁকির মধ্যে।

‘অল ওয়ার্ক অ্যান্ড নো প্লে মেকস জ্যাক আ ডাল বয়’– কথাটা একটু ঘুরিয়ে বললে এটাই যে, শহরের লাইফস্টাইল শিশুদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে।

আজকাল টাইপ-টু ডায়াবেটিসটা তরুণদের খুব বেশি হচ্ছে। আগে এটাকে ভাবা হত বয়স্কদের রোগ। এটি ‘লাইফস্টাইল ডায়াবেটিস।’ ওই একই কারণ। লাইফস্টাইল বদলে যাওয়া। শুয়ে-বসে থাকা, অলস জীবনযাপন।

টাইপ টু ডায়াবেটিস কিন্তু আবার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফাস্টফুড কম খাওয়া, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিস বাড়ানো, চিনি ও উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার কম খাওয়া, শাকসবজি-ফলমূল খাওয়া বাড়ানো, সক্রিয় জীবনযাপন– এ সবই হল সমাধান।

নগরায়ন বাড়ছে। বাড়ছে আয়ু। তাই অসুখ-বিসুখেরও প্রতাপ বেশি। এ সবই তো নন-ক্রনিক ডিজিজ। মানে, কোনওটিই ছোঁয়াচে নয়। সবই লাইফস্টাইল ডিজিজ।

তাই সাবধানতাও বেশি দরকার। কখনও-ই লাগাম ছাড়া যাবে না। এই ঈদেও না। উৎসব করুন। উৎসবেরর আনন্দটা পুরোদমে নিন। ধর্মের রীতি মেনে চলুন। নিজে খান পরিমিত। সবাইকে বলুন পরিমিত খেতে। আর শেয়ার করুন। খাবার এবং আনন্দ দুটোই।

সুস্থ থাকুন এই ঈদে। সব ঈদেই। বিডিনিউজ
ডা. শুভাগত চৌধুরী:চিকিৎসক, অধ্যাপক ও লেখক।

Thursday, October 25, 2012

সুনীল মারা গেছেন শুনে আমি মর্মাহত, আমরা দু'জনেই নাস্তিক এবং দৃঢ়ভাবে বাকস্বাধীনতার পক্ষে-তসলিমা নাসরিন


সুনীলের সঙ্গে আমার অনেক মিল ছিল: তসলিমা


Thu, Oct 25th, 2012 6:57 pm BdST

ঢাকা, অক্টোবর ২৫ - এতো তাড়াতাড়ি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চলে যাবেন তা কখনোই ভাবতে পারেননি তার এক সময়ের বন্ধু বাংলাদেশের লেখক তসলিমা নাসরিন।

সুনীলের মৃত্যুতে ইন্ডিয়া আউটলুক ডটকমকে দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেছেন কিছুদিন আগেই তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা তসলিমা।

ভারতীয় সাময়িকীটির দোলা মিত্রকে টেলিফোনে তসলিমা নাসরিন বলেন

মর্মাহত। এতো তাড়াতাড়ি তিনি মারা যাবেন ভাবিনি। তিনি যা করেছেন সেজন্য আমি তার সমালোচনা করেছি, কিন্তু কখনোই প্রস্তুত ছিলাম না যে এতো দ্রুত তার মৃত্যু হবে। আমি তার লেখা পড়ে বেড়ে উঠেছি এবং লেখক হিসেবে তাকে শ্রদ্ধা করতাম।”

‘নির্বাসিত’ জীবনে বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত তসলিমা গত মাসের শুরুতে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে লেখেন, সুনীল তাকে এবং অন্যান্য তরুণী লেখক ও কবিকে ‘যৌন হয়রানি’ করেছেন। তসলিমার এ অভিযোগ ভারত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়।

নয়াদিল্লিতে তাকে দেখতে আসা কলকাতার এক বন্ধুর মারফত সুনীলের মৃত্যু সংবাদ পান তসলিমা। ওই বন্ধুকে কলকাতা থেকে কেউ ফোন করে এ খবর জানানোর পরপরই টেলিভিশন খুলে বসেন তারা।

তসলিমা জানান, “তার এখনকার ছবি দেখে আমি আঁতকে উঠেছিলাম। আমি বুঝতেই পারিনি উনি এতোটা অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু না, আমাকে তার যৌন হয়রানি করার কথা প্রকাশ করা নিয়ে আমি এতোটুকুও অপরাধ বোধ করিনি।”

“আমাদের দেশে সমস্যা হল কেউ যখন কোনো ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে তখন তাকে এমন এক আসনে বসানো হয় যে, তিনি যেন কোনো ভুল করতে পারেন না। তাকে সন্ত বানিয়ে ফেলা হবে এবং তার বিরুদ্ধে কিছু বলাটা তখন পাপ হয়ে যাবে। আর কেউ যদি সাহস করে সদ্যপ্রয়াত কারো সম্পর্কে সমালোচনা করে বসেন তাহলে মৃত ব্যক্তির অপরাধ যতো বড়ই হোক না কেন সমালোচনার অপরাধের আর কোনো ক্ষমা থাকবে না। যেমন আমি নিশ্চিত আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হবে না।”

খোলামেলা প্রতিক্রিয়া জানালে মানুষ কী ভাববে তা নিয়ে তিনি কখনোই ভীত ছিলেন না জানিয়ে তসলিমা বলেন, “সুনীলের সঙ্গে আমার অনেক মিল ছিল। আমরা দু’জনেই নাস্তিক। বাংলা সহিত্যের প্রতি আমাদের দু’জনেরই ভালোবাসা অনেক। আমার বই নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে তার সমর্থনের আগ পর্যন্ত আমি ভাবতাম আমরা দ’জনেই দৃঢ়ভাবে বাকস্বাধীনতার পক্ষে। তার চরিত্রের এই দুটি কালিমা তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা কমিয়ে দিয়েছে। এমনকি এখনো এটা বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই।”

তসলিমা যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলার পরপরই এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আমি এসবকে একেবারে পাত্তা দিচ্ছি না। ও বহুবার এসব কথা বলেছে। কলকাতায় এসে একেকবার একেকজনের নামে এসব কথা বলেছে। আমি আমার কাজে ব্যস্ত আছি।”

মসলার দাম বাড়ায় অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ


ঈদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রকম মসলার দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের। রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মসলার দাম কেন অস্বাভাবিক বেড়েছে তা জানার চেষ্টা করছি। এর পেছনে যে কারণ রয়েছে তা চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। গত ১৪ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ে এক সভায় ঈদের আগে পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন রকম মসলার দাম না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ব্যবসায়ীরা।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও ব্যবসায়ীদের প্রতিশ্রুতির পরও বাজারে বিভিন্ন রকম মসলার দাম বেড়েই চলছে বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।

মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় ভোক্তা সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকদের এ বিষয়টি জানানো হয়েছে। দাম বৃদ্ধি যদি অযৌক্তিক হয় তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

অক্টোবর মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১০০ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিটেন্স : অতীতের সব রেকর্ড ভাঙবে


ঢাকা, অক্টোবর - চলতি অক্টোবর মাসের ১৯ দিনেই (১৯ অক্টোবর পর্যন্ত) ১০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে, যা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী সাইদুর রহমান সোমবার রাতে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি টাকা পাঠানোয় রেমিটেন্স প্রবাহে এই রেকর্ড হয়েছে।”

একক মাস হিসেবে চলতি অক্টোবর মাসে রেমিটেন্স প্রবাহে অতীতের সব রেকর্ড ভাঙবে বলেও আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা। সাইদুর রহমান জানান, অক্টোবর মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১০০ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে।

এদিকে প্রবাসী আয়ের ওপর ভর করেই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১২শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত ১৮ অক্টোবর রিজার্ভ ১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
এর আগে জানুয়ারিতে ১২২ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে আসে, যা একক মাস হিসাবে রেমিটেন্স আসার ক্ষেত্রে রেকর্ড।

চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ২৫৫ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে। গত ২০১১-১২ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এসেছিল ২৯৬ কোটি ডলার।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ ছাড় বেড়েছে ৩ গুণ- বিডিনিউজ





Thu, Oct 25th, 2012 11:07 am BdST


ঢাকা, অক্টোবর ২৫ - এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে জটিলতা চললেও বিদেশি সাহায্যে এর প্রভাব পড়েনি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ১৮ কোটি (১৮০ মিলিয়ন) ডলারের ঋণের অর্থ ছাড় করেছে বিশ্ব ব্যাংক। অর্থ ছাড়ের এই পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি।

২০১১-১২ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ৬ কোটি ৭৮ লাখ (৬৭৮ মিলিয়ন) ডলারের ঋণ ছাড় করেছিল ওয়াশিংটনভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থা।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান মনে করেন, পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে জটিলতার কারণে সরকার-বিশ্ব ব্যাংক দুপক্ষই বিগত কিছুদিন ধরে সতর্ক রয়েছে। এ কারণেই ঋণ সহায়তায় কোনো প্রভাব পড়েনি।তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ঝুলে থাকার কারণে এ সংস্থার সহায়তা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই আশঙ্কা থেকেই সরকার বিশ্ব ব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পগুলোতে অর্থ ছাড়ের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব ব্যাংকও নতুন কোনো সমালোচনায় জড়াতে চায়নি।”

বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, “পদ্মা সেতুর জটিলতা অন্য প্রকল্পে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে পারেনি। এই সময়ে বাংলাদেশে বিদেশি সহায়তার পরিমাণ বরং আরো বেড়েছে।”

মন্ত্রণালয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২০১১-১২ অর্থবছরে মোট ৫০ কোটি ডলারের অর্থ ছাড় করেছিল বিশ্ব ব্যাংক। যা ছিল আগের বছরের (২০১০-১১) তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।

শুধু বিশ্ব ব্যাংক নয়; বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে এডিবি, জাইকাসহ অন্যান্য দাতাদেশ ও সংস্থার ঋণ-সহায়তাও এবার বেড়েছে।

ইআরডি চলতি অর্থবছরের জুলাই মাস পর্যন্ত বিদেশি ঋণ সহায়তার যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন দাতাদেশ ও সংস্থা মোট ২১ কোটি ৫২ লাখ ডলার ছাড় করেছে।

গত অর্থবছরের একই সময়ে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৬ লাখ ডলার।

২০১১-১২ অর্থবছরে মোট ২০৩ কোটি ৩৩ লাখ ডলার ছাড় করেছিল দাতারা। এর মধ্যে আগের নেয়া ঋণের সুদ-আসল পরিশোধ বাবদ চলে যায় ৭৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ করার জন্য সরকারের হাতে থাকে ১২৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।

আর ২০১০-১১ অর্থবছরে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ১৬৭ কোটি ৪২ লাখ ডলার। সুদ-আসল পরিশোধে ৭২ কোটি ৭৫ লাখ ডলার চলে যাওয়ার পর সরকারের হাতে ছিল ১০৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।

জাহিদ হোসেন বলেন, গত অর্থবছরের প্রথম ভাগে বাংলাদেশে বিদেশি সাহায্যের অর্থ ছাড় কম হলেও শেষ দিকে এসে তা পুষিয়ে যায়। এবার দেখা যাচ্ছে অর্থবছরের শুরুতেই অর্থ ছাড়ের পরিমাণ বেশ ভাল।

“এটা বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে”, বলেন তিনি।

দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ২৯ জুন পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণা দেয় বিশ্ব ব্যাংক। অবশ্য গত বছর সেপ্টেম্বরেই এই ঋণচুক্তি স্থগিত করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সরকারের নানা তৎপরতার পর নতুন কিছু শর্তে এ বছরের ২০ সেপ্টেম্বর পদ্মা প্রকল্পে ফিরে আসার ঘোষণা দেয় বিশ্ব ব্যাংক। এ প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত কীভাবে চলবে এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কীভাবে হবে- তা নিয়ে বর্তমানে সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যে আলোচনা চলছে। বিশ্ব ব্যাংকের একটি পর্যবেক্ষক দল ইতোমধ্যে ঢকায় এসে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে গেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের কৌশল ঠিক করতে বিশ্ব ব্যাংকের দ্বিতীয় প্রতিনিধিদলটি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসবে বলে জানিয়েছেন ইআরডি সচিব ইকবাল মাহমুদ।

Tuesday, October 23, 2012

আলপনা ভালো আছে: আলপনাদের ভালো রাখতে হবে- সুমি খান



আলপনা ভালো আছে। বাংলানিউজে প্রকাশিত কলাম এবং প্রতিবেদন তাকে সুরক্ষা দিয়েছে। আলপনা নেত্রকোনায় তার বাড়িতে পরিবারের সাথে আগের মতোই নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন। স্থানীয় সাংসদ নিজে আলপনাকে বাসায় পৌছে দিয়েছেন। ছাত্রলীগের স্থানীয় ক্যাডাররা ক্ষমা চেয়েছে আলপনার কাছে। আলপনা আমাকে কয়েকটি চিঠি দিয়েছন, মোবাইলে কথা হয়েছে কয়েকবার।আমার প্রতি তার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা তার বিনয়ের প্রকাশ। বলেছেন এখন ভালো আছেন তিনি। দু:খ করে বলেছেন হুমকিদাতা এই ছেলেরা কেউ এলাকার নয়।প্রশ্ন উঠে তাহলে এই ক্যাডারেরা কী করে সুযোগ পায় ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গাতে? তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে প্রশাসন কে। প্রতিটি এলাকায় উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রলীগ ক্যাডারদের শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরী। নাহয় মহাজোট সরকারকে অনেক বড়ো খেসারত দিতে হবে।
১৩ সেপ্টেম্বর আলপনা একটি চিঠি পাঠায় আমাকে। চিঠিটি হুবহু তুলে দেয়া হলো।
" সুমি আপু,
আপনাকে আমার কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।
সত্তের জয় হয় ই হয়। আপনারা আমার পাশে না থাকলে হয়তো সম্ভব ছিল না।
আমি এখন বাসায় এম পি নিজ দায়িত্তে অফিস থেকে নিয়ে এসেছেন।
ছাত্র লীগ দের দিয়ে মাফ চায়্যেছেন
আপনি দীঘ হন ।।
আমি আপ নাকে জিবনেও ভুলতে পারব না।
স শ্রদ্ধ সালাম রইল -আলপনা বেগম"

আমার ভালো লাগছে ভাবতে আলপনা অন্তত এতোটুকু সাপোর্ট প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধির পক্ষ থেকে পেয়েছেন। আমাকে এবং আমার মতো অনেক সংবাদকর্মীদের বার বার যে সাংসদ , জামাত বিএনপি ক্যাডারেরা জামাত-বিএনপি চার দলীয় জোট সরকারের সময়ে হুমকি দিয়েছেন তারা কখনো ভাবতেও পারেননি তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। একাত্তরের ঘাতক-দালাল জামাত –বিএনপির সাংসদ অথবা তাদের এপিএস অথবা ক্যাডারেরা আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন বার বার । সেটাকে অপরাধ মেনে ইহজনমে ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, হুমকির বাস্তবায়ন কবে করবেন সেই অপেক্ষাতেই তারা আছেন।
আমি অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্য বসবাস করি। ল্যাপটপে কারিগরী ত্রুটি তার মধ্যে অন্যতম। আলপনার ভালো থাকার কথা উদ্বিগ্ন পাঠকদের জানানো উচিত ছিল অনেক আগে। পারি নি। এজন্যে প্রিয় পাঠকদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী । অনেকে ফোন করে জানতে চেয়েছেন আলপনা কেমন আছেন এখন। তাদের মধ্যে চ্যানেল আই য়ের জাপান প্রতিনিধি কাজী ইনসানুল হক অন্যতম। মানবতাবাদী এই পাঠক দের সকলের কাছে আমার এবং আলপনার পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
গণতন্ত্র তখনই সফলতার দিকে এগোয়, এ ধরণের হঠকারী রাজনীতিকেরা যখন তাদের অপরাধ মানতে বাধ্য হয়। আলপনার সাথে আমার বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। বাংলানিউজ কতৃপক্ষ এবং এর সাংবাদিকেরা প্রত্যেকে আন্তরিকভাবে আলপনার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এদেশের মিডিয়া ওয়ার্ল্ডে এ দৃষ্টান্ত নিসন্দেহে অভাবনীয় ব্যাপার। অন্যদিকে সময় টেলিভিশনের প্রতিনিধি আলপনার বিপন্ন সময়ে সময় টেলিভিশনের পক্ষ থেকে দায়িত্ব এড়ানো হয়েছে নানান অজুহাতে, যা আমাদের করুণ বাস্তবতা। এ বিষয় গুলো আমাদের ভাবতে হবে। আমার শ্রদ্ধেয় সম্পাদক শাহাদাত চৌধুরী, গোলাম মোর্তোজা, মোহসিউল আদনান ২০০১-২০০৪ সময়ে সাপ্তাহিক ২০০০ এর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি হিসেবে আমার প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়ে নিয়মিত খোজ নিয়েছেন। আমাকে গ্রেফতার করার পর ততকালীন প্রশাসনের সাথে উচ্চপর্যায়ের সাথে তুমুল লড়াই করেছেন। মোর্তোজা ভাই কলাম লিখেছেন। আমি বরাবর সেই দু:সময়ের সহযাত্রী এবং দায়িত্বশীল সহমর্মীদের আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি বারবার।
তাই আমার মতো ক্ষুদ্র এক সংবাদকর্মী এই অপরাধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে যাবো। একই সাথে আমি মনে করি মুখে বড়ো বড়ো কথা বলা যারা বলেন বা লিখেন, তারা আলপনার মতো বিপন্ন সংবাদকর্মীদের পাশে থেকে কিছু দায়িত্ব অন্তত পালন করার চেষ্টা করা জরুরী।
Sumikhan29bdj@gmail.com