Monday, January 5, 2015

একজন সৎ এবং মেধাবী রাজনীতিক কমরেড সুধন দাসের জন্মদিনে কুর্নিশ জানাই-সুমি খান

 
  আমাদের লাল সবুজ পতাকা আর এই সবুজ ঘাসের মাটির পরিচয় যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত-তেমন একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব প্রতিবেশী দেশের বিধায়ক সৎ এবং মেধাবী রাজনীতিক কমরেড সুধন দাস। আজ তাঁর জন্মদিনে অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা!!



মেলাঘর,চোট্টাখোলা,রাজনগর,পালাটানা,বিশ্রামগঞ্জ, বিলোনিয়া...এসব এলাকার এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে বাংলাদেশের শরণার্থীদের পরম আত্মীয়ের মতো স্বাগত জানানো হয়নি।একাত্তরে বাংলাদেশের  মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এবং গেরিলা অভিযান পরিচালনার জন্যও গড়ে উঠেছিল অনেক ক্যাম্প। নতুন প্রজন্মের কাছে সেসব গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরার জন্যে উদ্যোগী হয়েছেন সিপিএম নেতা এবং এলাকার জনপ্রিয়তম জনপ্রতিনিধি কমরেড  সুধন দাস।ইতিহাস সাক্ষী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার অবদান অবিস্মরণীয়।একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর অতিক্রান্ত হলেও ত্রিপুরার মানুষের কাছে সেসব দিনের স্মৃতি এখনও অম্লান। ত্রিপুরা রাজ্যের কোন কোন এলাকার নাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত।
 ১৬ ডিসেম্বর,২০১৩ চোট্টাখোলায় বিধায়ক কমরেড সুধন দাস এবং বন্ধুকবি প্রীতি আচার্য্যের সাথে আমি
 
 মেলাঘর,চোট্টাখোলা,রাজনগর,পালাটানা,বিশ্রামগঞ্জ, বিলোনিয়া...এসব এলাকার এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে বাংলাদেশের শরণার্থীদের পরম আত্মীয়ের মতো স্বাগত জানানো হয়নি।একাত্তরে বাংলাদেশের  মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এবং গেরিলা অভিযান পরিচালনার জন্যও গড়ে উঠেছিল অনেক ক্যাম্প। নতুন প্রজন্মের কাছে সেসব গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরার জন্যে উদ্যোগী হয়েছেন সিপিএম নেতা এবং এলাকার জনপ্রিয়তম জনপ্রতিনিধি কমরেড সুধন দাস।

একাত্তরে কমরেড সুধন দাসের বাবা পরিবারের সকলকে নিয়ে তাদের গোয়ালঘর এবং রান্নাঘরে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের কয়েকটি মুসলিম পরিবারকে তাঁদের থাকার ঘর ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই মুসলিম পরিবারটি ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা হলেও এখনো একাত্তরের আত্মীয়তা বুকে ধারণ করছেন। আর তাই বর্তমানে ত্রিপুরার অন্যতম  সফল বিধায়ক সুধন দাস এবং তাঁর পরিবারের প্রত্যেককে  ঢাকায় আমন্ত্রন করেন তাঁদের পরিবারের মানুষ মনে করে।পারিবারিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রনে সুধন দাস সপরিবারে উপস্থিত হতে না পারলে বাংলাদেশী  মুসলিম আত্মীয় ভীষণ অভিমান করেন। এ যেন সম্প্রীতির বন্ধনের চিরকালীন দৃষ্টান্ত, যা অনেকটা হারিয়ে গেছে।
বিধায়ক সুধন দাসের  মা, স্ত্রী এবং  ছোট্ট দুই মেধাবী কন্যা ভীষণ সমাজ সচেতন এবং জনদরদী।আমার দুর্ভাগ্য, তাঁর মায়ের সাথে দেখা করে তাঁর আশীর্বাদ নিতে পারিনি। তবে শ্রদ্ধেয় বৌদী এবং দুই সুকন্যার সাথে কাটানো মহার্ঘ সময়গুলো অমলিন হয়ে আছে আমার স্মৃতিতে। অবসর হচ্ছে না সেসব নিয়ে বিস্তারিত লিখতে। আজ সুধন'দার জন্মদিনের শুভক্ষণে সামান্য  কিছু স্মৃতিচারণ করলাম।পরবর্তীতে বিস্তারিত লিখবার প্রত্যয় মনে গেঁথে রাখলাম।
চোট্টাখোলা মুক্তিযুদ্ধ পার্ক এমনই অসাধারণ উদ্যোগ।এখানে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাস্কর্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ, লালবাগ কেল্লা সহ নানান দর্শনীয় স্থানের নিদর্শনের রেপ্লিকার পাশাপাশি ভারতের দর্শনীয় স্থানের রেপ্লিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে এই পার্কে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। একাত্তরে ২ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক খালেদ মোশাররফের কন্যা, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ এ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি স্মৃতিসৌধও নির্মিত হচ্ছে।
একাত্তরে ত্রিপুরায় লোকসংখ্যার চেয়ে বেশি ছিল বাংলাদেশের শরণার্থীএমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে বাংলাদেশের শরণার্থীদের পরম আত্মীয়ের মতো স্বাগত জানানো হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এবং গেরিলা অভিযান পরিচালনার জন্যেও গড়ে উঠেছিল অনেক ক্যাম্প। ত্রিপুরার নতুন প্রজন্মের কাছে এগুলো তুলে ধরার জন্য অনেক আয়োজন রয়েছে। চোট্টাখোলা মুক্তিযুদ্ধ পার্ক হচ্ছে এমনই একটি উদ্যোগ। করেন।সেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।একটি স্মৃতিসৌধও নির্মিত হচ্ছে।২০১৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সেখানে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। আমি সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলো বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সাথে সাথে। একাত্তরে জন্ম না নিয়েও যেন একাত্তরের সেই রক্তঝরা যুদ্ধের দিনগুলো দেখতে পাচ্ছিলাম...... দু'চোখ ভরে উঠলো জলে! সে কী অসাধারণ অনুভূতি তা কখনো ভুলবার নয়;বলে বোঝানোর মতোও নয়।মনে মনে ভাবলাম, যুগে যুগে কালে কালে এই মানুষগুলোর কাছে আমরা ঋণী হয়েই রইলাম। 
সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর একাত্তরে ২ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক খালেদ মোশাররফের কন্যা, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ এ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ  আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী কমরেড মানিক সরকার এই মুক্তিযুদ্ধ পার্কের উদ্বোধন করবেন।এই পুরো কাজে রাজনগর এলাকার পরপর চারবারের নির্বাচিত বিধায়ক সুধন দাস প্রধান ভূমিকা পালন করছেন। বাবরী মসজিদ নিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রতিবাদে সুধন দাস রাজনগরে শতবছরের প্রাচীন মসজিদ পুনরুদ্ধার করে প্রতিবছর সেখানে অসাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান উদযাপন করেন।হরতালের মধ্যে আমাকে আমন্ত্রন জানানো তে অনেক সতর্কতার মধ্যে বিলোনিয়া সীমান্ত পার করালেন কমরেড সুধন দাস।সীমান্ত থেকে আমাকে বরণ করে নিজের বাড়িতে রেখেছিলেন কবি সমরজিৎ সিনহা এবং তাঁর  গুণী স্ত্রী প্রীতি আচার্য্য!
দেশে ফিরবার সময়ে অনেক মিষ্টি কিনে দিলেন কমরেড সুধন দাস। তাতেই শেষ নয়, অবাক বিস্ময়ে দেখলাম সীমান্ত পেরিয়ে বিএস এফ এবংবিজিবি সদস্যদের  ও বিধায়ক মহোদয় নিজের হাতে মিষ্টি বিলালেন! এঁরাই কমরেড! এঁরাই গণমানুষের নেতা!দিনে বাংলাদেশের  পবিত্র মাটি থেকে অতি সাধারণ এক নাগরিক আমি  বিনম্র শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।