Friday, October 24, 2014

যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড -সাব্বির রহমান

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ে যুদ্ধাপরাধী এবং জামায়াত ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমকে (৯২) ৯০ বছরের  কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। জাতি তার ফাঁসির দাবি করলেও আদালত তার বার্ধক্যজনিত কারনে বিশেষ অনুকম্পা দেখিয়ে ফাঁসি না দিয়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। আজ তা কার্যকর হলো। মানুষের জন্ম যখন হয়, তখন মৃত্যুটা একটা অবধারিত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু হতে হয় দৃষ্টান্তমূলক, যা গোলাম আযমের বেলায় হলো না। এজন্য আমরা দুঃখিত।

    শান্তি কমিটি নামে হলেও একাত্তরের নয় মাস এরা জাহান্নামের হেন অত্যাচার নাই যা বাঙালিদের ওপরে করেনি। শুধু শান্তি কমিটিই নয়, বাঙালিদের হত্যা করতে সশস্ত্র রাজাকার বাহিনী গঠনের উদ্যোক্তা এবং প্রস্তাবক ছিলেন গোলাম আযম।

একাত্তরে ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার ১০ দিনের মধ্যে অন্যান্য ডানপন্থী রাজনীতিকদের সঙ্গে এক হয়ে গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক ও গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার দুইদিন পরে গোলাম আযম আলাদাভাবে টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে ফিরে আসার কয়েকদিনের মধ্যে শান্তিবাহিনী গঠন করেছিলেন।

শান্তি কমিটি নামে হলেও একাত্তরের নয় মাস হেন অত্যাচার নাই যা বাঙালিদের ওপরে এরা করেনি। সে বছর ৯ এপ্রিল প্রথমে ঢাকায় খাজা খয়ের উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ১৪০ সদস্যের নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যেখানে গোলাম আযম ছিলেন অন্যতম। পরে এই কমিটির নতুন নাম দেওয়া হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি।

    আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সম্মেলনে গোলাম আযম বলেছিলেন, ‘হিন্দুরা মুসলমানদের শত্রু। তারা সবসময় পাকিস্তানকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে।‘ শুধু শান্তি কমিটিই নয়, বাঙালিদের হত্যা করতে সশস্ত্র রাজাকার বাহিনী গঠনের উদ্যোক্তা এবং প্রস্তাবক ছিলেন গোলাম আযম।

একাত্তরে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক গোপন দলিলে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ৪ আগস্ট খুলনা জেলা জামায়াতের এক সভায় গোলাম আযম তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আখ্যা দিয়েছিলেন। অনুরূপ অন্য এক গোপন দলিলে দেখা গেছে যে, আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সম্মেলনে গোলাম আযম বলেছিলেন, ‘হিন্দুরা মুসলমানদের শত্রু। তারা সবসময় পাকিস্তানকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে।‘

ওই সম্মেলনে গোলাম আযম প্রতি গ্রামে শান্তি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা নামের দুষ্কৃতকারীদের নির্মূল করতে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় জুড়েই গোলাম আযম ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সরলমনা মুসলমানদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করেন হিন্দু সম্প্রদায় ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে।

একটি ঘটনা বলি, ২৩ নভেম্বর ছিল ঈদ। পরদিন কামালের ফেরার কথা। ফেরে না কামাল। ২১ তারিখ সন্ধ্যায় তিতাসের পাড়ে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে মারা হয় সিরু মিয়া ও তার ছেলে কামালকে। ঈদের পরদিন ফজলু কুমিল্লা জেলখানায় কামালকে আনতে যান। সেখানে সিরু মিয়া ও কামালের জামা কাপড় তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। গোলাম আযম তার লেখা চিঠিতে এমন করারই নির্দেশনাই দিয়েছিলেন।

    ইতিপূর্বে কাদের মোল্লার বিচারের রায় ঘোষণার পরেও বিভিন্ন আঁতাতের অভিযোগ উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। সরকারের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। আর তখন থেকেই ফুঁসে উঠেছিল সারা দেশ। গড়ে উঠেছিল গণজাগরণ মঞ্চ।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী, উসকানিদাতা এবং রাজাকার, আলবদর, আলশামসের মতো প্যারামিলিটারি গড়ার মূল কারিগর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে পাঁচ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। রায়ে বলা হয়েছে, গোলাম আযমকে ৯০ বছর অথবা আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল যে, “ন্যায়বিচারের স্বার্থে এবং স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি বিবেচনায় গোলাম আযমের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই প্রাপ্য। কিন্তু তার বয়স ৯১ বছর ও শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থ।” গোলাম আযমের বিরুদ্ধে এ রায় ঘোষণার পর সারা জাতি ক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় বয়ে যায় দেশজুড়ে। মুক্তিযোদ্ধা, গবেষক, বিশিষ্টজনসহ অনেক সাধারণ মানুষও সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিল প্রতিবাদে, ক্ষোভে আর অন্তর জ্বালায়।

ইতিপূর্বে কাদের মোল্লার বিচারের রায় ঘোষণার পরেও বিভিন্ন আঁতাতের অভিযোগ উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। সরকারের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। আর তখন থেকেই ফুঁসে উঠেছিল সারা দেশ। গড়ে উঠেছিল গণজাগরণ মঞ্চ। যদিও সেই মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষের নানা দুর্বলতার চিত্র তুলে ধরে বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকাগুলো ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাচ্ছিল।

     গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু বয়সের কথা বলে এমন জঘন্য অপরাধীর সাজা কমানো কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না বলে মত প্রকাশ করেছিলেন একাধিক আইনবিশেষজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ।

দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর আপিলের রায়েও সারা জাতি হয়েছিল ক্ষুব্ধ। ট্রাইব্যুনালের দুর্বলতা এবং আঁতাতের চিত্রগুলো যেন আরও অনেক বেশি পরিস্কার হয়েছিল জাতির কাছে। সেই থেকে ট্রাইবুনালকে ঘিরে এক ধরনের স্থবিরতা চলছিল। আইনমন্ত্রীর অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং কাজ জাতিকে বর্তমানে বিরক্তির শেষ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে বলা যায়।

 গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু বয়সের কথা বলে এমন জঘন্য অপরাধীর সাজা কমানো কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না বলে মত প্রকাশ করেছিলেন একাধিক আইনবিশেষজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ।

স্বাধীন ক্রোয়েশিয়া রাষ্ট্রের প্রথম বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আন্দ্রিইয়া আরতুকভিচকেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল ১৯৮৬ সালে, যখন তার বয়স ছিল ৮৭ বছর। শুধু তাই নয়, আরতুকভিচের স্বাস্থ্য তখন এতটাই খারাপ ছিল যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও, তা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছিল না। যেই অনুকম্পার ক্ষমতা শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতিকে দেয়া হয়েছে সাংবিধানিক ভাবে, সেই অনুকম্পা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কীভাবে, কোন আইনের বলে ব্যবহার করতে পারে, তাও ছিল জনমনে এক বিশাল প্রশ্ন।

মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে অবশেষে ১৯৮৮ সালের ১৬ জানুয়ারি আন্দ্রিইয়া কারা হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে গোলাম আযম শুধুই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেলেন, যদিও আদালতে তার বিরুদ্ধে দেওয়া সব অভিযোগই প্রমাণ হয়েছিল।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা কারাগারে শাহী হালে আছেন। গোলাম আযম তো গ্রেফতারের পর থেকেই দেশের সেরা হাসপাতালে সেরা ব্যবস্থাপনায় সাততারা হোটেলের আদর যত্নে ছিলেন মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। এমন কি তার ক্লিনিক্যাল মৃত্যু হলেও, নল-পাইপ লাগিয়ে তাকে নাকি বাঁচিয়ে রেখেছিল কিছু সময় পর্যন্ত। কারাবিধি লঙ্ঘন করে গোলাম আযমকে বঙ্গবন্ধু হাসপাতালের বিশেষ কক্ষে রাখা হয়েছিল। বাড়ি থেকে নিয়মবহির্ভূত ভাবে তিন বেলার খাবারও তিনি উপভোগ করে গিয়েছিলেন। ১৬টি দৈনিক পত্রিকাও বরাদ্দ ছিল এই যুদ্ধাপরাধীর জন্য। সৌদি বাদশা ও আইএসআইয়ের কল্যানে জামায়াত নেতাদের বিলাস জীবনের কোনও কমতি বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে রাখা হয়নি। বরং তা ক্ষেত্র বিশেষে মাত্রাও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

    মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে অবশেষে ১৯৮৮ সালের ১৬ জানুয়ারি আন্দ্রিইয়া কারা হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে গোলাম আযম শুধুই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেলেন, যদিও আদালতে তার বিরুদ্ধে দেওয়া সব অভিযোগই প্রমাণ হয়েছিল।

নিজ বাড়িতে থেকে একাত্তরের এই নরপশু যে ভোগবিলাসের স্বপ্নও দেখতে পারতেন না, কারাবাসের কল্যাণে তা পূরণ করে বহাল তবিয়তেই পরপারে গমন করলেন। কি ভাগ্য মানুষের! কিন্তু জাতি আজীবন লুকানো দীর্ঘশ্বাস চিরে জানতে চাইবে, কার বা কাদের নির্দেশে ’৭১ এর এই শীর্ষ গণহত্যাকারী ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীর জন্য এতো আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল? পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তা-ঘাটে না খেয়ে, বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। এ সবই কি বিধাতার রহমত? না-কি এই অভাগা জাতির দুর্ভাগ্য?

লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক
ইমেইল:sabbir.rahman@gmail.com

গোলাম আযমের বক্তব্য-বিবৃতিতে ‘যুদ্ধাপরাধের’ ছক

Wednesday, October 22, 2014

অভ্র সেরে উঠবে বলে আত্মবশ্বিাসী দেশের শীর্ষ চার চিকিৎসক -সুমি খান



 ২২ সেপ্টেম্বর ,২০১৪ বুধবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিট।  আমি যেন হাওয়ায় উড়ছি। অভ্র’র কপালে একটা ছোট্ট চুমু দিলাম । অভ্র এখন অনেক ভালো ।   আরো অনেকটা সেরে উঠবে- আমায় আত্মবিশ্বাসী করে দিলো মেডিক্যাল বোর্ড ।

মেধাবী ক্রীড়াবিদ অভ্র’র হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস এবং টিউবারকিউলোসিস (টিবি) বা যক্ষা জটিল হয়ে গেছে। হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস ক্রনিক লিভার ডিজিজ এর কারণে লিভার এনলার্জ হয়ে গেছে। লিভারের এই পরিবর্তন অনেকটা স্থায়ী হয়ে গেছে বললেন লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সেলিমুর রহমান।  লিভার এর জটিলতার কারণে ফুসফুসে পানি আসতে পারে এমন সন্দেহ অধ্যাপক এ বিএম আব্দুল্লাহর । এর সাথে একমত হয়েছেন বোর্ডের অন্য তিন সদস্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা ।  চট্টগ্রাম এবং কোলকাতায় টিবি ‘র ওষুধ দেয়া হয়েছে, কোলোনোস্কপি করা হয়েছে। সেসব ওষুধ  এতোদিন কাজ করছিলো না।  হেপাটাইটিস বি’ আক্রান্ত লিভারের জন্যে সেসব ওষুধ ক্ষতির কারণ হতে পারে আশঙ্কায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিবি’র ওষুধ বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে অভ্র’র শরীরে  টিবি কোন্ অবস্থায় আছে ,সেটা পরীক্ষা করা হবে । এর পর  টিবি’র জন্যে কোন  ওষুধ দেয়া হবে কিনা ভাবতে হবে।  কারণ, লিভারের সমস্যার কারণে  অভ্র সব রকমের ওষুধ সইতে পারবে না। তার সহনশীলতা অনুযায়ী ভেবে চিন্তে ওষুধ নির্দারণ করতে হচ্ছে । গত কয়েকদিন আগে প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত অভ্র‘র জ্বর কমানোর জন্যে প্রফেসর এ বি এম আব্দুল্লাহ ম্যালেরিয়ার ওষুধ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে ডা. সেলিমুর রহমান বলেন , তিনি অত্যন্ত মেধাবী চিকিৎসক। তিনি ছাড়া কেউ এই ওষুধ দেবার কথা ভাবতে পারতেন না। তাঁর পরামর্শে ম্যালেরিয়ার ওষুধ দেয়াতে অভ্র এখন অনেক সু¯থ বললেন অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান  । সেরেব্রাল থ্রম্বসিস সারাতে কার্ডিনেক্স গ্রুপের ওষুধ দেয়া হয়েছে।  এই ওষুধ চলবে। এতে  অভ্র’র ব্রেনে জমাট বাঁধা রক্ত তরল হয়ে যাবে ধীরে ধীরে ।   যথাযথ ওষুধ এবং চিকিৎসা পেলে  সকল সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে অভ্র সুস্থ অনুভব করবে এবং স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরে আসবে বলে প্রচন্ড আশাবাদী মেডিক্যাল বোর্ড ।

অভ্রজ্যোতি মজুমদার কে সিসিইউ থেকে বের করে দেবার জন্যে চরম দুর্ব্যাবহার করতে থাকেন সিসিইউ’র চিকিৎসক, নার্স সবাই। অতীষ্ঠ এবং অসহায় হয়ে ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ প্রান্ত থেকে এ প্রান্ত ছুটতে থাকি। ভাইস চ্যান্সেলর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত মিটিংয়ে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও তাঁর দেকা পেলাম না। তাঁর পিএস সালাউদ্দিন বাইকে ঘিরে ধরেছেন অনেক লোক। সবার কথা শুনতে হবে। একের পর এক ফোন করে তিনি তাদের রোগীদের ব্যবস্থা করছেন। এক ফাঁকে আমার সাথেও কথা বললেন । বললাম কেবিনে নেবার কথা। সালাউদ্দিন ভাই বললেন , কেবিন কালি না থাকলে নিয়ম অনুযাযী যেখানে আছে সেখানেই থাকবে অভ্র। বললাম, কিন্তু সিসিইউ’র ডাক্তার –নার্স কেউ তো অভ্যকে এক মুহ’র্তের জন্যেও রাখতে চাইছে না। একটু কথা বলেন কেবিনের জন্যে, প্লীজ। “ কেবিনের দায়িত্বে থাকা ডা. আফরোজার সাথে সালাউদ্দিন ভাই বিনয়ের সাথে বললেন অভ্য’র জন্যে একটি কেবিনের ব্যবস্থা করতে । এর আগের দিন সকাল থেকে আমি আফরোজা আপার সাথে অনেকবার কথা বলেছি অভ্র’র কেবিনের জন্যে। তিনি আমাকে  কথা দিয়েছেন খালি হলেই ব্যবস্থা করবেন। এর আগের দিন একটি ভিআইপি কেবিন খালি ছিল। একজন বিচারকের স্ত্রী’র জন্যে সেটা কনফার্ম করা হয়ে গেছে।  কিন্তু সিসিইউ’র ডা. তোফাজ্জল এবং কয়েকজন নার্স বয়ংকর দুব্যাবহার করছেন অভ্র এবং তার মা মমতা মজুমদারের সাথে। ডা. তোফায়েল বললেন ,“ আপনি কারো বাসায় বেড়াতে গেলে , তারা অপছন্দ করলে কী করবেন?” অভ্র’র মা নিরীহ ভাবে জবাব দিলেন ,“চলে আসবো ।” ডা. তোফায়েল বললেন, এখানেও আপনাদের কেউ পছন্দ করছে না। চলে যান। “ মমতা ‘দি অসহায় ভাবে আমাকে বারবকার বললেন যেন ব্যবস্থা করি। কিন্তু  হাসপাতালের কোথাও তো বেড নেই, কেবিন ও খালি হয়নি। আমি কোথায় নেবো? কোথায় যাবো অভ্রকে নিয়ে? দুপুরে অভ্র’র ফাইল নিয়ে ছুটে যাই পরিচালকের কক্ষে। বিস্তারিত আগেই বলেছিলাম তাকে। তিনি বললেন “টিবি রোগীকে কী করে সিসিইউ তে রাখবো আমরা? এটা একটা এথিক্যাল ক্রাইম।” আমি মরিয়া হয়ে বললাম, “আমি  আপনাদের অনুনয় বিনয় করে ভর্তি করেছি দেশের মেধাবী সন্তান  অভ্রকে বাঁচাতে । এই ‘ক্রাইম’ এর দায় আমি  মাথা পেতে নিলাম। কিন্তু , স্যার, মানবিক দৃষ্টিতে বলেন, আপনারা কি তাহলে অভ্রকে রাস্তায় ছঁড়ে ফেলবেন? ফাইল টা একটু দেখে তার শারীরিক অবস্থা জেনে বলেন ।“  পরিচালক বললেন,“ আসলে তাকে আইসোলেটেড কক্ষে রাখা উচিত।  তবে যেদিন ভর্তি হয়েছে, তার পরদিন ই তার জন্যে  সিসিইউ থেকেই মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা উচিত ছিল। এটা আপনার উদ্যোগ নেয়ার কথা না। ” আরো অনেক গল্প  জমা রয়েছে।

তবে আশার কথা হলো ,অবশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছেন হাসপাতালের পরিচালক আবদুল মজিদ ভুইয়া।   এই বোর্ডের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রফেসর এ বি এম আব্দুল্লাহ, ডীন, মেডিসিন বিভাগ
সদস্য ১. অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান  হেপাটোলজি বিভাগ, ২. অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুর রহমান রেসপারেটরি মেডিসিন বিভাগ, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, নিউরোলজি বিভাগ ।

Tuesday, October 21, 2014

মৃত্যুর পরেও রয়ে যায় জীবন:জার্মান গবেষকদের দাবি

মৃত্যুর পরেও রয়ে যায় জীবনের কিছু পর্যায়! জার্মানির কিছু মনোবৈজ্ঞানিক ও ডাক্তার ডঃ অ্যাকেরম্যান ও তাঁর দলদের একটি দল এমনটাই দাবি করেছেন। বার্লিনের Technische বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষকদের দাবি ক্লিনিকাল বিবিধ পরীক্ষার মাধ্যমেই নাকি তাঁরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
'প্রায়-মৃত্যুর অভিজ্ঞতা' এই নতুন মেডিক্যাল পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। এই পরীক্ষায় প্রায় ২০ মিনিট কোনও রোগীকে ক্লিনিকালি মৃত অবস্থায় রেখে ফের জীবদ্দশায় ফিরিয়ে আনা যায়।
গত চার বছর ধরে ৯৪৪ জন বিতর্কিত এই পদ্ধটি নিজেদের উপর প্রয়োগ করতে রাজি হয়েছেন। তাঁদের উপরই পরীক্ষা চালিয়েছেন জার্মান গবেষকরা। epinephrine ও dimethyltryptamine একটি মিশ্রণ প্রয়োগ করে রোগীদের ক্লিনিকাল মৃত অবস্থায় নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। যদিও এর পর ফের জীবদ্দশায় ফিরে এসে পরীক্ষাধীন ব্যক্তিদের শরীরে কোনও ক্ষতিই হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অটোপালস নামক cardiopulmonary recitation (CPR) মেশিনের সহয়তায় পরীক্ষাধীন ক্লিনিকালি মৃত ব্যক্তিদের পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে।
এর আগে প্রায়-মৃত্যু অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত বহু হাইপোথিসিস প্রকাশ পেয়েছে বিবিধ মেডিক্যাল জার্নালে।কিন্তু ডঃ অ্যাকেরম্যান ও তাঁর দল মৃত্যুর পরের জীবনের অস্তিত্বকে মন ও শরীরের মধ্যেকার দ্বৈতবাদ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
এই গবেষণায় পরীক্ষাধীন ব্যক্তিদের ক্লিনিকাল ডেথ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। সামান্য ক্ষেত্রেই সেই অভিজ্ঞতায় মিল পাওয়া গিয়েছে। অনেকে জানিয়েছেন তাঁদের মনে হয়েছে শরীর থেকে তারা ভিন্ন হয়ে গেছেন। নিজেদেরকে হালকা, নিরাপদ মনে করেছেন অনেকে। কেউ কেউ জানিয়েছেন প্রশান্ত এক আলোর সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা।