Tuesday, July 31, 2012

মালয়েশিয়ার অর্থায়নে পদ্মাসেতু:অক্টোবরে প্রকল্প উদ্বোধন



আগস্টে চূড়ান্ত প্রস্তাব, সেপ্টেম্বরে চুক্তি সই 

ঢাকা: মালয়েশিয়ার অর্থায়নে পদ্মাসেতু প্রকল্পের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে এ বছরের অক্টোবরে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগ দিতে ঢাকা আসবেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি মোহাম্মদ নাজিব আবদুল রাজাক।
পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন নিয়ে গত এপ্রিলে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ বা পিপিপি’র অধীনে পদ্মাসেতু নির্মাণ নিয়ে সম্ভাব্য চুক্তি স্বাক্ষরের পথে এখন দুই দেশ। 

 সেপ্টেম্বরে দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে। পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত করতে আগামী ৪ আগস্ট ঢাকায় আসছে মালয়েশিয়ার একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
আগামী ৪ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে প্রতিনিধি দলটি পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়ার সম্ভাব্য অর্থায়নের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবে। ওই প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেবেন মালয়েশিয়ার ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত দাতুক সেরি এস সামি ভেলু।প্রতিনিধি দলটি পদ্মা সেতুর প্রকল্পস্থলও পরিদর্শন করবে ।

পদ্মাসেতু প্রকল্পের বিভিন্ন কারিগরি ও আর্থিক বিষয়েও মালয়েশিয়া  নিজেদের পর্যালোচনা সম্পন্ন করে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। পদ্মাসেতু প্রকল্পে অংশগ্রহণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সকল প্রাথমিক প্রস্তুতি মালয়েশিয়া সম্পন্ন করেছে বলেও উল্লেখ করেছে সূত্রটি। মালয়েশিয় প্রতিনিধি দলের এবারের ঢাকা সফরেই বিষয়টি একটি চূড়ান্ত রূপ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত মাস কয়েক আগে মালয়েশিয় বিশেষ দূত দাতুক সেরি এস সামি ভেলু’র নেতৃত্বে  অপর একটি প্রতিনিধি দল সেতু সংক্রান্ত বিষয়ে ঢাকা সফর করে।এবার যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিনিধি দলটি প্রকল্পের সার্বিক দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে।

পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন ও অংশগ্রহণের ব্যাপারে মালয়েশিয়া আগে থেকেই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে আসছে। ঢাকার সবুজ সংকেত পেলে এ সফরেই পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বিষয়ে প্রস্তাবের একটি চূড়ান্ত খসড়া তুলে ধরা হবে । তবে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় গত কয়েকদিন ধরে পদ্মাসেতু নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে পরস্পর বিপরীতমুখী তথ্য উপস্থাপিত হওয়ায় মালয়েশিয় পক্ষ কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে বলে সূত্র জানায়। 
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরণের বিশাল নির্মাণযজ্ঞের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে এমন প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে কোনো একটি মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাবে। তবে  কোন প্রতিষ্ঠানকে মালয়েশিয় সরকার কাজটি দিতে যাচ্ছে তা জানা যায়নি। এর আগে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সময় বিষয়টি নিয়ে মালয়েশিয় প্রধানমন্ত্রী দাতু সেরি নাজিব আবদুল রাজাক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এসময় মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
 নির্মাণ প্রকল্প সংক্রান্ত মালয়েশীয় প্রস্তাব এর আগে দুই দফা সংশোধন করা হয়েছে। তবে চূড়ান্তভাবে সংশোধিত প্রস্তাবে উভয় পক্ষেরই সমান লাভবান হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। 
 প্রকল্পের সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় গত ২০১০ এ প্রাক্কলিত ২৯০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে বর্তমানে ৩৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ নির্মাণ ব্যয়ের মধ্যে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার সম্ভাব্য অবমুল্যায়ন এবং নির্মাণ সামগ্রীর সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।