Sunday, February 16, 2014

পাকিস্তানীদের জন্য বিএনপি-জামায়াতকে আর কত কাজ করতে হবে? -মুনতাসীর মামুন


খালেদা জিয়া ইজ নাউ লুকিং ফর শত্রুজ। তাঁর কুখ্যাত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবর সবসময় শত্রুর খোঁজ করতেন, বলতেন লুকিং ফর শত্রুজ। এই শত্রু কারা? জঙ্গী শাইখ আবদুর রহমান, মুফতি হান্নান বা বাংলাভাই নয়। স্মাগলার, সন্ত্রাসীরা নয়। তাঁর শত্রু ছিল আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজন এবং হিন্দুস্তান। তাঁর শত্রু মানে দেশেরও শত্রু। তারেক জিয়া ছিলেন তাঁর ইমিডিয়েট বস আর সবার ওপরে ম্যাডাম তো ছিলেনই। ম্যাডামের স্নেহের পাত্র ছিলেন তিনি। না হলে রাস্তা থেকে তুলে এনে কাউকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বানানো হয় না। তার ওপর একজন মন্ত্রী ছিলেন বটে, যদ্দুর মনে পড়ে তাঁর নাম বায়ু সেনা আলতাফ হোসেন। কিন্তু বায়ু সেনার খুব একটা ক্ষমতাটমতা ছিল না।
শত্রু খুঁজতে গিয়ে বাবর প্রথম টার্গেট করেছিলেন হিন্দুস্তানকে। সে জন্য উলফার জন্য ১০ ট্রাক অস্ত্র এনেছিলেন। এরপরও কিন্তু এক ট্রাক গুলি ধরা পড়েছিল যার কথা সবাই ভুলে গেছেন। অনেকে আরও ভুলে গেছেন যে, ম্যাডাম ওরফে উস্কানি বেগম বলেছিলেন, উলফারা দেশপ্রেমী, নিজের দেশের জন্য লড়াই করছে। অর্থাৎ উলফাদের সাহায্য করা ফরজ। আর পাকিস্তান মিজোদের দীর্ঘদিন সাহায্য করছে না! সুতরাং, সেই ধারাবাহিকতায় উলফাদের সাহায্য করা যাবে না কেন?
এবার আসা যাক যুক্তির কথায়। ধরা যাক, উস্কানি বেগমের যুক্তি ঠিক [হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে এই ভাবে উস্কানিমূলক কথাবার্তায় তিনি দক্ষ। তাঁর ক্যাডার-টকাররা খুব আবেগ ভরে একটি যুক্তি দেন মজেনার মতো, কেন, ভারত কি শান্তি বাহিনীকে অস্ত্র দেয়নি? ধরে নিলাম দিয়েছে। কিন্তু তফাতটা হলো, এই সশস্ত্র শান্তি বাহিনীকে দেশের শত্রু মনে করে সামরিক বাহিনী দীর্ঘ দুই দশক লড়াই করেছে। সিভিল প্রশাসনও তাদের বন্ধু মনে করেনি। জিয়াউর রহমান কৌশলে শান্তি বাহিনী তৈরিতে ইন্ধন যুগিয়েছিলেন যাতে তৎকালীন পাকিস্তানমনা সেনাবাহিনীর যৌক্তিকতা দেয়া যায়। শেখ হাসিনা অস্ত্রের ঝনঝনানি থামিয়ে ছিলেন। এতে সেনা কর্মকর্তারা নাখোশ হয়। কারণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল সোনার খনি। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ উপাধিগুলো আদিবাসী দলনের পুরস্কার হিসেবে বিতরণ করা হয় যাতে মুক্তিযুদ্ধের উপাধির সম্মান ও যৌক্তিকতা হ্রাস হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ২০০১-এর নির্বাচনে সেনাবাহিনী সমস্ত নিয়মনীতি ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ভোটারদের পিটিয়ে লম্বা করে দেয়, যাতে উস্কানিদাতারা ক্ষমতায় আসে। কিন্তু, ১৯৯৬ সালের পর শান্তি বাহিনী আর কোন সমর্থন পায়নি ভারতের কাছে। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি একই ধরনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি বিএনপি-জামায়াত। সমস্যাটা সেখানে। ভারত যদি যুক্তি দেয়, আদিবাসীরা তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে তাদের সাহায্য করা পবিত্র দায়িত্ব যেটি পালন করেছি আমরা ১৯৭১ সালে, তাহলে টকাররা তা মেনে নেবেন?
বাবরের বসদের কাছে সবচেয়ে বড় শত্রু ছিল শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ। গ্রেনেড হামলায় তাদের সবাইকে নিকেশ করার পরিকল্পনা এঁটেছিলেন তারেক জিয়ার নেতৃত্বে বাবর ও অন্যরা। এ খবরটি জানাজানি হলো কিভাবে? মুফতি হান্নান ও অন্যরা এই সংবাদটি দেয়নি। শাহরিয়ার কবির তাঁর একটি ডকুমেন্টারির জন্য যে ভাবেই হোক হান্নানের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন। হান্নান জানান, দেখেন স্যার সবাই আমাকে নিয়ে শুধু টানাটানি করছে, এর পরিকল্পনা তো করেন তারেক জিয়া। তারপর গড়গড় করে হান্নান সব ফাঁস করে দেন। তদন্ত কর্মকর্তা তখনই হান্নানকে ধমক দিয়ে সরিয়ে দেন। তিনি নাকি বলেছিলেন, আমাদের চাকরি করতে হবে না। আওয়ামী লীগের পর বিএনপি এলে কী হবে? শাহরিয়ার ডকুমেন্টারিটি তৈরি করেন। কয়েকজনকে তা দেখতে দেন। তাঁর মধ্যে শেখ হাসিনার খুব ঘনিষ্ঠ একজন উপদেষ্টা ছিলেন। কয়েকজন আশা করেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাবেন। তিনি জানিয়েছিলেন কিনা, জানি না। তবে, দীর্ঘদিন কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে শাহরিয়ার চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন করলে মিডিয়া ব্যাপক প্রচার করে এবং সরকার বাধ্য হয় তারেক জিয়ার নাম চার্জশীটে অন্তর্ভুক্ত করতে। জানি না, সরকারের তারেকভক্তরা হয়ত চাননি বিষয়টি জানাজানি হোক। এই কারণে, প্রথম অভিযোগে বোধহয় তারেক জিয়ার নাম ছিল না। যা হোক, এ পরিপ্রেক্ষিতে বাবর শত্রু লুক করতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছেন ভারতকে। তিনি বলেছেন ‘এ রায় ভারতের কারণে।’ (কালের কণ্ঠ ১.২.১৪)
আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রতিযোগী বা প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, স্রেফ শত্রু। এই শত্রু নিধনে ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা ও নিজামীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে নরকের সৃষ্টি করেছিল। একজন মহিলা স্বামী হত্যার বিচার না চাইতে পারেন নানা কারণে। সেটি আমি নিষ্ঠুরতা বলব না। কিন্তু খালেদা জিয়া ২০০১-০৬ সালে একজন মহিলা হয়ে যে নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছেন, বাকি দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও রওশন এরশাদ তা দেখাতে পারেননি। পারবেন কিনা সন্দেহে, এ নিষ্ঠুরতার মিল আছে তার স্বামীর কায়কারবারের সঙ্গে। কত পরিবার যে ছন্নছাড়া হয়ে গেছে, কত মেয়ের জীবন যে বরবাদ হয়েছে খালেদার আমলে তা বলার বাইরে। এ কারণে, খোদার গজব বলে যদি কিছু থাকে তবে তা বর্তেছে তার দুই পুত্রের ওপর। সে প্রসঙ্গ পরে।
দশ ট্রাক অস্ত্র যখন ধরা পড়ে তখন খালেদাকে তা জানানো হয় গোয়েন্দা সংস্থা থেকে, সচিব পর্যায়েও। তিনি নিশ্চুপ থাকেন। এর অর্থ, তাঁর ইঙ্গিতেই এ ধরনের কাজ হয়েছে। ভাবা যায়! বিএনপির ফিমেল টকার, সুশীল বাটপাড় টকাররা টিভির টক শোতে জোরে জোরে বলছেন, এই যে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ল তা তো বিএনপির কৃতিত্ব। জ্ঞানের কী গভীরতা! এই কৃতিত্ব তখন তাঁদের দেয়া হলো না কেন যাঁরা এই অস্ত্র ধরেছিলেন। আসলে, নিয়মিত এসব চালান যেত। এতে রাষ্ট্রের এসব নির্বাহী অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। দৈবাৎ দু’জন অধস্তন পুলিশ অফিসার তা ধরে ফেলেন। যদ্দুর মনে পড়ে, এই কৃতিত্বের জন্য তাঁদের দু’জনকে ধরে, চাকরিচ্যুত করে র‌্যাবের হাতে তুলে দেয়া হয়। র‌্যাব তাদের মারাত্মকভাবে নির্যাতন করে। এই নির্যাতনের হোতা ছিলেন একজন মেজর। অস্ত্র ধরার জন্য এটি কি পুরস্কার না শাস্তি। শুধু তাই নয়, তদন্ত কর্মকর্তা কতবার বদল করতে হয়েছে এই মামলায়? পাঁচবার। শেষবার আদালতের নির্দেশনায় তদন্ত কার্য সমাপ্ত হয়। আজ যে যুগান্তকারী মামলার রায় হলো তার নায়ক এই দুজন পুলিশ অফিসার। এদের একজন চাকরি ফিরে পেয়েছেন, আরেকজনের খবর জানি না। ন্যায়বিচার হবে যদি সরকার এদের চাকরির ধারাবাহিকতা রক্ষা করে প্রমোশন দেয়, পুরস্কার ও পদক দেয় এবং সেই মেজরকে শাস্তি দেয়া হয়।
বিএনপি নেতারা বক্তৃতা বিবৃতিতে যা বলছেন, তাতে এই ইঙ্গিত থাকছে যে, পুরো বিষয়টি ভারতের কারসাজি এবং আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নাজেহাল করার জন্য মামলা করেছে। খালেদাও এ বিষয়ে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। কখনও তাঁরা পাকিস্তানকে নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। এমনকি রায়ে পাকিস্তান কানেকশন ফাঁস হওয়ার পরও। বিএনপির এক প্রাক্তন লেফটি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ‘এই মামলার পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ছিল না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অনেককেই মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলার রায়েও সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটেছে।’ [ঐ]
এই মামলার এবং রায়ের তাৎপর্য আছে কয়েকটি।
১. বিএনপি নেতৃবৃন্দ যাই বলুন না কেন এটি পরিষ্কার যে, বিএনপি-জামায়াত যৌথভাবে অস্ত্র চোরাচালানের কাজটি করেছে, রাষ্ট্রের দুইজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী যাঁদের একজন ইসলামের কথা বললে কেঁদে ফেলেন, অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত, এই ঘটনা বিরল। নিজামী ও বাবর এ জন্য কত টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তারা কিন্তু সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি।
২. কোন রাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রথম অস্ত্র চোরাচালানে সর্বোচ্চ দ- পেলেন।
৩. বাংলাদেশে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা যৌথভাবে এই কাজে জড়িয়ে পড়ে। সিআইএ বা কেজেবি আগে এ ধরনের কাজকর্মে দক্ষ ছিল। কিন্তু এখন এসব কাজকর্ম প্রায় বন্ধ। পৃথিবীর একমাত্র আইনী সন্ত্রাসী সংস্থা আইএসআই এখনও এ ধরনের কাজে দক্ষ। আইএসআইয়ের নির্দেশে এই দু’টি গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করেছে এবং নিশ্চয় সরকারের রাজনৈতিক নির্দেশে। প্রতিষ্ঠান এভাবে ব্যবহার করলে তা গড়ে ওঠে না। নষ্ট হয়। খালেদা এই দু’টি প্রতিষ্ঠানকেই ব্যবহার করেছেন এই কাজে এবং পরবর্তীকালে গ্রেনেড হামলায়ও। তাঁর অগোচরে তারা কাজ করেছে এমন তো হতে পারে না। তদন্তে এই অফিসাররা কত টাকা খেয়েছেন তা আসেনি।
৪. জামায়াত-বিএনপি পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে এ কাজ না করলে এ ধরনের চোরাকারবারি হতে পারে না। খালেদা ডিজিএফআই ও এনএসআইকে আইএসআইয়ের আজ্ঞাবহ করে ফেলেছিলেন।
৫. বিএনপি জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে যে পাকিস্তানের সম্পর্ক কত নিবিড় তা এই অস্ত্র মামলা প্রমাণ করেছে। নিজামীর ফাঁসির প্রতিবাদে পাকিস্তানী জামায়াত যে বাংলাদেশকে ‘সাইজ’ করতে বলেছে তাতে জামায়াতকে পাকিস্তান দল বললে খুব বেশি অত্যুক্তি হবে না।
৬. প্রশাসনকে সামরিকায়ন করা যে সুস্থ নয়, এ মামলা তা প্রমাণ করেছে এবং তারা শক্তিধর হয়ে উঠলে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় এটি রাজনীতিবিদদের বোঝার সময় এসেছে। বঙ্গবন্ধুর আমলে এনএসআই-কে কখনও সামরিক বাহিনীর হাতে ন্যস্ত করা হয়নি। এটি চলে এসেছে জিয়ার সময় থেকে। শেখ হাসিনাও তা বহাল রেখেছেন এবং তাতে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায় না।
প্রশ্ন উঠেছে, খালেদা জিয়া যখন পুরো বিষয়টি জানতেন তখন তিনিও তো অপরাধী। তাত্ত্বিক দিক থেকে ঠিক। কিন্তু এক্ষেত্রে করণীয় সরকারের, আমাদের নয়। তবে, গ্রেনেড হামলার রায়টি হয়ে গেলে বোঝা যাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত কত খড়গহস্ত। ধরে নেয়া যেতে পারে গ্রেনেড হামলার সঙ্গেও জড়িত ছিল আইএসআই। কারণ, তারা মনে করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে পারলে, আওয়ামী লীগের একটা অংশ বিএনপিকে মজবুত করবে ও বাকি অংশ সামান্য দল হয়ে যাবে এবং তাতে পাকিস্তানের লাভ হবে। পাকিস্তানের জন্য তারা কত কাতর এবং এ বিষয়ে যে কোন সমঝোতা হবে না তাও স্পষ্ট।
খালেদা গত পরশুও সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তিনি কোন কিছু মানবেন না। বর্তমান সরকার অবৈধ এবং এই সরকার ৩০০ জন বিএনপি কর্মীর গুম-খুনের জন্য দায়ী।
যে সরকার অবৈধ তার সঙ্গে আলোচনার কী প্রয়োজন তা তো বুঝি না। অবৈধ সরকারকে উৎখাত করা ফরজ। সেটি করলেই বোধহয় ভাল। যে সরকার অবৈধ তার অধীনে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণই বা কেন? নির্লজ্জতার কোন সীমা নেই। বিএনপি নেতা-নেত্রীরা দিগম্বর হয়েও রাস্তায় হাঁটা লজ্জার নয় বরং ফ্যাশন স্টেটমেন্ট মনে করেন। যে ৩০০ জনকে গুম-খুন করা হয়েছে বলে বিএনপির দাবি তা তদন্ত হোক আমরা একমত। তবে, গত ৫-৬ মাসে বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে যে হত্যাকা-, অগ্নিসংযোগ ও ধর্মীয় উপসনালয় ভেঙ্গেছে তারও তদন্ত হোক এবং দায়-দায়িত্ব নির্ধারিত হোক।
আমরা যে কথাটি ভাবছি এবং স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে অনেকে যে, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে কী হতো? দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছি, এক কোটি মানুষকে হিজরত করতে হতো। গ্রামে গ্রামে রক্তগঙ্গা বইত, সেনা-পুলিশ কর্মকর্তাদের জিয়া আমলের মতো কোর্ট মার্শাল করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতো, ট্রাক ট্রাক অস্ত্র পাচার হতো। সবচেয়ে বড় কথা আমেরিকা যেমন অনেক জায়গায় ঘাঁটি স্থাপন করে আত্মরক্ষা ও আধিপত্য বজায় রাখার স্বার্থে বাংলাদেশকেও সে রকম ঘাঁটিতে পরিণত করত পাকিস্তান। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, যুদ্ধাপরাধ বিচারের রায় পাকিস্তানী কানেকশন ও পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া তা প্রমাণ করে মাত্র।
সুশীল বাটপাড়রা মনে করছেন বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন না করলে গণতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের প্রশ্ন পাকিস্তানীরা এলে, এখানে ঘাঁটি করলে, রক্তের নহর বইয়ে দিলে কি গণতন্ত্র মজবুত হবে? তার চেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ কি হয়েছিল পাকিস্তানীমনাদের অবাধে রাজনীতি করতে দেয়ার জন্য? এ প্রশ্নটির উত্তর আগে খালেদা ও তাঁর দল থেকে আমাদের পাওয়া দরকার। জামায়াত তো পাকিস্তানের এটি পুরনো কথা, কিন্তু সুশীল বাটপাড়রা ও তাদের মিডিয়ারা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করে যে বিএনপি বাংলাদেশে ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দল। সে জন্য এই প্রশ্নটি শুধু তাদের জন্যই।
6 February 2014 Daily Janakantha

No comments:

Post a Comment