Tuesday, January 28, 2014

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় ৩০ জানুয়ারী

বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র পাচার নতুন করে তদন্তের পর অতিরিক্ত এগারজনকে আসামি করে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

এই এগারজনের মধ্যে রয়েছেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আলফার সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়া।এই অভিযোগ গঠনের ফলে চাঞ্চল্যকর ওই অস্ত্র পাচারের ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার সাত বছরের বেশি সময় পর বিচার কাজ শুরু হচ্ছে।অভিযুক্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সাবেক প্রভাবশালী কর্মকর্তাও রয়েছেন।

চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আহাদুর রহমানকে পুনরায় জেরা করা ও আদালত পরিবর্তনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন। ফলে আগামী ৩০ জানুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
১৩ জানুয়ারি এ মামলার বিচার শেষে রায় প্রদানের জন্য দিন ধার্য করেন চট্টগ্রামের একটি বিশেষ আদালত। এ অবস্থায় মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কর্ণফুলী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহাদুর রহমানকে পুনরায় জেরা ও আদালত পরিবর্তনের নির্দেশনা চেয়ে ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মামলার তিন আসামি। আবেদনকারীরা হলেন এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মোঃ আবদুর রহিম, সাবেক উপপরিচালক লিয়াকত হোসেন ও সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান। আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী ও শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খন্দকার মোহাম্মদ দিলীরুজ্জামান।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, তিন আসামির করা চারটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ফলে ৩০ জানুয়ারি ধার্য তারিখে রায় ঘোষণায় আইনগত কোনো বাধা নেই। আবেদনকারী সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খানের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার (সিইউএফএল) জেটিতে খালাসের সময় ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাদুর রহমান বাদী হয়ে দুটি মামলা (অস্ত্র ও চোরাচালান) করেন। দুই মাস পর মামলা দুটির অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। তাতে স্থানীয় চোরাকারবারি হাফিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। বাকিদের প্রায় সবাই স্থানীয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালতের নির্দেশে মামলা দুটির অধিকতর তদন্ত শুরু হয়। নতুন ১১ জনকে আসামি করে ২০১১ সালের ২৬ জুন সিআইডি উভয় মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়। তারা হলেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক আবদুর রহিম, সাবেক পরিচালক শাহাবুদ্দিন আহমদ, সাবেক উপপরিচালক লিয়াকত হোসেন, সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এনামুল হক, সাবেক শিল্পসচিব নুরুল আমিন ও ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়া। শেষ দুজন পলাতক ও বাকিরা কারাগারে আছেন। 

No comments:

Post a Comment