Saturday, October 18, 2014

দাসত্বের শিকার বাংলাদেশিদের জেলে পাঠাতে চায় থাইল্যান্ড


থাইল্যান্ডের জঙ্গলে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রির জন্য আটকে রাখা হয়েছিল যে বাংলাদেশিদেরতাদের নিয়ে কি করা হবে তা নিয়ে থাই সরকারের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়েছে
আন্দামান উপকুলের কাছে থাইল্যান্ডের জঙ্গল থেকে স্থানীয় কর্মকর্তারা সম্প্রতি এদের উদ্ধার করেন
ব্যাংকক থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জোনাথান হেড জানানথাইল্যান্ডের কেন্দ্রীয় সরকার এবং পুলিশ কর্মকর্তারা এখন এদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে কারাগারে পাঠাতে চাইছে
গহীন জঙ্গলের বন্দীদশা থেকে যে ১৭০ জনকে থাই কর্মকর্তারা উদ্ধার করেনতাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। এদেরকে ভালো বেতনের চাকুরিতে বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপর তাদের মাদক খাইয়ে হাত-পা বেঁধে নৌকায় তোলা হয়। এরপর থাইল্যান্ডে নিয়ে তাদেরকে পাচারকারীরা জঙ্গলে তিন সপ্তাহ আটকে রাখে। সেখানে বন্দী অবস্থায় অনেককে মারধোর করা হয়অনাহারে রাখা হয়
বিবিসির জোনাথান হেড জানানউদ্ধার পাওয়া বাংলাদেশিদের অনেকেই শারীরিক  মানসিকভাবে প্রায় ভেঙ্গে পড়েছেন। তাকে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় অনেককে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। এরা এখন যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে যেতে চাইছেন
থাইল্যান্ডের স্থানীয় কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে সংঘবদ্ধ পাচারকারীরা সেখানকার জঙ্গলে দাস বেচা-কেনা করছে। এদেরকেও সেই উদ্দেশ্যেই ধরে নিয়ে আসা হয়েছিল। তারা এই পাচার চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন
বিবিসির সংবাদদাতা জোনাথান হেড জানানস্থানীয় কর্মকর্তারা যাই বলুনথাইল্যান্ডের কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টিকে দেখছে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। যারা এই পাচারকারী চক্রের হোতাতাদের অনেকেই প্রভাবশালী এবং উচ্চ পর্যায়ে তাদের ভালো যোগাযোগ আছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে পুলিশের 
মধ্যে অনীহা আছেঅতীতে  ধরণের পাচার চক্রের শিকার হয়েছিলেন যারাতাদের উদ্ধারের পর অবৈধ অভিবাসী হিসেবে জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর এদের আবার পাচারকারীদের কাছেই বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল
উদ্ধার পাওয়া এই বাংলাদেশিদের ভাগ্যে এখন তাই ঘটতে চলেছে কিনাসেটাই এখন প্রশ্ন
প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ
এদিকে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেনতারা ইতোমধ্যে এই বাংলাদেশিদের ব্যাপারে থাইল্যান্ডের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই বাংলাদেশিদের আপাতত থাংরা প্রদেশে রাখা হয়েছেতিনি আরও জানানযে ১৩২ জনকে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়তাদের মধ্যে ১২২ জনই বাংলাদেশি বলে থাই কর্তৃপক্ষ একটা প্রাথমিক ধারণা দিয়েছেন। বাকীরা মিয়ানমারের নাগরিক হতে পারেনযারা সচরাচর রোহিঙ্গা নামে পরিচিত
শহীদুল হক বলেন ধরণের মানব পাচারের ঘটনা আগেও ঘটেছে। থাইল্যান্ডমালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশকে ঘিরে একটি চক্র সক্রিয়। এরা বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের নাগরিকদের থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেবাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা যাতে উদ্ধারপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে তাদের জাতীয়তা যাচাই করতে পারে সেজন্যে থাই কর্তৃপক্ষের কাছে তারা অনুমতি চেয়েছেন
শহীদুল হক বলেনযদি যাচাই করে দেখা যায় যে এরা বাংলাদেশিতখন তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বলেনথাই কর্তৃপক্ষ এদেরকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে না বলেই তিনি আশা করেনআন্তর্জাতিক রীতি-নীতি মেনেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক উদ্যেগ নেয়া হবেবিবিসি জানতে পেরেছে যে দক্ষিণ থাইল্যান্ডে একটি চক্র রয়েছে - যারা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশীদের বিভিন্ন খামারে বা মাছধরার ব্যবসায় ক্রীতদাসের মতো কাজ করাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে এমন ১৩০ জন বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে সেখানকরা কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন হেড থাইল্যান্ডে এমন একটি জায়গা ঘুরে দেখেছেন, যেখানে অন্তত ১৩০ জন বাংলাদেশী পুরুষকে উন্নত চাকরির লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এরা সবাই মানব পাচারের শিকার।
বাংলাদেশ ছাড়ার পর তাদেরকে ওষুধ খাইয়ে, হাত-পা বেঁধে নৌকায় করে থাইল্যোন্ড নিয়ে যাওয়া হয়। ওই নৌকায় প্রায় ৩০০ বন্দী ছিল।
এর পর তাদেরকে থাইল্যান্ডের উপকুলে জঙ্গলের মধ্যে লুকানো কিছু ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং দাস-শ্রমিক হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়।
উদ্ধার পাবার পর আবদুর রহিম নামের একজন বাংলাদেশী বলছিলেন, তাদের জঙ্গলে নিয়ে রাখা হয়েছিল, কোন খাবার দেয়া হয় নি। ১০ দিন তারা শুধু পাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন। তিনি বলেন, থাই দালালরা তাকে এমন মারধর করেছে যে এখনো তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটেন।
বিবিসি জানতে পেরেছে যে দক্ষিণ থাইল্যান্ডে একটি চক্র রয়েছে - যারা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশীদের বিভিন্ন খামারে বা মাছধরার ব্যবসায় ক্রীতদাসের মতো কাজ করাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে এমন ১৩০ জন বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে সেখানকরা কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন হেড থাইল্যান্ডে এমন একটি জায়গা ঘুরে দেখেছেন, যেখানে অন্তত ১৩০ জন বাংলাদেশী পুরুষকে উন্নত চাকরির লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এরা সবাই মানব পাচারের শিকার।
বাংলাদেশ ছাড়ার পর তাদেরকে ওষুধ খাইয়ে, হাত-পা বেঁধে নৌকায় করে থাইল্যোন্ড নিয়ে যাওয়া হয়। ওই নৌকায় প্রায় ৩০০ বন্দী ছিল।
এর পর তাদেরকে থাইল্যান্ডের উপকুলে জঙ্গলের মধ্যে লুকানো কিছু ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং দাস-শ্রমিক হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়।
উদ্ধার পাবার পর আবদুর রহিম নামের একজন বাংলাদেশী বলছিলেন, তাদের জঙ্গলে নিয়ে রাখা হয়েছিল, কোন খাবার দেয়া হয় নি। ১০ দিন তারা শুধু পাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন। তিনি বলেন, থাই দালালরা তাকে এমন মারধর করেছে যে এখনো তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটেন।
পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েকজন
সম্ভবত এদের ক্ষেত-খামারে বা মাছধরার নৌকায় কাজ দাসশ্রমিক হিসেবে করানো হয়।
তিন সপ্তাহ বন্দী থাকার পর একজন স্থানীয় জেলা প্রশাসন কর্মকর্তা - যিনি মানবপাচার রোধের জন্য কাজ করছেন - তাদের উদ্ধার করেন।
তবে অ্ন্য আরো ৬০ জন এখন নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে করা হচ্ছে।
থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরেই মানবপাচার একটি বড় সমস্যা।মাছ ধরার নৌকাগুলোতে দাস শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ ওঠায় ইউরোপে সি-ফুড জাতীয় খাদ্যের বাজার হারাচ্ছে থাইল্যান্ড। এ ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বছরই মানবপাচারকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল থাই সরকার।
কিন্তু পাচার হওয়া বাংলাদেশী উদ্ধারের ঘটনার পর ধারণা করা হচ্ছে যে, দেশটিতে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে।

No comments:

Post a Comment