Thursday, April 4, 2013

কালের কণ্ঠের খুলনা ব্যুরো কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে অজ্ঞান ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হলো সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দীকে



টানা তিন দিন অচেতন থাকার পর জ্ঞান ফিরলে বিবিসি বাংলার ষ্ট্রিংগার এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের খুলনা ব্যুরো প্রধান গৌরাঙ্গ নন্দী তাকে হত্যা প্রচেষ্টার বর্ণনা দিলেন।

গত রোববার গভীর রাতে নগরীতে কালের কণ্ঠের ব্যুরো কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে অজ্ঞান ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বিবিসি বাংলা সার্ভিসের এই স্ট্রিংগারকে।


তারপর থেকে নগরীর সোনাডাঙ্গার গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিবীড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন গৌরাঙ্গ নন্দী। কে বা কারা তার উপর হামলা চালালো, কীভাবে তিনি জ্ঞান হারালেন তা নিয়ে পরিবারের সদস্য, সহকর্মী ও পুলিশ ছিল অন্ধকারে। বুধবার রাতে জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর হাসপাতালেই সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দেন গৌরাঙ্গ।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, কয়রা উপজেলার বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সের দুই ব্যক্তি রোববার রাত ৯টার দিকে এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে আসে। এ সময় কার্যালয়ে আর কেউ না থাকায় কক্ষের দরজা বন্ধ করে আলাপ শুরু হয়।
তারা কয়রার চিংড়ি ঘের, সম্প্রতি কয়রার আমাদিতে হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

হঠাৎ করেই ওই দুই ব্যক্তি গৌরাঙ্গকে জাপটে ধরেন। তিনি তা প্রতিহতের চেষ্টা চালান। কিন্তু তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তিনি মেঝেতে পড়ে যান।

গৌরাঙ্গ আরো বলেন, “তখন ওই দুই ব্যক্তি আমার মুখে কয়েকটি সাদা ট্যাবলেট ঢুকিয়ে দিয়ে পানি দিয়ে গিলতে বাধ্য করে। তারপর তোয়ালে দিয়ে মুখ বেধে দেয়, যাতে চিৎকার করতে না পারি। পরে তারা ব্লেড দিয়ে দুই হাতের কব্জিতে পোঁচ দিয়ে রগ কাটার চেষ্টা করে।”

এরপর আর কিছুই মনে নেই সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দীর। তিনি জানান, এটি ছিল একটি ‘পরিকল্পিত হত্যা প্রচেষ্টা’।
তবে কারা এর পেছনে রয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি।

গৌরাঙ্গ নন্দীর সহকর্মী কালের কণ্ঠের স্থানীয় প্রতিবেদক কৌশিক দে জানান, ওই রাতে পরিবারের সদস্যরা অনেকক্ষণ পর্যন্ত গৌরাঙ্গ নন্দীর মোবাইল ফোনে ও কার্যালয়ের টেলিফোনে কল করেও সাড়া পাননি। পরে তারা বিষয়টি তাকে জানান।তখন কয়েকজন সাংবাদিক ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ব্যুরো কার্যালয়ে গিয়ে তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে গৌরাঙ্গকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন বলে জানান কৌশিক।

গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক বঙ্গকমল বসু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই টেবলেট এর প্রভাবে অজ্ঞান হয়ে যান গৌরাঙ্গ নন্দী। তিন দিন চিকিৎসার পর পুরোপুরি তার জ্ঞান ফিরেছে। তবে তাকে উদ্ধারে দেরি হলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারত। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরডটকম

No comments:

Post a Comment