Thursday, April 4, 2013

একাত্তরে ‘আল্লামা শফী ছিলেন মুজাহিদ বাহিনীতে’ ,এখন পাকিস্তানের দোসরদের রক্ষার ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন :সম্মিলিত ইসলামী জোট



“হেফাজতের নেতা আহমদ শফী একাত্তরে পাকিস্তানকে রক্ষার জন্য মুজাহিদ বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানি সেনা আর রাজাকারদের সব কাজে সহযোগিতা করেন।”
হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী প্রসঙ্গে এ দাবি করলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিতে আন্দোলনরত গণজাগরণ মঞ্চবিরোধী হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীকে ‘রক্ষার’ অভিযোগ আসার পর একাত্তরে সংগঠনটির আমিরের ভূমিকা তুলে আনলেন সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “একাত্তরে যখন পাকিস্তানি সেনা আর তাদের দোসররা এ দেশে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন চালিয়েছিল, তখন হেফাজতের নেতারা কোথায় ছিলেন?

আহমদ শফী এখন পাকিস্তানের দোসরদের রক্ষার ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন বলেও দাবি করেন জিয়াউল। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকদের ‘নাস্তিক’ অাখ্যায়িত করে তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সম্প্রতি সোচ্চার হয় হেফাজতে ইসলাম। গণজাগরণ মঞ্চের চট্টগ্রামে সমাবেশেও বাধা দেয় তারা।

চট্টগ্রামে হেফাজতের সমাবেশ থেকে যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে স্লোগানও দেয়া হয়। সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি বলেন, “জামায়াত নেতা গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদী, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান এবং বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরী ও আব্দুল আলিম গংরা মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল।

“ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা যে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছিল তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠরাই মুসলমান ছিল।”একাত্তরের ওই গণহত্যাকারীরা বাঙালি জাতির ও ইসলামের 'চিরদুশমন' বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পবিত্র কুরআনে গণহত্যার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে উল্লেখ করে মাওলানা জিয়াউল হাসান বলেন, “আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের নামায-রোজা যেভাবে ফরজ করে দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই দলমত নির্বিশেষে সকল যুদ্ধাপরাধী ঘাতকদের বিচার করাও পবিত্র কুরআনের বিধান অনুযায়ী আমাদের জন্য ফরজ করা হয়েছে।”

‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে ব্লগারদের গ্রেপ্তার করায় সরকারকে সাধুবাদ জানালেও যারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় বিভিন্নভাবে ধর্মীয় উস্কানি ছড়াচ্ছে তাদের ‍বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সম্মিলিত ইসলামী জোটের নেতা।

তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবিরের ব্লগ ও ব্লগাররা এখনো বহাল তবিয়তে আছে, যদিও এরাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালে অন্যের নামে ভুয়া একাউন্ট খুলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

“পবিত্র কাবা শরীফের গিলাফের অপব্যবহার করে সাঈদীর মুক্তির ভুয়া মানববন্ধনের ছবি কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরেও কাবা শরীফের অবমাননার জন্য কাউকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি।”

ধর্ম রক্ষার নামে হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ কর্মসূচি ইসলাম ও কোরআনের বিরোধী বলে মন্তব্য করেন এই মাওলানা।

তিনি বলেন, “তারা মাওসেতুংয়ের মতাদর্শের লংমার্চের ধারক ও বাহক। পবিত্র কোরআন ও ইসলামকে আল্লাহ নিজেই হেফাযত করার ঘোষণা দিয়ে ১৫ নং সূরা হিজরের ৯নং আয়াতে চিরস্থায়ীভাবে ‍বিধান দিয়ে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ইন্না নাহনু নাযযালনাজ যিকরা ওয়া ইন্না লাহু লা-হা-ফিজুন, অর্থাৎ ‘আমিই কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি এবং অবশ্য আমিই উহার সংরক্ষক’।”

সেখানে আল্লাহর দায়িত্ব পালনের কথা শয়তান ছাড়া কেউ বলতে পারে না, মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহসভাপতি মুফতি জোবায়েদ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ টি এম বাহাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোসলেহ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ মাওলানা নুরুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment