Saturday, March 23, 2013

এক নজরে জামায়াতের ঘৃণ্য ইতিহাস (১৯৪১-২০১৬)

এক নজরে জামায়াতের ঘৃণ্য ইতিহাস (১৯৪১-২০১৩)

"ইসলাম" শব্দের প্রতি বাঙ্গালী মুসলমানদের অন্যরকম আবেগ জড়িত। আর সেই আবেগের ঘৃণ্য ব্যবহার শুরু হয় ১৯৪১ সাল থেকে। এ বছর 'জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ' নামক একটি ইসলাম বিদ্বেষী দলের জন্ম হয়। দলটির প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আবুল আলা মওদুদীর (জন্ম ভারতের আওরঙ্গবাদে, বর্তমান হায়দারাবাদ, মহারাষ্ট্র) ব্যাক্তিগত দর্শনই এই দলটার রাজনৈতিক দর্শন। শুধু তাই নয়; জামাতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আবু আলা মওদুদীর পুত্র সৈয়দ হায়দার ফারুক মওদুদী পাকিস্তানের রয়েল টেলিভিশনে গত ২৮ মে ২০১১ ইং এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, জামায়াত ধর্মব্যবসায়ী এবং অত্যাচারী। (তার বিস্তারিত সাক্ষাৎকার দেখুন ৪ পর্বে Click This Link https://www.youtube.com/watch?v=u3arxZObKDY  এখানে)।

সৈয়দ হায়দার ফারুক মওদুদী বলেছেন, আমার বাবা কখনও আমাদেরকে রাজনীতির সাথে জড়াতে দেননি। এছাড়া তিনি জামায়াত সম্পর্কে অনেক সত্য উন্মোচন করেছেন এখানে।


জামায়াতের এই প্রতিষ্ঠাতা ইসলাম সম্পর্কেও অনেক নেক্কার জনক কথা বলেছেন। কোরআনের অনেক অপব্যাখ্যা করেছেন যা সর্বজন স্বীকৃত। তার তিনটি নমুনা এখানে তুলে ধরেই আসল কথায় যাবো। তার এসব ধর্মবিকৃতি চেতনা দেখলেই বুঝতে পারবেন তারা আসলে ইসলামের নামে কি করছে।


০১. “গণতন্ত্র বিষাক্ত দুধের মাখনের মত” – মওদূদী, সিয়াসি কসমকস, তৃতীয় খন্ড, পৃঃ ১৭৭


০২. “গণতন্ত্রএর মাধ্যমে কোনো সংসদ নির্বাচনে পার্থী হওয়া ইসলাম অনুযায়ী হারাম” - রাসায়েল ও মাসায়েল । লেখক মওদূদী । প্রথম সংঙ্করণ, পৃষ্ঠা ৪৫০


০৩. “সময়ে সময়ে মিথ্যা বলা শুধু জায়েজই নয় বরং অবশ্য কর্তব্য” – আবুল আলা মওদূদী, তরজমানুল কোরআন, মে ১৯৫৮!


এক নজরে জামায়াতের ঘৃণ্য ইতিহাস (১৯৪১-২০১৩)

জামায়াতের জন্ম দেয়  আমেরিকা। মওলানা ফরিদউি্দিন মাসউদ বলেন , পাকিস্তান আমেরকিান দূতাবাসে তিনি অনেক গুলো ব ইদেখতে পান , যার সবই আবু লআ’লা মওদুদীর লেখা। তিনি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান মওদুদীর এতো বই কেন মার্কন দূতাবাস সংরক্ষণ করছে ? তারা জবাবে জানান, তাদের অর্থায়নেই মওদুদীর বই প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনা প্রমাণ করে জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠার নেপথে্য  সি আইয়ে র গভীর ষড়যন্ত্র ছিল ।

১৯৪১- এ বছরের ২৬ আগস্ট লাহোরে “জামায়াতে ইসলামী হিন্দ” নামে দলটা গঠিত হয় । ভারতবর্ষের কম্যুনিস্ট বিরোধী শক্তি হিসেবে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদীদের আশ্রয়ে এই দলটির জন্ম । এখনো ব্রিটিশদের সাথে দলটির সম্পর্ক গভীর । জন্মের সাথে সাথে এরা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার তীব্র বিরোধীতা করতে থাকে । মওদূদী ফতোয়া দেন পাকিস্তান রাষ্ট প্রতিষ্ঠার দাবী করা সবাই, মুসলীম লীগ, জিন্নাহ এরা কেউই “খাটি মুসলিম” না । মাথায় রাখেন ৭১ সালেও গণ হত্যার সময় “খাটি মুসলিম” তত্ব ব্যাবহার করা হয়েছে ।


১৯৪২- লাহোর থেকে হেডকোয়ার্টার ভারতের পাঠানকোটে স্থানান্তর ।


১৯৪৩- মাসিক “তরজমানুল কোরআন” ম্যাগাজিনের মাধ্যমে নিজেদের মতবাদ প্রচার করতে থাকে। এই ম্যাগাজিনের ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় মওদূদী পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরোধিতা করে লিখেন, পাকিস্তান নামক কোনো রাষ্ট্রের জন্ম হলে সেটা “আহাম্মকের বেহেশত” এবং “মুসলমানদের কাফেরানা রাষ্ট্র” হবে। *পাকিস্তানের স্বাধীনতার সরাসরি বিরোধীতা করে  মওদুদী এবং তার দলটি।


১৯৪৪- দল দ্রুত সংঘঠিত হতে থাকে । দ্রুত বাড়তে থাকে সদস্য সংখ্যা ।


১৯৪৫- অবিভক্ত ভারতে সর্বপ্রথম কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয় ।


১৯৪৬-  জামায়াতে ইসলামী কয়েকজন সদস্য সংগ্রহ করে।


১৯৪৭- দেশভাগের সাথে সাথে লাহোরে প্রধান কার্যালয় স্থানান্তর । অথচ এর আগে পর্যন্ত পাকিস্তান রাষ্ট গঠনের চরম বিরোধীতা করে। পাকিস্তানে যাওয়ার পর পাকিস্তানের কাশ্মীরের জন্য আন্দোলন করাকে ‘হারাম’  ঘোষণা দেয়।



১৯৪৮- ইসলামী সংবিধান ও ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারণা শুরু করে। এর পর পাকিস্তান সরকার জননিরাপত্তা আইনে মওদূদীকে কারাবন্দী করে । *এ বছর পূর্বপাকিস্তানে জামাতের কার্যক্রম শুরু হয়।
জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আবু আলা মওদুদী পাকিস্তান জন্মের মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়েছিলেন। এই দন্ড মওকুফ হয়েছিলো মুলত যুক্তরাষ্ট্রের চাপে – তখনকার পাকিস্তানে আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের ডি-ক্লাসিফাইড যোগাযোগ থেকে বিষয়টা সবাই জানেন। কারন তখন পাকিস্তানকে যুক্তিরাষ্ট্রের খুবই প্রয়োজন ছিলো কমিউনিজমের প্রসার বন্ধ করার জন্যে ধর্ম বিশেষ করে ইসলামকে ব্যবহার করার জন্যে সংগঠিত শক্তি দরকার ছিলো। কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং সরকারকে কিছু দাবী মানানোর জন্যে মুল আন্দোলন শুরু করেছিলো সদ্য গজিয়ে উঠা একটা অরাজনৈতিক সংগঠন (তাহরিক ই খতমে নবুয়ত) – যারা প্রকৃতপক্ষে জামায়াতের একটা পরিকল্পনার অংশই ছিলো – সাথে ছিলো মুসলিমলিগের উগ্রপন্থীরা। (অনেকটা আজকের হেফাযতে ইসলামের মতোই যার পিছনে জামায়াতের পরিকল্পনা আর বিএনপির একটা অংশে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদ রয়েছে)।
তাদের দাবী ছিলো – তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ জাফরউল্লহ খান – যিনি কাদিয়ানী ছিলেন – তাকে অপসারন করা । তাদের দাবি ছিল সরকারী উচ্চপদ থেকে কাদিয়ানীদের অপসারন করা এবং কাদিয়ানীদের  ‘ অমুসলিম ’ ঘোষনা করা। এমন চরম অন্যায়  দাবী আদায়ের আন্দোলন শুরু হলে কাদিয়ানীদের উপর নেমে আসে নির্যাতন এবং ১৯৫৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারী একজন কাদিয়ানীর কবর দেওয়াকে কেন্দ্র করে দাংগা সূত্রপাত হয় এবং কাদিয়ানীদের হত্যা, তাদের বাড়ীঘরে আগুন জ্বালানো থেকে শুরু করে লুটপাটের মতো ভয়াবহ হামলা দাঙ্গার  রূপ নিলে ৪ মার্চ পাকিস্তানে প্রথম আঞ্চলিক মার্শাল  ‘ জারি হয়। মুলত এই দাঙ্গার কারনেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রথম পাকিস্তান শাসন করে। জেনারেল আযম খানের নেতৃত্বে সেই সামরিক শাসনের মেয়াদ ছিলো সেই বছরের ১৪ই মে পর্যন্ত এবং সেই সময় একটা সামরিক আদালত মওদুদী এবং আবুস সাত্তার নিয়াজীকে দাঙ্গা লাগানোর অভিযোগে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে।

 দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে রাজনীতিক এবং সিভিল প্রশাসনের উপর সামরিক বাহিনীর  ভয়াবহ প্রাধান্য বিস্তার শুরু হয়  – তাদের মতে দূর্বল প্রশাসনিক পদক্ষেপই দাঙ্গার কারন। যার ফলে রাষ্ট্রের ক্ষমতায় ব্যপক পরিবর্তন হয় – নুরুল আমিনকে ক্ষমতা ত্যাগ করতে হয় এবং সামরিক বাহিনীর পছন্দের লোক মোহাম্মদ আলিকে প্রেসিডেন্ট করে শুরু হয় রাষ্ট্র পরিচালনার কাজ ।

 জন্মলগ্ন থেকেই দাঙ্গা ফ্যাসাদ আর বিপর্যয় তৈরী করে স দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ইতিহাস আছে- যারই ধারাবাহিতায় ১৯৭১ সালে এরা আলবদর রাজাকার গঠন করে গনহত্যায় যোগ দিয়েছে – এমনকি এখনও শিবির নামক একটা সন্ত্রাসী দল তৈরী করে এরা আজও মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মেরে ত্রাস সৃষ্টি মতো ঘৃন্য কাজ করছে – পুলিশের মাথা থেতলে দিয়ে রাষ্ট্রের আইনশৃংখলা রক্ষা ব্যবস্থাকে পংগু করে দিতে চাইছে – সম্পদ ধংস করার নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করে একটা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টির চেষ্টা করছে – কারন তাদের একদল নেতা যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারাধীন তাদের রক্ষা করতে হবে।

সেই মানবতাবিরোধী সংগঠনকে যেমন আইনী পদ্ধতিতে নিষিদ্ধ করা জরুরী – তেমনি জরুরী সামাজিক ভাবে বর্জন করা। সেই বিবেচনায় আমার বিশ্বাস সদালাপের মতো একটা সুস্থ ওয়েবপোর্টালে জামাতের বা জামাতের প্রতিষ্ঠাতার প্রচারনা না করতে দেওয়াই উচিত।প্রকাশ্যে নড়চড়


১৯৪৯- পাকিস্তান সরকার আগে বিরোধিতা করলেও শেষ পর্যন্ত জামাতের “ইসলামী সংবিধানের রূপরেখা” গ্রহণ করে । পরে পাকিস্তান জামাত প্রভাবিত সংবিধান প্রণয়ন করে ।


১৯৫০- পরের বছর পাঞ্জাবের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য ব্যাপক প্রচারণা । মওদূদী জেল থেকে মুক্তি পান ।


১৯৫১- পাঞ্জাবের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং ভরাডুবি ।


১৯৫২- গোলাম আজম ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন । পরে ১৯৭০ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের শুক্কুর শহরে এক সংবর্ধণা সভায় তিনি বলেন “উর্দূ পাক-ভারত উপমহাদেশের মানুষের সাধারণ ভাষা।১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়া তার মারাত্নক ভুল ছিলো। বাংলা ভাষা আন্দোলন মোটেও সঠিক কাজ হয়নি। তিনি এজন্য দুঃখিত” সূত্র : দৈনিক আজাদ ২০ জুন ১৯৭০/ সাপ্তাহিক গণশক্তি ২১ জুন ১৯৭০/ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস- ডঃ মোহাম্মদ হান্নান, পৃঃ ৩৯৯


১৯৫৪- গোলাম আজম জামাতে ইসলামীতে যোগ দেন । প্রথম দিকে পূর্বপাকিস্তানে জামতের অবস্থান মজবুত না থাকলেও, গোলাম আজম যোগ দেওয়ার সাথে সাথে পূর্ব পাকিস্তানে দল চাঙ্গা হয়ে উঠে ।


১৯৫৫- ১৯৪৭ সালে গঠিত “জামায়াত ই তালেবর” নাম পরিবর্তন করে “ইসলামী ছাত্রসংঘ” নামে আত্নপ্রকাশ করে। মাওলানা আবদুর রহীম পূর্ব পাকিস্তানের আমির নির্বাচিত হন (পরে তিনি জামাতের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেন)


১৯৫৬- পূর্ব পাকিস্তানে কার্যক্রম শুরু করে ইসলামী ছাত্রসংঘ।


১৯৫৭- সালে গোলাম আজমকে পূর্ব পাকিস্তান জামাতের সেক্রেটারি জেনারেল নিযুক্ত করা হয় । আমির ছিলেন মাওলানা আবদুর রহিম ।


১৯৫৮- আইয়ুব খান জামায়াতে ইসলামী সহ সকল দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষনা করে । ১৯৬২ সাল পর্যন্ত এই ফরমান বলবৎ ছিল।


১৯৬২- মুসলিম পারিবার আইন বিরোধীতা কারেন। শিক্ষা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়।


১৯৬৩- মুসলিম পারিবারিক আইন নিয়ে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ।


১৯৬৪- ৪ জানুয়ারী জামাতের সকল কর্মকান্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় । *নিষিদ্ধ হয় জামায়াত । মওদুদী সহ ৬০ জন জামাত নেতাকে গ্রেফতার করা হয় । যার ভিতর গোলাম আজম একজন । অক্টোবরেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় ।


১৯৬৫- নির্বাচনে ফাতেমা জিন্নাহর পরাজয় ঘটলে দল কোনঠাসা হয়ে পড়ে।


১৯৬৬- শেখ মুজিবের ৬ দফার বিরোধীতা করে জামাতে ইসলাম। এই দফাগুলোকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে অখ্যায়িত করে ।


১৯৬৭- শেখ মুজিবের ৬ দফার ভিত্তিতে যখন পূর্ব পাকিস্তানে প্রবল গণআন্দোলন শুরু হয়, তখন জামাত ৫ দফা নামে আরেকটা আন্দোলন শুরু করে গণ আন্দোলন ব্যাহত করার চেষ্টা করে ।


১৯৬৮- আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল হয়ে উঠে । সারা পাকিস্তানে চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করে। এর ভিররই জামাত আইয়ুব খানের আস্থা অর্জন করে নেয় ।


১৯৬৯- গণ অভ্যুথানের সময় রহস্যজনক রাজনৈতিক অবস্থান । গোলাম আজম পূর্ব পাকিস্তানের আমির হন ।


১৯৭০- পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫১ আসনে পার্থী দিয়ে ৪ টি আসন জিতে নেয় । সবচেয়ে বেশি আসনে পার্থী দেয় আওয়ামীলীগ এবং তারা সবচেয়ে বেশি আসনে জয়লাভও করে । তৃতীয় সর্বোচ্চ আসনে (১২০) পার্থী দেয় ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি।


১৯৭১- একাত্তরের জামাত নিয়ে কয়েক লাইনে শেষ করা অসম্ভব । তারপও দুই এক লাইন লিখলাম । ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষায় ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠন করা হয় । কয়েকদিন আগে উদ্ধার হওয়া একটা নথিতে দেখা যায় এই কমিটির ১ নম্বর সদস্য হচ্ছেন গোলাম আজম । নথিটা দীর্ঘদিন যাবত পুরান ঢাকার এক ভদ্রলোক সংরক্ষন করেছিলেন । কিছুদিন আগে নথিটা তিনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধপরাধ ট্রাইবুনালে জমা দেন । ৩০ জুন লাহোরে গোলাম আজম বলেন তার দল মুক্তিযোদ্ধাদের (দুস্কৃতকারীদের) দমন করার জন্য সর্বাত্নক চেষ্টা চালাচ্ছে । দলের নেতৃত্বে গঠন করা হয় আলবদর রাজাকার । সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আবদুল মালেকের নেতৃত্বে প্রাদেশিক সরকার গঠন করা হয় । জামাতের সাবেক আমীর আব্বাস আলী খান এই সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন । ১৯৭১ সালে সংঘঠিত ইতিহাসের বৃহত্তম গণহত্যার জন্য দলটা কোনো ক্ষমা চায়নি । বরং গোলাম আজম দম্ভের সাথে জানিয়ে দেন একাত্তরের জন্য তারা অনুতপ্ত নয় । বরং তারা যা করেছে ঠিক করেছে ।


১৯৭২- গোলাম আজমের উদ্যোগে পাকিস্তানে পালিত হয় “পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার সপ্তাহ” এরপর লন্ডন গিয়ে সেখানে “পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধার কমিটি ” নামে একটা কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি বাংলাদেশকে উদ্ধার করে আবার পূর্ব পাকিস্তান করার সর্বাত্নক চেষ্টা চালায়। ডিসেম্বরে সৌদি আরবে আন্তর্জাতিক যুব সম্মেলনে অংশ নিয়ে সকল মুসলিম রাষ্ট্রকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে, এবং যুদ্ধ বিদ্ধস্ত মানুষের সহায়তায় কোনো প্রকার আর্থিক সাহায্য না দিতে আহবান জানান।


১৯৭৩- সরকারী এক আদেশে ৩৮ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয় । এর একজন গোলাম আজম । গোলাম আজম মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো সফর শুরু করেন। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে এবং পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধারে সহায়তা চান। ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস ইসলামিক সোসাইটির সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধারের বিষয়ে বক্তৃতা দেন।


১৯৭৪- মাহমুদ আলী সহ কয়েকজন পাকিস্তানিকে নিয়ে লন্ডনে পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধার কমিটির বৈঠক হয় । মক্কায় অনুষ্ঠিত রাবেতায়ে ইসলামীর সম্মেলনে বাংলাদেশ উদ্ধার নিয়ে বক্তৃতা দেন।


১৯৭৫- একাত্তর সালের পর আত্নগোপনে চলে যাওয়া জামাত নেতারা আস্তে আস্তে দেশে ফিরতে শুরু করে । কুখ্যাত যুদ্ধপরাধী শাহ আজিজুর রহমান দেশে ফিরেন । পরে তিনি বিএনপির প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন।


১৯৭৬- সরকার এক প্রেসনোটে নাগরিক্ত্ব ফেরত পাওয়ার জন্য ইচ্ছুক ব্যাক্তিদের আবেদন জানাতে বলেন। গোলাম আজম সাথে সাথে আবেদন করেন এবং প্রত্যাখাত হয়।


১৯৭৭- গোলাম আজম নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করেন এবং প্রত্যাখ্যাত হয় ।


১৯৭৮- গোলাম আজম পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে কোনো ভিসা ছাড়াই ১১ জুলাই ঢাকা আসেন। মায়ের অসুস্থতার অজুহাতে তাকে  প্রথমে ৩ মাসের অনুমতি দেওয়া হয় । এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত অবৈধভাবে বাংলাদেশে বসবাস করেন ।


১৯৭৯- ঢাকায় একটা কনভেনশনের মাধ্যমে “জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ” গঠিত হয়। গোপনে গোলাম আজমকে আমীর করে যুদ্ধাপরাধী ঘাতক আব্বাস আলী খানকে ভারপ্রাপ্ত আমীরের দায়িত্ব দেওয়া হয়।


১৯৮০- প্রথমবারের মত বায়তুল মোকারমের সামনে জামাতের সভা হয়। প্রকাশ্যে এটাই তাদের প্রথম সম্মেলন।


১৯৮১- জামাতের ভারপ্রাপ্ত আমীর একাত্তরের ঘাতক  আব্বাস আলী খান এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন “একাত্তরে আমরা যা করেছি ঠিকই করেছি। একাত্তরে বাংলাদেশ কনসেপ্ট ঠিক ছিলোনা”


১৯৮২- রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশে  জামাত দ্রুত প্রবেশ করতে থাকে। কাদের মোল্লা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়।


১৯৮৩- দলের রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে থাকে।সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে  নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় শিবিরের ক্যাডারেরা ।


১৯৮৪- জামাতের সাবেক আমির মাওলানা আবদুর রহিম জামাত ছেড়ে ইসলামী ঐক্য (জোট) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন।


১৯৮৫- স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের সাথে জামাতের সখ্যতা গড়ে উঠে। কাদের মোল্লা ঢাকা মহানগর আমির নির্বাচিত হয়।


১৯৮৬- এরশাদ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশগ্রহন করে  জাতীয় সংসদের ১০ টি  আসন পায় জামাত ।


১৯৮৭- সাংগঠনিক কার্যক্রম বাড়াতে বাড়তে থাকে নিরীহ ছাত্রদের হত্যা ।


১৯৮৮- অনেকদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর জামাতের ছাত্র সংগঠন শিবির নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে মরিয়া হয়ে উঠে। চট্টগ্রাম রাজশাহী সহ বিভিন্ন জেলায় রগ কাটার রাজনীতি শুরু করে।


১৯৮৯- হত্যাযজ্ঞ বাড়তে থাকে, উন্মত্ত  হয়ে উঠে জামাত।


১৯৯০- এরশাদ সরকারের পতন ঘটে। টিভিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃরা বক্তৃতা বিবৃতি দেন । জামাতের নেতারাও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা হিসেবে টিভিতে আসেন! সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।


১৯৯১- নির্বাচনে রেকর্ড ১৮ টি আসন পায়  কলুষিত হয় মহান জাতীয় সংসদ । বিএনপি সরকারের সাথে আপোষে এসব আসন পায়। নাগরিকত্বহীন গোলাম আজমকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের আমির ঘোষনা করে।


১৯৯২- বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনাকে ইস্যু করে মন্দির এবং সংখ্যালঘু এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলা করে আধিপত্য বিস্তার করে জামাত। বিজেপি বিরোধী আন্দোলন করে রাস্তায় নেমে আসে। সাধারণ মানুষের কাছে পৌচাতে চেষ্টা করে। একই বছর জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি গঠিত হয়। গোলাম আজমকে  প্রতীকি মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়।


১৯৯৩- গণআদালতের কারনে কোণঠাসা হয়ে পড়ে জামাত। নিজামী কাদেরমোল্লা সাইদী কামরুজ্জামান আব্দুল আলীম সহ আট জনকে মৃত্যুদন্ডযোগ্য ঘোষনা করে।


১৯৯৪- উচ্চ আদালতের এক রায়ে গোলাম আজম জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব ফিরে পায় ।


১৯৯৫- ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হলেও এবছর জামাত প্রথমবারের মত একদিন হরতাল দেয়।


১৯৯৬-জামাত এবং আওয়ামীলীগ তত্ববধাক সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। একসাথে আন্দোলন করেছে, তবে রাজনৈতিক জোট হিসেবে নয়। নির্বাচনে জামাত একাই লড়েছিল।


১৯৯৭- রাজনীতিতে জামাত শিকড় গেড়ে ফেলেছে।  ছাত্র শিবির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল, সাইদী ব্যাপক ভাবে ওয়াজ প্রচার করে।


১৯৯৮- বিএনপির সাথে মতৈক্যে আসে দলটি।


১৯৯৯- বিএনপির সাথে ৪ দলীয় জোট গঠন করে ।


২০০০- রাজনীতি থেকে অবসরে যায় গোলাম আজম। দলের নতুন আমীর হন মতিউর রহমান নিজামী।


২০০১- নির্বাচনে ১৮ টি আসন পায়।  জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটে। দলের শীর্ষ দুই নেতা নিজামী এবং মুজাহীদ মন্ত্রিত্ব লাভ করে গাড়িতে উড়ায় জাতীয় পতাকা !!


২০০২-ক্ষমতার কেন্দ্র় থেকে জঙ্গিবাদ সংগঠিত করতে থাকে।



২০০৪-  সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা করে জেএমবি কে সংগঠিত করে।  জামাতের আমন্ত্রনে পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর শীর্যস্থানীয় নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে আসেন। তারা শিবিরের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেন। ২১শে আগষ্টে গ্রেনেড হামলা সহ একের পর এক বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের  নিরীহ মানুষদের।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ভারতের বিছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার প্রধানের উপস্থিতিতে ১০ ট্রাক অস্ত্র , গ্রেনেড এবং শক্তিশালী বিষ্ফোরক  ধরা পড়ে।  ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ এ মামলার রায়ের পরয্বেক্ষণে আদালত বলেন, প্রতিবেশী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফাকে শক্তিশালী করতে ১০ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বাংলাদেশের দুইটি গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা এতে সহযোগিতা করেছিলেন।এর আগে ৩০ জানুয়ারি বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরচালান মামলায় জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। এছাড়া অস্ত্র মামলায় এই ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।


২০০৫- নির্বাচনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে থাকে। শুধুমাত্র ভারতীয় কোম্পানী বলে টাটার ২.৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিজামী


২০০৬- জামাতের তান্ডবময় একটা বছর।


২০০৭- নতুন প্রজন্ম জমাতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে থাকে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাতকে নির্বাচন করতে দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। ২৫ অক্টোবর মিডিয়ায় কাদের মোল্লা বলেন মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে গিয়েছেন নারী এবং সম্পত্তির লোভে ! দেশ ক্ষোবে ফেটে পড়ে।


২০০৮- নির্বাচনে জামাতের লেজেগোবরে অবস্থা। শুধুমাত্র যুদ্ধপরাধীদের বিচার হবে এজন্য তরুন প্রজন্মের ভোটে আওয়ামীলীগের বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ।


২০০৯- মহান জাতীয় সংসদে একজন সংসদ সদস্য যুদ্ধপরাধীদের বিচারের প্রস্তাব পেশ করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।


২০১০- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠিত হয়। গ্রেপ্তার হতে থাকে অভিযুক্ত ব্যাক্তিরা। জনগন আশাবাদী হয়।


২০১১- দেশ বিদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ  ট্রাইবুনালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকে। একই সাথে প্রচুর টাকা পয়সা খরচ করে চলতে থাকে আন্তর্জাতিক লবিং।


২০১২- দেশপ্রেমকে পুঁজি করে সীমিত সামর্থ নিয়ে চলতে থাকে বিচার কার্যক্রম। চলতে থাকে দুই পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ।


২০১৩- যুদ্ধাপরাধীদের একেরপর এক ফাঁসির আদেশ দেওয়ার বছর। (মার্চ ২০১৩) তিনটি রায় হয়েছে। তার মধ্যে দুই জনের ফাঁসি এবং এক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ চার নেতার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এছাড়া জামায়াতের গুরু গোলাম আযাম সাজা ভোগের মধ্যেই মারা গেছেন। এর মধ্যে দিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অবসান ঘটলো।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া নেতারা হলেন- দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সর্বশেষ দলপ্রধান মতিউর রহমান নিজামী।

গোলাম আযম
২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর ৯২ বছর বয়সে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জামায়াতে ইসলামের  আমীর একাত্তরের ঘাতককূল শিরোমণি গোলাম আযমের। ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ৯০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। মৃত্যুকালে তার আরও ৮৯ বছর কারাভোগ বাকি ছিল।

আব্দুল কাদের মোল্লা
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার সর্বপ্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর। ট্রাইব্যুনাল-২ এর রায় অনুসারে, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে চতুর্থ অভিযোগ ছাড়া বাকি পাঁচটি অভিযোগে অপরাধ প্রমাণিত হয়।

কামারুজ্জামান
 ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। একাত্তরে শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামে ১৪৪ জনকে হত্যা ও নারী নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ
২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সেই সময়কার আলবদর বাহিনীর নেতা মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগও।

মতিউর রহমান নিজামী
সর্বশেষ মঙ্গলবার (১০ মে ২০১৬ ) রাতে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার  অভিযোগে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করলে ৫ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ  তা খারিজ করে রায় বহাল রাখেন। ফলে সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

No comments:

Post a Comment