Tuesday, March 12, 2013

টার্গেটেড কিলিং জামায়াতের একাত্তরের চরিত্র ফিরিয়ে এনেছে :আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী



আবার একটি নৃশংস ও নির্মম হত্যাকাণ্ড। এবারও নিরীহ ও নির্দোষ মানুষের প্রাণ গেল জামায়াতি খুনিদের হাতে। তাঁর নাম মিরাজ আহমেদ। পঞ্চাশের মতো বয়স। কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাঁর পরিচয় তিনি সুরকার ও গীতিকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ছোট ভাই। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের সর্দার গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে, তার একজন সাক্ষী। এই সাক্ষীকে হত্যা করা যায়নি। তাই আক্রোশ মেটানো হলো তাঁর ছোট ভাইকে হত্যা করে।

দুই দিন আগে নারায়ণগঞ্জেও তাই করা হয়েছে। প্রজন্ম চত্বরের এক ব্লগারের কিশোরপুত্র ত্বকীকে হত্যা করে নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান সভ্যজগতে এ ধরনের পাশবিক খুনখারাবির তুলনা খুঁজে পাওয়া সহজে যাবে না। প্রথমে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনকে চাপাতি ও দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, তারপর আরেক ব্লগার প্রতিভাবান তরুণ ইঞ্জিনিয়ার রাজীবকে একই পদ্ধতিতে হত্যা। তৃতীয় দফায় আরেক সংগঠকের অসাধারণ মেধাবী ছেলে কিশোর ত্বকীকে গলা টিপে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া। তারপর দেশের খ্যাতিমান সুরকার বুলবুলের ভাই মিরাজ আহমেদকে হত্যা একটি কথাই স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে, জামায়াতিরা (এবার সঙ্গে হিযবুত তাহ্‌রীরসহ তাদের সহযোগী দলগুলো) তাদের একাত্তরের ঘাতক চরিত্রে ফিরে গেছে।

একাত্তরে জামায়াতিরা বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যায় সহযোগী হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের পরাজিত করা অসম্ভব জেনে দেশের অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে বধ্যভূমিতে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এবারও তারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান এবং যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তিদানের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ প্রজন্ম চত্বরের বিশাল যুব-জনতার মোকাবিলা করতে না পেরে একদিকে শহরে-বন্দরে পকেট-সন্ত্রাস সৃষ্টি এবং অন্যদিকে দেশের তরুণ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা শুরু করেছে। কারণ এই তরুণ বুদ্ধিজীবীরাই প্রজন্ম চত্বরের প্রেরণা ও প্রাণ। জামায়াতিদের ধারণা, এই তরুণ ব্লগার তথা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা গেলে প্রজন্ম চত্বর ভীতিগ্রস্ত হবে এবং তাদের সমাবেশ ভেঙে যাবে।

অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষিত হওয়ার পর পালের গোঁদা গোলাম আযমও যাতে একই দণ্ডাদেশ না পায় সে জন্য জামায়াতিরা পাগল হয়ে উঠেছে। এই মামলার সাক্ষীকে মেরে অথবা তাঁকে না পেলে তাঁর ভাই বা সন্তানকে হত্যা করে জামায়াতিরা যুদ্ধাপরাধ মামলার সব সাক্ষীর মনে ভয় ঢুকাতে চায়। যাতে তাঁরা ট্রাইব্যুনালে এই ঘাতক ও দালালদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য না দেন অথবা সাক্ষ্য দিলেও তা প্রত্যাহার করেন। সন্দেহ নেই, দেশের প্রখ্যাত সুরকার ও গোলাম আযমের মামলায় তার বিরুদ্ধ-সাক্ষী আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ভাই মিরাজ আহমেদকে হত্যা করা জামায়াতের পৈশাচিক হত্যার রাজনীতির আরেকটি প্রমাণ। সম্ভবত সুরকার বুলবুলকেও তারা হত্যার চেষ্টা করবে। গোলাম আযমের অপরাধের সব সাক্ষ্যপ্রমাণ তারা মুছে ফেলতে চায়।

সরকারের তাই উচিত, অবিলম্বে তাঁর এবং অন্য সব সাক্ষীকে কঠোর নিরাপত্তাদানের ব্যবস্থা করা।
গোলাম আযমের মামলায় যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছেন, রায়ের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের জীবনের ওপর যেভাবে হুমকি সৃষ্টি করা হচ্ছে, তেমনি হুমকি সৃষ্টি করা হয়েছিল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় তাঁর বিরুদ্ধের সাক্ষীদের ওপরও। সাঈদীর মামলায় বহু সাক্ষীকে একদিকে প্রলোভন দেখানো, অন্যদিকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। প্রচুর অর্থ ও অন্যান্য প্রলোভনে বশীভূত হয়ে কোনো কোনো সাক্ষী নাকি তাঁদের দেওয়া সাক্ষ্য পরে প্রত্যাহার করেছেন এবং জীবননাশের হুমকির মুখে কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার কোনো কোনো সাক্ষীর আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে এ ধরনের অভিযোগ জানতে পেরেছি।

১৯৭১ সালে গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যায় শরিক হতে জামায়াত সাহস পেয়েছিল বাংলাদেশের মাটিতে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে। কিন্তু ২০১৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট যখন ক্ষমতায়, তখন জামায়াত সারা দেশে পকেট-সন্ত্রাস ও টার্গেটেড কিলিং চালানোর সাহস পায় কোথা থেকে? জবাবটি সবারই জানা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি প্রথমে অপ্রকাশ্যে এবং এখন প্রকাশ্যে জামায়াতের সব ধরনের নাশকতামূলক কাজে সমর্থন ও সহায়তা দেওয়ায় তারা এখন শেষ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। আমি জামায়াতের এই হিংস্র জঙ্গিপনার নাম দিয়েছি, Jaamat's last ditch battle (জামায়াতের শেষ পরিখাযুদ্ধ)।

এই যুদ্ধের জন্য জামায়াত বহু দিন থেকে প্রস্তুতি নিয়েছে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ বিশাল গণম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর ধরেই নিয়েছিল ১৯৭১ সালের নরপশু যুদ্ধাপরাধীদের তারা বিচার ও দণ্ড থেকে বাঁচাতে পারবে না। এই বিচার ভণ্ডুল করার জন্য বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় থাকাকালে জামায়াত সৌদি অর্থ ও পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সহায়তায় নিজস্ব সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী গড়ে তোলে এবং আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে মার্কিন হামলার মুখে পলাতক কিছু সংখ্যক তালেবানপন্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের দিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা থেকে (বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকেও) ক্যাডার রিক্রুট দ্বারা হিযবুত তাহ্‌রীর, জয়শ-ই মোহাম্মদী ইত্যাদি সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করে। যেমন তারা করেছিল ১৯৭১ সালে আলবদর, আলশামস, রাজাকার ইত্যাদি নামে বিভিন্ন ঘাতক বাহিনী। বাংলাভাইয়ের মতো কিছু ঘাতক সন্ত্রাসীও তারা পরে স্বাধীন বাংলাদেশে তৈরি করেছিল।

বাংলাদেশে সাবেক বিএনপি সরকারের অভিভাবকত্বে পাকিস্তান থেকে পলাতক জঙ্গি দিয়ে বাংলাদেশেও তালেবান সৃষ্টি এবং তাদের অভ্যুত্থান ঘটানোর যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা ইউরোপ-আমেরিকার কয়েকটি প্রভাবশালী কাগজ, যেমন 'ফার ইস্টার্ন ইকনোমিক রিভিউ,' 'ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল', 'লা মান্তে' ইত্যাদিতে প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এই তালেবানি অভ্যুত্থানের বিপদাশঙ্কা সম্পর্কে জাতিকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
এই সতর্কবাণীতে কান দেওয়ার কোনো প্রয়োজন অনুভব করেননি তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তিনি বাংলাদেশে জঙ্গি মৌলবাদীরা আছে, এ কথা বলায় শেখ হাসিনা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন বলে অভিযোগ করেন এবং তাঁর সঙ্গে তখন কণ্ঠ মেলায় দুটি জাতীয় দৈনিকও। রবীন্দ্রনাথের 'ক্ষণিকা' কাব্যগ্রন্থের দুই লাইনের একটি কবিতা হলো : 'যতোক্ষণ দূরে থাকি বিদ্যুতের আলো বলে মোর নাম রটে,/মাথায় পড়িলে তবে বলে বজ বটে।'

বাংলাদেশেও প্রবলভাবে তালেবানি উপদ্রব দেখা না দেওয়া পর্যন্ত ক্ষমতাসীন বিএনপি (সঙ্গে সাঙ্গাত জামায়াতিরা) এবং তাদের সমর্থক মিডিয়া বাংলাদেশে মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের অস্তিত্ব নেই বলে বগল বাজিয়েছে। এর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মৌলবাদী সন্ত্রাস, শেখ হাসিনার সভায় বোমা পুঁতে রাখার ব্যাপারে হিযবুত তাহ্‌রীরের সংশ্লিষ্টতা, সিলেটে তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনারের ওপর বোমা হামলা, বাংলাভাই ও তার আরেক সন্ত্রাসী সহযোগীর ফাঁসি ইত্যাদির পর অস্বীকার করা গেল না বাংলাদেশে সন্ত্রাসী মৌলবাদীদের শক্তিশালী ঘাঁটি আছে এবং তারা বিএনপির কাঁধে চড়ে একটি অভ্যুত্থান ঘটানোর জন্য অপেক্ষারত।

২০০৭ সালে যদি এক-এগারোর আবির্ভাব না হতো, বেগম খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতে বসে ১৯৯৬ সালের মতো আরেকটি জালিয়াতি নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং জামায়াতিদের নিয়ে আবার ক্ষমতায় বসতে পারতেন।

তাহলে এবার প্রকৃত ক্ষমতা আর বিএনপির হাতে থাকত না, চলে যেত জামায়াতি পার্টনারদের হাতে। আমেরিকায় ভয়াবহ ড্রোন হামলার মুখে পলাতক পাকিস্তানি টেরোরিস্টরা বাংলাদেশে ঢুকে তাদের দ্বিতীয় শক্তিশালী ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করত এ দেশটিতে। তাদের পশ্চাৎধাবন করে মার্কিন ড্রোন হামলা বাংলাদেশে এসেও ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করলে বিস্ময়ের কিছু ছিল না। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের বিশাল জয়লাভ এই সম্ভাব্য ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছে।
ব্রিটেনের টোরি ও লেবার পার্টির মধ্যে এবং আমেরিকায় ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও গুরুতর রাজনৈতিক মতভেদ আছে। কিন্তু বহিঃশত্রুর আক্রমণের মুখে দেশ ও জাতিকে রক্ষার জন্য তারা আপৎকালীন সময়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও তার গণতান্ত্রিক অস্তিত্বের জন্য জামায়াত বহিঃশত্রুর চেয়েও ভয়ানক এক শত্রু। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই সত্যটা তর্কাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

অন্তত এই একটা ইস্যুতে, অর্থাৎ বাংলাদেশে সন্ত্রাসী মৌলবাদ ও স্বাধীনতার শত্রুদের উল্লাস ঠেকানো এবং তাদের ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও শাস্তিদানের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকত এবং তাদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব সীমাবদ্ধ থাকত নিজ নিজ রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে, তা হলে দেশে আজ এই ভয়ংকর অবস্থার উদ্ভব হতে পারত না। জামায়াতের পেছনে জনসমর্থন না থাকা এবং তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা ও যুদ্ধাপরাধের বিচার চলা সত্ত্বেও তারা দেশের নির্বাচিত সরকার, সংসদ, বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন- সব কিছুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গৃহযুদ্ধের প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে মাঠে নামার এবং দেশময় সন্ত্রাস সৃষ্টি ও টার্গেটেড কিলিং শুরু করতে সাহসী হয়েছে। বিএনপির সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া এ সাহস তারা দেখাতে পারত না; আর আকস্মিকভাবে দেখালেও এত দিনে পেছনে হটতে বাধ্য হতো।

বিএনপির নেতা-নেত্রীদের জানা উচিত, তাঁরা একটি গণতান্ত্রিক দেশে নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকারের বিরোধিতা করা হবে তাঁদের রাজনৈতিক ভূমিকা। বর্তমানে তাঁরা যা করছেন, তা সেই ভূমিকা নয়। আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিরোধিতার নামে তাঁরা যা করছেন, তা রাষ্ট্রদ্রোহী ও স্বাধীনতার শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শত্রুতায় নামার ভূমিকা। তাঁদের এটা ভুল অথবা অপরাধ যাই হোক, এর মাশুল একদিন কড়ায়-গণ্ডায় দিতে হবে।

পবিত্র কোরআনে আছে, মক্কা শহর যখন প্রবল পরাক্রান্ত বহিঃশত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল এবং মক্কাবাসী শহরটি রক্ষার কোনো উপায়ই দেখছিল না, তখন আল্লাহর নির্দেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আবাবিল পাখি হাজারে হাজারে তীক্ষ্ন ও ধারালো পাথরকণা ঠোঁটে নিয়ে মক্কার আকাশে জড়ো হয়েছিল। তাদের নিক্ষিপ্ত পাথরের আঘাতে আহত ও ভীত শত্রুরা পলায়ন করে প্রাণ বাঁচিয়েছিল। আমি বাংলাদেশের এই ক্রান্তিকালে জামায়াতিদের এই পূর্বপরিকল্পিত ও দীর্ঘ প্রস্তুতির হামলার সময় শাহবাগে আকস্মিকভাবে গড়ে ওঠা যুব-জনতার বিশাল সমাবেশের প্রত্যেক নরনারী, আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাকে বাংলাদেশ রক্ষার জন্য এই আবাবিল পাখি মনে করি। সরকার কঠোর ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকলে এই ঐতিহাসিক মহাসমাবেশের প্রতিরোধেই জামায়াত ও স্বাধীনতার শত্রুদের অ্যাক্সিস তাদের সন্ত্রাস ও নৃশংস হত্যা-অভিযান ব্যর্থ হবে, যেমন তারা হয়েছে ১৯৭১ সালে।
১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দণ্ডদান বন্ধ করার জন্য জামায়াত প্রচণ্ড পূর্বপ্রস্তুতি ও পরিকল্পনা মতো বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদী বি্লৎসক্রিগ (ঝটিকা আক্রমণ) শুরু করেছে, তা বিএনপির সমর্থন ও সহযোগিতা পাওয়া সত্ত্বেও সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে অথবা ব্যর্থ হতে যে চলেছে, তা এখন সম্পূর্ণ স্পষ্ট। জনসমর্থনের বদলে তারা এখন পাচ্ছে জনঘৃণা।
আন্দোলনের নামে দেশময় অরাজকতা সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েই জামায়াত চূড়ান্ত পরাজয়ের মুখে গুপ্তহত্যা ও তরুণ বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু করেছে। যেমন তারা করেছিল ১৯৭১ সালে পরাজিত হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের (১৬ ডিসেম্বর) দুই দিন আগে, ১৪ ডিসেম্বর তারিখ বুদ্ধিজীবী হত্যা দ্বারা। জামায়াত তার ১৯৭১ সালের ঘাতক চরিত্রে সম্পূর্ণভাবে ফিরে গেছে। হাসিনা সরকারকে এখানেই দারুণভাবে কঠোর হতে হবে। জামায়াতের কিলিং স্কোয়াডের প্রত্যেকটি নরপশুকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া এবং শাহবাগের তরুণ বুদ্ধিজীবী ব্লগার ও যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষীদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় করণীয়। রাজীব, ত্বকী, মিরাজের আত্মদান অবশ্যই বিফলে যাবে না। উৎসঃ কালের কন্ঠ

No comments:

Post a Comment