Saturday, July 20, 2013

ক্যানাডা'র ইসলামী সংগঠন "মুসলিমস ফেসিং টুমরো" - ইসলামের মুখোশে আহমাদ শফি এ যুগের আবু লাহাব


আমরা ইউটিউবে অত্যন্ত বিতৃষ্ণার সাথে নারী সম্পর্কে আহমাদ শফি’র বক্তৃতা দেখেছি। তাঁকে তাঁর সমর্থকেরা ইসলামের উঁচু পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ মনে করেন, তিনি কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, হেফাজত-এ ইসলাম বাংলাদেশে-এর আমীর ও একটি মাদ্রাসার পরিচালক। কিন্তু তাঁর বক্তৃতা শুনে রসুল (স:)-এর উদ্বেগ মনে পড়েছে, “ইসলাম শুরু করার সময় ছিল অপরিচিত, ইসলাম আবারো অপরিচিত হয়ে যাবে”।
তাঁর বক্তৃতায় রসুলের এই সতর্কবাণী সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ইসলামে নারীর অবস্থান ও ইসলামের বাণী সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণাই নেই।
কোরান নারী-পুরুষকে সমান অংশীদার করেছে। দুজনেরই সৃষ্টি একই উৎস থেকে, কেউ কারো চেয়ে উৎকৃষ্ট নয় এবং সমাজ ও পরিবারের মঙ্গলের জন্য দুজনেরই সমান দায়িত্ব রয়েছে। তাঁর উদ্ভট দৃষ্টিতে পুরুষের চেয়ে নারী নিকৃষ্ট ও সামাজিক ব্যাধির উৎস। কোরান যেখানে পুরুষের সাথে নারীরকেও ”মু’মিনাত” ও ”মুসলিমাত” বলে সম্বোধন করেছে, শফি সেখানে নারীকে হীনভাবে তেঁতুল বানিয়েছেন, যা পুরুষকে ব্যভিচারে প্রলুব্ধ করে। সুরা নিসা নাজিলই হয়েছে নারীর ওপরে; সেই সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে নারীর অবস্থান উন্নত করেছে যেখানে আগে গোত্রীয় সমাজে শিশুকন্যাকে মেরে ফেলা হত। এর শ্বাশ্বত বাণী হলো যুগে যুগে নারীর উন্নত করে পুরুষের সমান করতে হবে। এর অর্থ হল সময়ের বিবর্তনে নুতন নুতন পরিস্থিতিতে অবশ্যই নারীর অধিকার পুরুষের সমান করে হবে কারণ এভাবেই সমাজের কল্যাণ ও অগ্রগতি নিশ্চিত হবে।
কিন্তু শফি’র বক্তৃতা কোরানের শিক্ষার বিপরীত। তিনি নারীশিক্ষার নিন্দা করেছেন, পেশাজীবী নারীরা সমাজে উস্কানী দিয়ে ব্যভিচার ছড়ায় বলে অপমান করেছেন, এবং নারীকে গৃহবন্দী করার দাবী করেছেন। তিনি নারীর ক্ষমতায়নের বিরোধী, বাইরে নারীর উপস্থিতি নিয়ে ক্রুদ্ধ হয়েছেন, এবং তিনি বলেছেন নারীর একমাত্র কাজ হলো পুরুষের স্বার্থ রক্ষা করা ও সন্তান পালন করা। এটা সুস্পষ্ট যে কোরান ও রসুলের ঐতিহ্য সম্পর্কে শফির জ্ঞানের অভাব রয়েছে। তাঁর কথায় প্রতিফলিত হয়নি নবুয়ত পাবার আগে পরে বিবি খাদিজা’র শক্তি, প্রজ্ঞা ও সম্পদের ওপরে রসুল (স:) কি বিপুলভাবে নির্ভর করেছেন। স্বনির্ভর নারী হিসেবে বিবি খাদিজার উদাহরণ থেকে সর্বত্র সর্বকাল শিক্ষা নিতে হবে। দরিদ্র ও পশ্চাদপদ জাতির জন্য এ শিক্ষা আরো প্রয়োজনীয় যে, শক্তিশালী ও স্বনির্ভর নারীরা পরিবার ও সমাজের অগ্রগতির শক্তির উৎস যে সমাজে নারী-পুরুষ সমান সম্মান ও অধিকার নিয়ে সন্তানদের গড়ে তোলে।
কোরানে যে নারীকে ইসলামের প্রতি ঘৃণার জন্য নিন্দা করা হয়েছে সে হল রসুলের দুই শত্রু চাচা আবু লাহাবের স্ত্রী ও আবু সুফিয়ানের বোন। ইসলামের মুখোশে আহমাদ শফি এ যুগের আবু লাহাব। এদের জন্যই মুসলিম সমাজের একটা অংশ এখন এত অজ্ঞ, এত পশ্চাদপদ ও এত জঙ্গী। এদের জন্যই রসুলের পরে যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহ’র অধ:পতন হয়েছে যার সতর্কবাণী তিনি করেছিলেন। আহমাদ শফি শঠ এবং অজ্ঞ দুটোই। বাংলাদেশের ভেতরে-বাইরে প্রতিটি বিবেকবান মানুষের উচিত তাঁকে সম্পূর্ণ বর্জন করা।
লেখক পরিচিতি: রাহিল রাজা ও ড. সলিম মনসুর, যথাক্রমে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট, মুসলিম’স ফেসিং টুমরো

No comments:

Post a Comment