Wednesday, July 10, 2013

কান্ডারি বলো ডুবিছে মানুষ , সন্তান মোর মা’র:সুমি খান


সম্মানিত বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার প্রকৃত রূপ সচেতন মানুষের কাছে উন্মোচিত। সমর্থকদের কাছে তিনি আপোষহীন নেত্রী। ‌এই ‘ ‌দেশনেত্রী’ যদি একবার অন্তত দেশপ্রেম, মানবিকতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতেন এদেশের নিরীহ মানুষ গুলোর প্রাণ বেঁচে যেতো। এভাবে বৌদ্ধমন্দির এবং হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর হামলা হচ্ছে সারাদেশে , আপনি কি থামাবেন এদের প্লীজ?
এই প্রজন্মের অসীম সাহসী তরুণ ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে শাহবাগে দেশপ্রেমিক তরুণেরা প্রায় একমাস বিনিদ্র আন্দোলন করে যাচ্ছে , এই আন্দোলন অহিংস । সহিংস আন্দোলনে অভ্যস্ত রাজনীতি কি আর অহিংস আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে পারে? না, পারে না। জামাত বিএনপির কার্যক্রমে জনগণ তাই দেখলো । নিরীহ জনগণ কে তাই প্রাণ দিয়ে বুঝতে হচ্ছে এদেশের রাজনীতি এখনো জনমুখী হয় নি।
একতরফা পুলিশ হত্যা , সংখ্যালঘু নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি দেখে ও খুনিদের পক্ষে সাফাই গাইছেন, তাদের মদত দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। ফেসবুকে অনেকের কমেন্ট , “আপনি একাত্তরে গণহত্যা দেখেন নি , তাই গণহত্যার কোন সংজ্ঞা আপনার জানা নেই। এ কারণেই আপনি জামাত শিবির চক্রের নির্বিচার হত্যাকে সমর্থন দিয়ে উল্টো অভিযোগ করছেন, সরকার গণহত্যা করছে। একাত্তরে আপনি পাকিস্তানি জেনারেল জাংজুয়া কে কাছে থেকে দেখেছেন । তার প্রতি আন্তরিকতা আর শ্রদ্ধা থেকে এ দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৭ সালে তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে পাকিস্তান ছুটে গিয়েছিলেন।” তিনি এই দেশ এবং এদেশের মানুষকে কখনো ভালো বেসেছেন কিনা, মানবতার প্রতি তার ন্যুনতম শ্রদ্ধা আছে কিনা- মানুষের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
দৈনিক আমার দেশ এর মাধ্যমে এর সম্পাদক চরম দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি মাহমুদুর রহমান যেভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়াচ্ছেন এর বিরুদ্ধে সরকার এবং দেশের সকল শান্তিপ্রিয় মানুষকে একসাথে সোচ্চার হয়ে কাজ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে অতীতের কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে হচ্ছে।
স্বৈরাচারী এরশাদ তার পতনের অন্তিম মুহুর্তে্, ১৯৯০ সালের অক্টোবরে, মওলানা মান্নানের মালিকানাধীন এবং সম্পাদিত পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাবকে ব্যবহার করে স্বৈরচারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন নসাৎ করার চেষ্টা করেছিল। মাদ্রাসা শিক্ষক দের টাকা ছিনতাই করে নাকি ইনকিলাব পত্রিকার মালিক হয়েছিলেন মওলানা মান্নান।
যাই হোক্, ১৯৯০ এ অক্টোবরের ৩১ তারিখের দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত বাবরি মসজিদ ধ্বংস-সংক্রান্ত মিথ্যা সংবাদের ওপর ভিত্তি করে মৌলবাদীরা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থানগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারাদেশের হিন্দু উপাসনালয়গুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। সেসময়ে আমার নিজের চোখে দেখা চট্টগ্রাম শহর এবং প্রত্যন্ত এলাকায় প্রায় প্রতিটি হিন্দু জনপদ, মন্দির আক্রান্ত হয়েছে। কী বিপন্ন সময় কাটিয়েছে নিরীহ মানুষ গুলো।

এসব ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক হামলায় মদতদানকারী দৈনিক ইনকিলাব ও তার অবৈধ মালিক একাত্তরে ডা. আলীম চৌধুরীর হত্যায় সহায়তাকারী মওলানা মান্নানকে কখনও এজন্য জবাবদিহি করতে অথবা শাস্তি পেতে হয়নি। শুধুমাত্র ১৭ দিনের জন্য ইনকিলাবের নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছিলো।

ইনকিলাব কে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় উস্কানি দেবার পরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না হবার কারণেই নব্বই য়ের পর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়ে যায়।
মুক্তবুদ্ধি চর্চার মানুষের উপর সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ও প্রগতিশীল জনগণের ওপর একের পর এক আঘাত আসতে থাকে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের হিন্দু মৌলবাদীদের বাবরি মসজিদ ভাঙার পর, দেশব্যাপী হিন্দু সমাজের ওপর যে বর্বর ও ভয়াবহ নির্যাতন নেমে আসে- তা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি মিলিটারি ও তাদের দোসরদের হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুণ্ঠনের বিভীষিকার কথা বার বার মনে করিয়ে দেয়।একই ধারাবাহিকতা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে কেন ঘটে চলবে? কেন নিরীহ মানুষগুলোকে বারবার সম্ভ্রম, বাড়িঘর, মহামূল্যবান প্রাণ নিয়ে প্রতিমুহূর্তে শংকার মধ্যে দিন কাটাতে হবে?

বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে, ২০০১ সালে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু পরিবার এবং মন্দিরে নির্বিচার হামলা,হত্যা এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিলো তা সভ্যসমাজ বা গণতান্ত্রিক সমাজে নজিরবিহীন।
২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর হামলার পর বহু হিন্দু পরিবারকে প্রাণের মায়া নিয়ে বসতভিটা ছেড়ে, দেশান্তরী হতে হয়েছিল। জামায়াত-বিএনপির ক্যাডারদের হাতে সম্ভ্রমহানি হওয়া অনেক কে পালিয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে দীর্ঘদিন। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল কিশোরী পূর্ণিমার প্রতি ভয়াবহ নির্যাতন। বাঁশখালীর জলদিতে দিনমজুর আরতি বালার তিন প্রজন্মকে একসাথে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা এবং একই উপজেলার শীলপাড়ায় এগারোজনকে গানপাউডার ছড়িয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার পর সরেজমিন রিপোর্ট করতে গিয়ে যে বীভৎসতা আমি প্রত্যক্ষ করেছি,এখনো আমার হৃদয় রক্তাক্ত হয় সেসব বর্বরতার চিত্র মনে করে।
যা বলছিলাম, এসব বর্বরতার মূল পরিকল্পনাকারী আমিন চেয়ারম্যান এর চাচাতো ভাই বাঁশখালীর সাংসদ বিএনপি নেতা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ২০০৮ এর নির্বাচনে ও বিজয়ী হয়েছেন। তার ক্ষমতায় বলীয়ান তার চাচাতো ভাই কালিপুর ইউনিয়নের আমিন চেয়ারম্যান উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গায়ে হাওয়া দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । এই ক’দিন আবার তার নেতৃত্বে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে বাঁশখালীতে। যার কলমের নির্দেশে এই খুনি বর্বর আমিন জামিন পেয়েছে, তিনি কি হিন্দু সংখ্যালঘু পরিবারের উপর আমিনের এই বর্বরতার দায় এড়াতে পারেন? আর যাদের ব্যর্থতার কারণে জাফরুল ইসলাম ২০০৭ সালে আবারও সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রামের প্রগতিশীল রাজনীতিকেরা কি এর দায় এড়াতে পারবেন?

সে সময়ে আমি সাপ্তাহিক ২০০০ এর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। আমি দেখেছি চট্টগ্রাম শহর এবং প্রত্যন্ত এলাকায় প্রায় প্রতিটি হিন্দু জনপদ, মন্দির আক্রান্ত হয়েছে। সংখ্যালঘু এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার মানুষের জন্যে ২০০১ থেকে ২০০৫ জামাত বিএনপি জোটের পুরো শাসনামল ছিল বিভীষিকাময় ।

পিটিয়ে হত্যা করার সময় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে চারজন পুলিশ সদস্য নিরস্ত্র ছিলেন। মাদ্রাসার কয়েক শ কিশোরকে সামনে রেখে পেছন থেকে হামলার নেতৃত্ব দেয় জামায়াত-শিবির।

বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক আবু হানিফ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেলস্টেশনে হামলার পর তিন-চার হাজার লোক তদন্ত কেন্দ্রে হামলা শুরু করলে আমরা তাদের থামতে বলি। তারা পাথর ছুড়ে মারতে থাকে। আমরা বলি, সামনে এগুলো আমরা গুলি করব। এ সময় তারা উল্টো গুলি ছোড়ে। পরিস্থিতি দেখে আমরা শটগান ও রিভলবারের ৩২টি ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে নিরাপদে সরে যাই। তখন তারা নিরস্ত্র পুলিশ সদস্যদের পেটাতে শুরু করে। যে চারজন পুলিশ মারা গেছেন, তাঁরা সবাই নিরস্ত্র ছিলেন।’

পুলিশ জানায়, বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলার পর সেদিন সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ থানায় হামলা চালায় জামায়াত-শিবির। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে তিনজন নিহত হয়। তবে তাদের পরিচয় গতকালও মেলেনি। চার পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বামনডাঙ্গা শহীদ মিনারে শোকসভা হয়েছে। সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপ-কমান্ডার এম এ আউয়াল। সভার আগে এলাকাবাসী একটি শোক মিছিল করে। তারা পুলিশ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে।
পরদিন শুক্রবার সকালে জামায়াত-শিবির শান্তিরামে পিটিয়ে মারে যুবলীগের নেতা নূরন্নবীকে। গতকালও ওই বাড়িতে ছিল শোকের ছায়া। নূরন্নবীর বাবা মালে উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলেকে কী কারণে মারল? আমি এর বিচার চাই।’
এ ছাড়া গত দুই দিনে জামায়াত-শিবির হামলা করেছে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বামনডাঙ্গা রেলস্টেশন, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সদরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় এখনো ১৪৪ ধারা জারি আছে। সুন্দরগঞ্জে হামলার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা পুলিশও পৃথকভাবে ঘটনার তদন্ত করছে। গতকাল শনিবার শেষ বিকেলে বামনডাঙ্গার মানুষ যখন বৃহস্পতিবারের তাণ্ডবের কথা বলছিলেন, তখনো তাঁদের চোখেমুখে ছিল আতঙ্ক।
এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা এক ঘণ্টা ওই তাণ্ডব চলে। রেলস্টেশন মাস্টারের কার্যালয় ও আশপাশের দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ফেরার পথে বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের চার পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জামায়াত-শিবির মাদ্রাসাছাত্রদের নিয়ে এই নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে। ৫৫ বছর বয়সী ব্যবসায়ী রনজু মিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘এ কোন দেশ? ২২ বছর ধরে শাড়িকাপড় আর মনোহর সামগ্রীর ব্যবসা করছি। কোনো দিন এমন ভয়াবহতা দেখেননি। প্রকাশ্য দিবালোকে কয়েক শ লোক এসে আমার বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। চলে লুট। ব্যাংক থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে যেসব মালামাল কিনেছি, সব শেষ। চার ছেলেমেয়ে নিয়ে এখন চরম দুশ্চিন্তায় আছি।’
বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনের পাশেই চা-বিস্কুটের দোকান চালাতেন ৪৪ বছরের মোহাম্মদ আলিম। ১৪ বছর ধরে তিনি এখানে দোকান করছিলেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর দোকানও। স্টেশনের পাশেই পানের দোকান দিয়ে জীবন-জীবিকা চালাতেন বৃদ্ধা ফাতেমা বেগম। আহাজারি করে জানালেন, তাঁর একমাত্র সম্বল দোকানটিও ভাঙচুর করা হয়েছে। এই বাজারের হরেন, আয়নাল, শামীম, আলমগীর, গনি—সবাই একই আতংকে আছেন। বৃহস্পতিবারে সবার দোকান পুড়িয়ে দিয়েছ সন্ত্রাসীরা। স্টেশনের আশপাশে থাকা ৩০-৩৫টি দোকানের সবাই কম-বেশি হামলার শিকার হয়েছে। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনের টিকিটঘর।
স্টেশনমাস্টার আতাউর রহমান জানালেন, নগদ দেড় লাখ টাকাসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের বামনডাঙ্গা উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়েও হামলা হয়েছে। প্রকৌশলী অফিসের চৌকিদার সাইফুল ইসলাম জানালেন, অফিসের সবকিছুই জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে, ‘রেলস্টেশনে পরিকল্পিতভাবে হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা সামনে রেখেছিল বিভিন্ন মাদ্রাসার কয়েক শ’ কিশোরকে।
রেলস্টেশনে হামলার পর আসরের আজানের সময় জামাত শিবিরের জঙ্গী সন্ত্রাসীরা “নারায়ে তাকবির” বলে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলা চালায়। পুলিশ ফাঁকা গুলি চালালেও উত্তেজিত শিবির ক্যাডারদের ঠেকানো যায় নি। পুলিশের অস্ত্রের গুলি শেষ হয়ে গেলে পুলিশ পিছু হটে। এ সময়ে হামলাকারীরা চারজন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করে। বাবলু ও নাজিম নামে দুই পুলিশের লাশ রক্তাক্ত অবস্থায় তদন্ত কেন্দ্রের পেছনে পড়ে ছিল। অন্য দুই কনষ্টেবল হযরত এবং তোজাম্মেল আহত হন,পরে তাঁরাও মারা যান।

হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমি ১২ বছরের কিশোর ছিলাম। স্বাধীনতার সময়ও এমন তাণ্ডব দেখিনি।’ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘জাতি জামায়াত-শিবিরের এই তাণ্ডব দেখে স্তম্ভিত।’ সাংবাদিকেরা এসব হামলার বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির ইউনুস আলীর বক্তব্য জানার জন্য তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ইউনুস আলীর সবগুলো ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। জেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহিম কারাগারে। সেক্রেটারি আবদুল করিমের মুঠোফোনও বন্ধ।

বামনডাঙ্গা ও সুন্দরগঞ্জে সুনির্দিষ্ট করে সংখ্যালঘুর বাড়ি ও দোকানে হামলা হয়েছে। গাইবান্ধা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রণজিৎ বকসি বলেন, বেলকা ইউনিয়নে দুটি এবং শান্তিরামে তিনটি মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে। অনেক সংখ্যালঘুর বাড়ি ও দোকানে হামলা হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জের শান্তিরাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরজিত কুমার বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শান্তিরাম মন্দিরে আগুন দেওয়া হয়। এরপর আমার বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। স্বাধীনতার এত বছর পরও যদি এভাবে আমাদের বাঁচতে হয়, সেই কষ্ট আমরা কোথায় রাখবো?” দেশের প্রতিটি শান্তিপ্রিয় নাগরিক একই বেদনায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। একই আতংকে সন্ত্রস্ত। মাননীয় বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে এর দায় নিতেই হবে। তার বক্তব্য এই সাম্প্রদায়িক হামলার উস্কানি দিয়েছে। এই বিপন্ন পরিস্থিতিতে সরকারকে আরো সতর্ক হতে হবে আসন্ন বিপর্যয় ঠেকাতে।
এ প্রসঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ এবং সভ্যতা ধ্বংসে ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ এর অনুসারীদের ধ্বংসাত্মক তৎপরতা এবং তা দমনের ইতিহাস উল্লেখ করতে হয়।
কোন ধর্মীয় পবিত্র স্থানকে “ক্রিমিন্যাল”দের অপরাধীদের আশ্রয়, অপকর্ম অপতৎপরতার কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হতে দেয়া হয় না কোন দেশেই। একমাত্র ব্যতিক্রম, বোধহয় বাংলাদেশ।

এবার উল্লেখ করি, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের লাল মসজিদের কথা। ১৯৬৫ সালে নির্মিত এই মসজিদটির এক ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জেনারেল জিয়াউল হকের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, জিয়াউল হকই পাকিস্তান নামের এই দেশটিকে কট্টর মৌলবাদী রাষ্ট্র বানিয়ে ছাড়েন। আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলদার বাহিনীকে তাড়াতে আমেরিকা এবং সৌদি আরবের সরাসরি সাহায্য নিয়ে তালেবান, আলকায়েদা এবং ওসামা বিন লাদেনদের মতো দানবদের সৃষ্টি করেন পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউল হক।
লাল মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জোটবদ্ধ হয়ে জেনারেল জিয়াউল হককে জোর সমর্থন দিয়ে যান। আমাদের দেশেও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বুদ্ধিজীবিদের ঘাতক মওলানা আবদুল মান্নান জোর সমর্থন দিয়েছেন দুই সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল এরশাদকে।

পাকিস্তানে একটি ফতোয়া দেয়ার কারণে ইমামের পদ থেকে অপসারিত করা হলো মাওলানা আবদুল্লাহ কে। তিনি ফতোয়া দিলেন যে, তালেবানরা আফগানিস্তানে আমেরিকানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, জেহাদ করছে, সুতরাং এই তালেবান জেহাদী দের হত্যায় কোন পাকিস্তানী জড়িত থাকলে তার জানাজা পড়া জায়েজ হবে না।


পাকিস্তানের আইএসআই, ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স, দেশটি চালায় – এটা অনেকেই জানেন। আইএসআই এর কাছে এই ফতোয়া ভয়ংকর এক হুমকি হয়ে দাঁড়াল। প্রশ্ন উঠলো-তালেবানদের সাথে যুদ্ধে মারা গেলে তাদের শহীদ হওয়ার কথা!! তা না হয়ে মৃত্যুর পর জানাজাই পাওয়া যাবে না?? তাহলে পাকিস্তানের সৈন্যবাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধে বা জেহাদে যাবে কেন? বাবা- মা’ রাই বা কেন তাদের সন্তানদের পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অথবা জেহাদে পাঠাতে চাইবেন?

এই ফতোয়া র বুমেরাং থেকে বাঁচতে ইমাম আবদুল্লাহকে অপসারণ করা হলো ঠিকই, কিন্তু তার দুই ছেলে মাওলানা গাজী আবদুল আজিজ এবং মাওলানা গাজী আবদুর রশীদের নিয়ন্ত্রণে থাকল এই লাল মসজিদ।
২০০৭ সালের ৩ জুলাই, লাল মসজিদসংলগ্ন মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা কোন রকমের উস্কানি ছাড়াই পাশের এক সিকিউরিটি পোস্টের পুলিশদের আক্রমণ করলো। অস্ত্রশস্ত্রও লুট করলো। কয়েকজন সরকারী কর্মচারীকে জিম্মিও করে ফেললো।
সেই সাথে দাবি তুলল, মহিলাদের লেখাপড়া বন্ধ করতে হবে, টেলিভিশন বন্ধ করতে হবে, ভিডিও দোকান বন্ধ করতে হবে এবং পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা, লেখাপড়া কিছুই থাকতে পারবে না। তাদের আরও একটি দাবি, পাকিস্তানে কোন সংখ্যালঘু, ‘মাইনোরিটি থাকতে পারবে না; সকল বিদেশী এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পাকিস্তান থেকে তাড়িয়ে দেশটিকে ‘পবিত্র ভূমি’ বানাতে হবে।

৩ জুলাই থেকেই পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে এই সন্ত্রাসীদের সাথে সমঝোতার লক্ষ্যে আলোচনা দেনদরবার চলতে থাকে । কিন্তু তারা তো শান্তির বিরুদ্ধে। সমঝোতায় কেন আসবে তারা?
লাল মসজিদের এই সন্ত্রাসীরা ৬ জুলাই হত্যা করে ১৮ জন পুলিশ সদস্য এবং একজন বেসামরিক নাগরিককে। তারপরও আলোচনা চলতে থাকে। কিন্তু না, এই ধর্মান্ধ মোল্লারা ‘সুইসাইড স্কোয়াড’ এর হুমকি দিতে থাকল। লাঠি হাতে কালো বোরকায় চুল থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা মহিলাদেরও তখন লাল মসজিদে দেখা যায়। ন্যূনতম মানবিক বিবেচনা বর্জিত এই সন্ত্রাসীরা শিশুদেরও বর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে থাকলো। এই এক্সট্রিমিষ্ট দের দমনে কঠোর হতে হলো পাকিস্তান সরকারকে।
এমন অরাজকতা, নৈরাজ্য কোন সরকার ই মেনে নিতে পারে না! ধর্মের নামে, ধর্মের এমন অপব্যবহার কোন রাষ্ট্র ই সহ্য করতে পারে না- যদি সেই দেশটি সোমালিয়ার মতো ব্যর্থ রাষ্ট্র না হয়।

জেনারেল জিয়াউল হকের শাসনামলে পাকিস্তানের ‘আইএসআই’ প্রকাশ্যে ও খুব তৎপর ছিল । তখন ‘ইসলামাইজেশন অব পাকিস্তান’, ‘মিলিটারাইজেশন অব পাকিস্তান’ এবং ‘ইসলামাইজেশন অব আর্মি’ চরমে পৌঁছে। কিন্তু লাল মসজিদের দখল- মৌলবাদী এবং ধর্মান্ধদের এত বড় পৃষ্ঠপোষক আইএসআইও মেনে নিতে পারলো না । সরকারী নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে আবার দখলে নিল এই মসজিদটি। এতে ১৭৩ জন নিহত হলো। আহত হলো আরও এক হাজার।

ইসলামধর্ম রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব নিয়ে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সৃষ্ট পাকিস্তানে ইসলাম ধর্মের নামে ব্যবসা করতে দেননি পাকিস্তানের একজন জেনারেল- প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। তাই হয়তো আইএসআই য়ের রোষানলে পড়তে হলো তাকে।
এবার পবিত্র কা’বা শরীফ দখলের প্রসঙ্গে আসা যাক্।
১৪০০ হিজরী সালের রমজান মাসের প্রথম দিন, ১৯৭৯ সালের ২০ নবেম্বর, ভোর ৫টার দিকে যখন মুসল্লিরা ফজরের নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন জুহায়মান আল ওতাইবি নামের এক পথভ্রষ্ট উগ্রপন্থীর নেতৃত্বে হামলা হয় পবিত্র কাবা শরীফে। তার সাথে চার পাঁচ শ’ উগ্র ধর্মান্ধ লোক ছিলো। কা’বা শরীফে ঢুকেই তারা কা’বা শরীফের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়। মিনারের বিভিন্ন জায়গায় উঠে অবস্থান নেয় এবং গোলাগুলি করতে থাকে। তখন হজের মৌসুম। অনেক মুসল্লি আটকা পড়েন পবিত্র ক্বাবা শরীফে।
ক্বাবা শরীফ দখল করেই জুহায়মান আল ওতাইবি ঘোষণা দেয়, নতুন হিজরী শতাব্দীর পবিত্র দিনে ইমাম মেহেদীর আগমন ঘটেছে। তার দাবিমতে, এই ইমাম মেহেদীর নাম আবদুল্লাহ আল কাহতানী এবং তিনি ওতাইবিরই এক আত্মীয়।
তারা তখন সৌদি রাজপরিবারের বিরুদ্ধে অনেক উদ্ভট অভিযোগ আনে।সৌদি রাজপরিবারের উৎখাতও দাবি করে তারা ।

তখন সৌদি কিং ছিলেন বাদশাহ খালেদ। তাঁর বড় ভাই বাদশাহ ফয়সল এক আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার পর ১৯৭৫ সালে যিনি বাদশাহ হয়েছিলেন। বাদশাহ খালেদের পর যুবরাজ ছিলেন প্রিন্স ফাহাদ এবং তারপর প্রিন্স আবদুল্লাহ।
প্রিন্স খালেদ ১৯৮৩ সালে মারা যাওয়ার পর যুবরাজ ফাহাদ বাদশাহ হলেন । বাদশাহ ফাহাদ মারা যাওয়ার পর যুবরাজ আবদুল্লাহ বাদশাহ হলেন ।এখনো ক্ষমতায় আছেন তিনি।

১৯৭৯ সালের নবেম্বরে কা’বা শরীফে যখন হামলা হয়, তখন যুবরাজ ফাহাদ এবং প্রিন্স আবদুল্লাহ ভিন্ন ভিন্ন সফরে উত্তর আফ্রিকায় ছিলেন।
বাদশাহ খালেদ সেই সংকটজনক পরিস্থিতিতে পবিত্র হারেম শরীফ থেকে সন্ত্রাসীদের উচ্ছেদ এবং উৎখাত করার দায়িত্ব দিলেন ডিফেন্স মিনিস্টার প্রিন্স সুলতান এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স নায়েফকে।

সৌদি রাজপরিবারের এই দুই সদস্য ওতাইবি এবং তার দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর আগে সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ বিন বাজের সাথে আলোচনা করলেন। গ্র্যান্ড মুফতি শেখ বিন বাজ এই অভিযান অনুমোদন করতে সম্মত হলেন। সাথে সাথে শুরু হয় জুহায়মান আল ওতাইবিদের উচ্ছেদ অভিযান।
সৌদি সরকারের অনুরোধে পাকিস্তানও তখন একটি কমান্ডো দল পাঠায় কা’বা শরীফ উদ্ধারঅভিযানে সাহায্য করতে। এই অভিযানে প্রায় ১০ হাজার সৈন্য সামন্ত নিয়োগ করা হয়েছিলো। ১৯৭৯ সালের নবেম্বরে এই অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৭ জন নিহত হয়, আহত হয় প্রায় সাড়ে চারশ’। ওতাইবির পক্ষে নিহত হয় ১১৭ জন। পরে শরীয়া আইন অনুসারে বিচার করে ওতাইবিসহ ৬৮ জনের মুন্ডু কেটে নেয়া হয়।

লাল মসজিদ এবং পবিত্র কাবা শরীফ দখলে নিয়ে যে অপকর্ম করেছিল সন্ত্রাসী উগ্রপন্থী জঙ্গী রা এবং এই দু’টি পবিত্র স্থান পরে কেমন করে উদ্ধার করা হয়েছিল সব বিস্তারিত তথ্য ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে।

ধর্মের নামে এই সন্ত্রাসী দখলদারদের আক্রমনাত্মক ভূমিকার কলংকজনক ইতিহাস বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বারবার জনসমক্ষে তুলে ধরা উচিত। জাতীয় শিক্ষাক্রম এবং উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে লিপিবদ্ধ থাকা উচিত এই ইতিহাস। দেশের নতুন প্রজন্ম কে রক্ষা করার জন্যে এই ধর্মব্যবসায়ীদের প্রকৃত চরিত্র উন্মোচন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ, কাঁটাবন মসজিদ এবং আমাদের অনেক মসজিদ মাদ্রাসাকে জামায়াত-শিবির এবং তাদের সমমনা দলগুলোর লোকজন ইসলাম ধর্মের নামে কেমন কলুষিত করে চলেছে, তা অব্যাহত থাকতে দেয়া যায় না। যেমন হতে দেয়া হয়নি পবিত্র কা’বা শরীফ এবং পাকিস্তানের লাল মসজিদে।


জানা যায়, পুলিশ হত্যা, থানা ও ফাঁড়ি ভাঙচুর, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি-দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় শুক্রবার রাতে আনোয়ারুল ইসলাম, আবদুর রউফ, লেবু মণ্ডল নামে তিনজনকে এবং শনিবার জিয়াউর রহমান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকালও সুন্দরগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। মোতায়েন হয়েছে বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ। পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, সুন্দরগঞ্জ থানায় দুটি মামলা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব বলেছেন, হামলার শিকার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। আমার মনে হয়, হামলাকারীদের তালিকা প্রণয়ন অনেক জরুরী। একথা সত্যি, যে, আমাদের প্রশাসনে জনবল এবং দক্ষতা এখনো প্রয়োজনের তুলনায় কম।এখানে মসজিদে আশ্রয় নিয়ে মসজিদ থেকে হামলা চালায় জামায়াত –শিবির-জঙ্গীরা।
এই দেশে একটি পত্রিকা অফিসে আশ্রয় নিয়ে পুলিশ এবং নিরীহ মানুষজনকে টার্গেট করে ভারপ্রাপ্ত ‘চান্স মোহাম্মদ’’ এডিটর জেহাদী মাহমুদুর রহমান ধর্মান্ধ মোল্লাদের উস্কায়। নিরীহ সংখ্যালঘু এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সৈনিকদের ‘নাস্তিক’ বলে তাদের হত্যার হুমকি দেয়।
দেশের গ্যাসসম্পদ বিক্রি করে নাইকো থেকে কোটি টাকার গাড়ি নেয়া সহ সীমাহীন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং প্রমাণিত ব্যক্তি মাহমুদুর রহমান উচ্চ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি- কী করে তিনি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক হতে পারেন?

রাজীবের হত্যাকারী ৫ জন গ্রেফতার হয়েছে। তারা স্বীকারোক্তি ও দিয়েছে। এবার শহীদ রাজীবের নৃশংস হত্যাকে জায়েজ করার জন্যে তার ‘চরিত্র হননকারী’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং এই মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক প্রতিবেদনের প্রতিবেদক মাহমুদা ডলির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবার সময় এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির বিরুদ্ধে সংবাদপত্র কে ব্যবহার করে এ ধরণের মিথ্যা এবং উস্কানিমূলক প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। পত্রিকায় বিবৃতিদানকারী ২১ বিশিষ্ট নাগরিকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার আবেদন,শুধু বিবৃতি আর কলাম লিখে সীমাবদ্ধ নয় আমাদের কাজ। বাস্তবে কাজ করতে হবে।
বিচ্ছিন্নতা নয় আর, প্রজন্মের নেতৃত্ব দেশ বিদেশের কোটি কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। এই সাহসী সময়কে ধরে রাখতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে অনেক দূর। নজরুলের ভাষায় বলি, হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোন্ জন? কান্ডারী বলো ,ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র।”
আমার ভাই , আমার বোন , আমার মা বিপন্ন । ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এগিয়ে আসতে হবে এই সহিংসতা ঠেকাতে। প্রথাগত পুঁথিগত এবং নির্বাচনী রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে এসে কাজ করতে হবে রাজনীতিবিদদের। বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে সকলকে। এর মাধ্যমেই এই উপমহাদেশে ও মুসলিম ব্রাদারহুড বা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কবর রচিত হবে। May 2013 .Sumikhan29bdj@gmail.com

No comments:

Post a Comment