Tuesday, September 18, 2012

শান্তি চুক্তির ফলে পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে , ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাতায়াত বেড়েছে ;আমি যখন আছি- তখন আপনাদের সমস্যা দেখব"-প্রধানমন্ত্রী


ঢাকা, সেপ্টেম্বর ১৮ -মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে পার্বত্য জেলাগুলোর তিন সার্কেলের হেডম্যানদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় আশ্বাস দিয়েছেন । প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠা হওয়া প্রয়োজন। আমি যখন আছি- তখন আপনাদের সমস্যা দেখব।”

পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

“আমি চাই- আপনাদের ঐতিহ্য, নিয়ম ও প্রথা যেন বজায় থাকে”, হেডম্যানদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন “আমি তো চাই- আপনাদের ঐতিহ্য, নিয়ম ও প্রথা যেন বজায় থাকে”,।
চিরদিন থাকব না। বার বার এই সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।” ভূমির মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে জমি রেজিস্ট্রির বিষয়ে মনোযোগী হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই পার্বত্য শান্তি চুক্তি হয়েছিল স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনাদের ভরসা থাকা উচিত- আমরা যখন শান্তি চুক্তি করেছি, তখন তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের।”

“আগের সরকার সমস্যা জিইয়ে রেখে ফায়দা লুটতে চেয়েছিল। আর এই সমস্যা তাদেরই সৃষ্টি”, অভিযোগ করেন তিনি।

সবাইকে সহনশীল আচরণ করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নিজের দেশে কেন সংঘাত হবে? রক্ত ঝরবে?”কোনো গোষ্ঠী, সংস্থা বা উন্নয়ন সহযোগীর নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদেরও ছাড় দিতে হবে। আপনাদেরও দেখতে হবে, আপনারা কতোটা ছাড় দিতে পারেন। অনেকে বন্ধু সেজে কাছে আসবে। কিন্তু মঙ্গল হবে না।”


এর আগে চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায় পার্বত্য এলাকার খাজনা সীমিত পরিমাণে হলেও বাড়ানোর কথা বলেন। সার্কেল চিফ, হেডম্যান ও কারবারীদের ভাতা বাড়ানোর দাবি জানান খাগড়াছড়ি জেলার হেডম্যান শক্তিপদ চাকমা।

বান্দরবান জেলার হেডম্যান মাসৈড়ি মারমা পার্বত্য এলাকায় শিক্ষার প্রসার বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে খাগড়াছড়ির ১৯ মৌজার হেডম্যান আন্নাইউ চৌধুরী ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি আইন সংশোধনসহ সবার পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি-দাওয়া প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাতা বৃদ্ধি করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।“কিঞ্চিৎ হলেও বাড়ানো হবে”, বলেন তিনি।

এর আগে গত ৬ জুলাই হেডম্যানদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী সার্কেল চিফদের মাসিক ভাতা এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার, হেডম্যানদের ভাতা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা এবং কারবারিদের জন্য মাসিক পাঁচশ টাকা ভাতার ব্যবস্থা করার কথা বলেন


পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “ভূমি কমিশনের বৈঠকে তো আপনাদের সমস্যার কথা বলতে হবে। যোগ না দিলে তো সমস্যা জানা যাবে না।” শান্তি চুক্তির ফলে পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাতায়াত বেড়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

ঢাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভবনের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

No comments:

Post a Comment