Tuesday, September 18, 2012

বিবাহ নিবন্ধন ঐচ্ছিক রেখে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিল পাস


হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিবাহ নিবন্ধনের বিধান ঐচ্ছিক রেখে ‘হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিল-২০১২’ সংসদে পাস হয়েছে। এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে হিন্দু ধর্মমতে অনুষ্ঠিত বিয়ে এ আইনের অধীনে নিবন্ধন করা যাবে বলেও বিধান রাখা হয়েছে।মঙ্গলবার বিলটি জাতীয় সংসদে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের পক্ষে পাসের প্রস্তাব করেন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। পরে এটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। উল্লেখ্য, ভারতে ১৯৫৫ সালে ‘হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট’ প্রণীত হয়েছে।

গত ৩ জুলাই বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে এটি পরীক্ষা করে সংসদে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।হিন্দু বিবাহের দালিলিক প্রমাণ রাখা ও বিবাহ সংক্রান্ত প্রতারণা থেকে হিন্দু নারীদের রক্ষা করতে এ বিল পাস করা হয়েছে।

বিলের জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব উত্থাপনের সময় একমাত্র স্বতন্ত্র সদস্য মোহাম্মদ ফজলুল আজিম ‘ঐচ্ছিক’ বিধান বাদ দেওয়ার দাবি জানান। পরে সংশোধনী প্রস্তাব ওঠানোর সময়েও তিনি বিয়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান। পরে সেটি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিবাহ তাদের শাস্ত্রমতে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর কোনো দালিলিক প্রমাণ থাকে না। দালিলিক প্রমাণ না থাকার কারণে বিবাহ পরবর্তী বিবাহ সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয় মৌখিক সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর নির্ভরশীল। ফলে বিবাহের যে কোনো পক্ষ বিশেষত: হিন্দু নারীরা বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তাদের সহজে আইনি সুরক্ষা প্রদান করা সম্ভব হয় না। বর্তমানে বিদেশ ভ্রমণ, অভিবাসন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন সম্পর্কিত দালিলিক প্রমাণ একটি অপরিহার্য বিষয়।

আরো বলা হয়েছে, প্রতারণার সুযোগ বন্ধ করা এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সামাজিক ও আইনি সুরক্ষা সৃষ্টির লক্ষ্যে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন। বিলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিবাহ ঐচ্ছিকভাবে নিবন্ধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি আইন প্রণয়নের জন্য হিন্দু সম্প্রদায় থেকে দাবিও উত্থাপিত হয়েছে।

বিলের ৪ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার সিটি করপোরেশন এলাকার ক্ষেত্রে সময় সময় নির্ধারিত এলাকা এবং সিটি করপোরেশন বহির্ভূত এলাকার ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলা এলাকায় একজন ব্যক্তিকে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক হিসেবে নিয়োগ দেবে।বিলের ৫ ধারায় বলা হয়েছে, অন্য কোনো আইনে যাই থাকুক না কেন, ২১ বছরের কম বয়স্ক কোনো হিন্দু পুরুষ বা ১৮ বছরের কম বয়স্ক কোনো হিন্দু নারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তা এ আইনের অধীন নিবন্ধনযোগ্য হবে না।

প্রস্তাবিত আইনের ৬ ধারায় বিবাহ নিবন্ধনের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, হিন্দু ধর্ম, রীতিনীতি ও আচার অনুষ্ঠান অনুযায়ী হিন্দু বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর ওই বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে যে কোনো পক্ষের নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিবন্ধক নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিবাহ নিবন্ধন করবেন।

No comments:

Post a Comment