Wednesday, August 15, 2012

মাদারীপুরে নবজাতকের হাত ভেঙে দিলেন নার্স!

মাদারীপুরে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের (মাতৃমঙ্গল) এক নার্স ছুড়ে ফেলে দিয়ে এক নবজাতকের হাত ভেঙে দিয়েছেন বলে পরিবার থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নবজাতক ১৩ দিন ধরে অসুস্থ হয়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

মাদারীপুর সদর হাসপাতাল, নবজাতকের মা রোজিনা বেগম ও নানী সুফিয়া বেগম বাংলানিউজকে জানান, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের সস্তাল গ্রামের কৃষক আমিন তালুকদারের স্ত্রী রোজিনা বেগমের ২ আগস্ট প্রসবব্যথা শুরু হলে মাদারীপুর সদরের মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।

সেখানে দায়িত্বরত ডাক্তার ও নার্স রোজিনাকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানোর কথা বলেন।

কিন্তু রোজিনা অপারেশন করবেন না বলে জানান। এতে নার্স ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে রুম থেকে বের করে দেন। কোনো উপায় না পেয়ে রোজিনা হাসপাতালের নিচে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন।

একপর্যায়ে নার্স বাধ্য হয়ে তাকে লেবার রুমে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর তিনি অপারেশন ছাড়াই স্বাভাবিক নিয়মেই একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।

দায়িত্বরত নার্স প্রথমে সন্তানকে তার মায়ের পাশে দেন। পরে শিশুটিকে মৃত বলে পাশের একটি বেডে ছুড়ে ফেলে দেন।

এসময় নবজাতক নড়ে উঠলে তাকে ফের মায়ের কাছে দেওয়া হয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দ্রুত মা ও শিশু সুস্থ আছে বলে ৯শ টাকা বকশিস রেখে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

বাড়িতে যাওয়ার পর রোজিনা টের পান তার সন্তানের হাত ভাঙা। ২ দিন পর ওই শিশুকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এবিষয়ে রোজিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে জানান, এটাই তাদের প্রথম সন্তান। তার স্বামী মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করেন। মাতৃমঙ্গলের নার্স তাকে অপারেশনের কথা বললে টাকার কথা চিন্তা করে তিনি রাজি হননি।

পরে অপারেশন ছাড়াই তিনি একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। তাদের কথা মতো অপারেশন না করায়, নার্স ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলেকে মৃত বলে ছুড়ে ফেলে দেয়। এতে তার সন্তানের ডান হাত ভেঙে যায়। এসময় তারা এ ঘটনার জন্য তার কাছে ক্ষমাও চায়।

ডাক্তার ও নার্সের নাম জানতে চাইলে রোজিনা বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি কীভাবে তাদের নাম বলবো? মাত্র কয়েক ঘন্টা সেখানে ছিলাম।‘

রোজিনা অভিযোগ করে জানান, নার্সের জন্যই তার ছেলের হাত ভেঙে গেল। অথচ তারা ছেলেকে কোনো চিকিৎসা বা পরামর্শ না দিয়েই ৯শ টাকা বকশিস রেখে দ্রুত তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।

তবে এ ব্যাপারে রোজিনার স্বামী দুই/একদিনের মধ্যে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা করবে বলে জানান তিনি।
মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র সূত্রধরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই সময় আমি ছুটিতে ছিলাম। তাই, এই ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে নার্সরা ইচ্ছে করে এ ঘটনা ঘটাতে পারেননা। হয়ত ভুল করে এ ঘটনা ঘটতে পারে।‘

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, এ ব্যাপারে থানায় কেউ এখনও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments:

Post a Comment