Tuesday, January 14, 2014

সংখ্যালঘুদের আজ ঘুরে দাঁড়ানোর সময় : দেবাহুতি চক্রবর্তী


 সাম্প্রতিককালে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশ সম্পর্কিত আলোচনার শীর্ষ বিষয়গুলোর অন্যতম বিষয় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। এ বিষয়ে বিভিন্ন মহলের ও বিশিষ্টজনদের বক্তব্য, লেখনী আমরা পড়ছি, দেখছি। আমরা কেউ কেউ আবেগে আপ্লুত হচ্ছি। কেউ কেউ ক্ষোভে ফুঁসে উঠছি। অথচ বিষয়টা কোন অপ্রত্যাশিত নয়। বিস্মিত হওয়ার মতোও কোন ঘটনা নয়। বিভিন্ন সময়ে বিশেষত দেশে কোন নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের ঘটনা অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০০১ সালের নির্বাচনের পর এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার প্রেক্ষিতে পত্র-পত্রিকায় আমি নিজেও কিছু লেখালেখি করেছি। মিলিয়ে দেখলাম, আবেগ দিয়ে লিখতে গেলে একই লেখার পুনরাবৃত্তি করতে হয়। একই লেখা হুবহু প্রকাশ করলেও পার্থক্য খুঁজে পাওয়া কঠিন।

কিন্তু আজ আমি সম্পূর্ণ আবেগমুক্ত। শরীরে কঠিন ব্যাধি ক্যান্সার নিয়ে ভারতে দীর্ঘ চিকিৎসার পর সম্প্রতি দেশে এসেছি। একটা কথা জেনেছি, ক্যান্সার কোন সংক্রামক ব্যাধি নয়। জেনেটিক কিনা সে বিষয়েও চিকিৎসাবিজ্ঞান দ্বিধাগ্রস্ত। দেশে ফিরে যা দেখছি, যা শুনছি তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রযন্ত্রের অঙ্গে অঙ্গে ক্যান্সার। যার অন্যতম বহিঃপ্রকাশ এ নিরবচ্ছিন্ন সাম্প্রদায়িকতা। ভাবতে ইচ্ছে করে এ কি সংক্রামক হিসেবে না উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়াজ্জ?

তা না হলে এমনটি তো হওয়ার কথা ছিল না। এ ভূখ-ে সাম্প্রদায়িকতার উৎসজ্জ তার স্বরূপজ্জ তার বিবর্তিত ইতিহাস খুঁজতে বহুদূর যাওয়া যেতে পারে। একাত্তরজ্জ পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যুদয়জ্জ ব্রিটিশ ভারতজ্জ মোগল আমলজ্জ সেসব অনেক দূরবর্তী ইতিহাস। সেসব বিষয়ে ইতিহাসবিদ এবং গবেষকরা এযাবৎ আলোচনা-পর্যালোচনায় রয়েছেন, থাকবেন। সেটাই স্বাভাবিক।

জ্জ আমরা সাধারণ মানুষ সোজাসুজি দেখেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূল চেতনা ছিল অসাম্প্রদায়িকতা। ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী এবং তার বাঙালি দোসরদের হাতে আনুপাতিক হিসাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতিত হিন্দু সম্প্রদায়। তবু মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের পরে খুব অল্পসংখ্যক হিন্দু পরিবারই ভারতে থেকে গেছে। নতুন বিশ্বাসে ফিরে এসেছে অধিকাংশ শরণার্থীই। বাহাত্তরের সংবিধানের মূল চারটি স্তম্ভে সে বিশ্বাস আরও গ্রথিত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য একাত্তর পরবর্তী হিন্দু জনসংখ্যা আজ এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। এ কি শুধুই হিন্দুদের ভারতপ্রীতি আর দেশপ্রেমের অভাব?

বাস্তবতা অনেক কঠিন। ১৯৬৪'র পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর থেকে শত্রু সম্পত্তি আইনের নামে হিন্দু সম্পত্তি আত্মসাতের যে প্রক্রিয়া শুরু হয় তা স্বাধীন বাংলাদেশে নানা ছদ্মনামে; নানা বাতাবরণে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১২ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

২০১২'র অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন অবশ্যই বিগত সরকারের প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। কিন্তু ক্রমশ আইনের প্রায়োগিক সমস্যায় ও বিচারাঙ্গন এবং সরকারের রাজস্ব দফতরের দীর্ঘসূত্রতা ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতির মুখে হিন্দু সম্প্রদায় এখানেও নানাভাবে নাজেহাল হচ্ছে। নিজের মাটি নিজের করে পেতে যে আর্থিক ও মানসিক খেসারত আইনের আড়ালে জোগান দিতে হচ্ছে তা দুঃখজনক এবং এক্ষেত্রেও নতুন করে নানাবিধ হুমকি ও শত্রুতা সৃষ্টি হচ্ছে। যার সবটা দৃশ্যমান নয়। কিন্তু সরকারের দূরদৃষ্টি স্বচ্ছ হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

একাত্তর পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের যেসব তালিকা তৈরি হয়েছে তার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তি খুবই কম। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকবাহিনী ও তার বাঙালি দোসরদের হাতে নিহত হিন্দুদের তালিকা কখনই যথাযথভাবে প্রস্তুতের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আমার অসুস্থকালীন সময়ে আমি নিজে কিছু অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের দরখাস্ত তৈরি করতে যেয়ে দেখেছি হিন্দু পরিবারগুলোয় মুক্তিযুদ্ধে নিহত মানুষগুলোর নাম শহীদ হিসাবে অন্তর্ভুক্তি তো দূরের কথা তাদের সম্পত্তি ভিপি তালিকাভুক্ত হয়ে আছে। রাজবাড়ী জেলায় একমাত্র শহীদ অ্যাডভোকেট কালীশঙ্কর মৈত্রের সম্পত্তি ও ভিপি সম্পত্তি দাবি করে সরকার দীর্ঘদিন মামলায় লড়ে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়েছে। কিন্তু এ শহীদ অ্যাডভোকেটের নামে বহুবার প্রস্তাব দেয়া সত্ত্বেও রাজবাড়ী জেলায় কোন জনপ্রতিনিধি বা সরকারের পক্ষ থেকে একটা নামফলক পর্যন্ত কোথাও পাওয়া যাবে না। দেশজুড়ে হিন্দুদের প্রাপ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ রকম।

পঞ্চম ও অষ্টম সংশোধনীর পর দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসা মহাজোট সরকার যার মধ্যে কথিত প্রগতিশীল বাম নেতারাও রয়েছেন পঞ্চদশ সংশোধনী এনে হিন্দু ও অন্যান্য ক্ষুদ্র ধর্মীয় সম্প্রদায়কে চিরস্থায়ীভাবে সংখ্যালঘু ও দ্বিতীয়  শ্রেণীর নাগরিক এ পরিণত করেছেন।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সহজেই চিনতে পারে। ভয় পায়। আওয়ামী লীগ বা বাম দলগুলোকে অপেক্ষাকৃত কাছের মনে করতেই পারে। তাদের সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ধ্যান-ধারণার জন্য। কিন্তু তাদের হাতেই ধর্ম নিরপেক্ষতার বকচ্ছপ মূর্তি। বিষয়টা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বোঝে না তা নয়। রাজনৈতিক ক্ষমতা রক্ষার জন্য এ আপসকামিতার হিসাব সাধারণ মানুষ গুনতে জানে।

সব সরকারের আমলেই মুষ্টিমেয় দু'চারজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে বেছে নেয়া হয়। যারা কখনই নিজেদের স্বার্থ সুবিধা আদায় ছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তার সর্বশেষ উদাহরণ সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত। যার ছত্রছায়ায় পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার বাইরে ছুড়ে দেয়া হয়েছে।

বিশ্বের অধিকাংশ স্থানেই যে কোন ধরনের অর্থাৎ ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্র নিজেই যদি সাম্প্রদায়িক চরিত্রের হয় তাহলে প্রতিকার পাওয়ার অবকাশ কোথায়?

২০০১ থেকেই যদি ধরি। অদ্যাবধি খুব অল্পসংখ্যক সহিংসতার ঘটনার বিচারে দোষীরা শাস্তি পেয়েছে। তদন্ত কমিশন গঠিত হয়। তার প্রস্তাব চাপা পড়ে যায়। বিদায়ী সরকারের আমলে রামু, কক্সবাজার, হাটহাজারী, সাতক্ষীরা অন্যান্য জায়গার সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কয়টি ঘটনার বিচার হয়েছে? শত শত মানুষকে আসামি করে যেমন-তেমন একটা চার্জশিট গঠন করে আদৌ কি বিচার পাওয়া সম্ভব? পাবনার সাতক্ষীরার ঘটনার স্পষ্টত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার অনুসারীদের নামটা উঠে এলো। সত্য-মিথ্যা যেটাই হোক। কোন নিরপেক্ষ তদন্ত এযাবৎ হয়নি। কোন নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন জনগণের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঘুচানোর জন্য প্রকাশ না করে শাসকপক্ষ তাকেই আবার সংসদীয় প্রতিনিধি হিসেবে সম্মানিত করলেন।

এসব কথাগু উঠে আসার অর্থ সংখ্যালঘু ধর্মীয় বা জাতিগত সম্প্রদায়ের কোন মানুষই মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বিশ্বাস করতে পারে না। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কাছে টানার মতো যথেষ্ট প্রচেষ্টা রাখেনি। বৃহৎ বাম দলগুলোর প্রধানরা একই নৌকায় একই সুরে ভাটিয়ালি গান করছেন। অন্য বাম দলগুলো নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বে এতই খ- বিখ- যে তারা কোন বিকল্প শক্তি হয়ে দাঁড়াতে পারছে না। তাহলে কী চিরদিন এদেশে একদিকে নির্যাতন-ধর্ষণ-সর্বস্ব হারানো, অন্যদিকে করুণা আর সহানুভূতির পাত্র হয়েই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়দের দিন যাপনের গ্লানি বইতে হবেজ্জ ?

চিকিৎসার সুবাদে দীর্ঘ নয় মাস ভারতে থাকার সুবাদে নানা আলাপ-আলোচনায় যেটুকু বুঝেছি, এদেশের হিন্দুরা ভারত সরকারের কাছে সম্পূর্ণই এখন অবাঞ্ছিত, বহিরাগত ক্ষেত্রবিশেষে সন্ত্রাসী। একাত্তর পরবর্তী সময়ে ও ভারতে চলে যাওয়া হিন্দুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। কিন্তু আইন-আদালত থেকে সব সময় নিজেদের রক্ষা করার জন্য সেখানেও তারা শামুকের মতো গুটিয়ে আছে। অন্যায়-অবৈধ পথে কাগজপত্র তৈরি করতে যেয়ে এ দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী শিক্ষিত ব্যক্তিকেও লিখতে হচ্ছে শুধুমাত্র স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন। আইনসম্মতভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে তাদের দু'চার প্রজন্মের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ফলে সেখানেও সব সময়ই নানা নিরাপত্তাহীনতায় তাদের দিন কাটছে। এ বাস্তবতায় এখান থেকে ঠেলা খেয়ে ভারতে যাওয়ার চিন্তাও এখন সচেতন হিন্দু সম্প্রদায় করতে পারে না। যাদের আর্থিক ক্ষমতা আছে, তারা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো বেছে নিতে পারে। কিন্তু সেটা কজন?

আজ তাই সময় এসেছে, সত্যিকার অর্থে ঘুরে দাঁড়ানোর। ঘুরে দাঁড়ানোর অর্থ এই নয় সশস্ত্র সহিংসতার পথ। হিন্দুদের এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিজ নিজ রাজনৈতিক চিন্তা, নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের কর্মী সংগঠন হিসেবে পরিচয় বা অন্তর্ভুক্তি থাকতেই পারে। সেখানে কোন বাধা নেই। কিন্তু সম্প্রদায়ের স্বার্থের প্রশ্নে দল মতের ঊর্ধ্বে দাঁড়ানোর আজ সময় এসেছে। সেখানে নিজেদের লেজুড় বৃত্তির বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে।

মনে রাখতে হবে একাত্তরে বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে রাজাকার বা মৌলবাদীর সংখ্যা যা ছিল, আজ তার চেয়ে এই সংখ্যা অনেক অনেকগুণ বেশি। এর কারণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন আমলের সরকারি নীতি ও পৃষ্ঠপোষকতা। আজওজ্জ আগে বাঙালিজ্জ নাজ্জ মুসলমানজ্জ এ আত্মপরিচয়ের সংকট সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের অনেকেরই কাটেনি। বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পাশাপাশি আমরা লক্ষ্য করছি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম, বাংলাদেশের সত্যিকার প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার ধারক-বাহকরা আজ ধর্মীয় এবং জাতিগত-ভাষাগত বিভেদের বাইরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠিত দেখতে সাহসী পদক্ষেপ রেখে চলেছেন। আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই। তাদের সঙ্গে তাদের পাশে এদেশের সব ধরনের সংখ্যালঘুদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে হবে। রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতার সংকট, বিভিন্ন শাসক ও রাজনৈতিক দলের সাম্প্রদায়িকতার সংকট নিরপেক্ষভাবে চিহ্নিত করতে হবে এবং এর বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ প্রতিরোধ সংহত করতে হবে। তবেই সম্ভব মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদী শক্তিকে এদেশ থেকে প্রতিহত করা। আজ আর পলায়নবাদের পথ নেই। কুণ্ঠিতজ্জ সংকুচিত হয়ে করুণা ভিক্ষার সময় নেই। আজ আত্মশক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে এদেশের তরুণ প্রজন্ম ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার ধারক-বাহকদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিয়মতান্ত্রিক লড়াইয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আজ তাই সব সংকোচের বিহবলতা; সব সংকটের দুঃসহতা কাটিয়ে নিজেদের আত্মশক্তিতে ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। কিছু কিছু প্রশ্ন জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে অমীমাংসিত আছে। কিন্তু এদেশের সব শ্রেণীর সংখ্যালঘুদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আত্মপরিচয়ের কোন সংকট নেই। এ গর্ব আর অধিকারবোধ নিয়েই নতুনভাবে পথ চলার পথ তৈরি করতে হবে। তা না হলে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।

No comments:

Post a Comment