Sunday, June 23, 2013

আমি বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই


আমি বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই , বঞ্চিত করে বাঁচালে আমায়!
শবে বরাতের রাতে কতো প্রত্যাশা কতো জনের !! প্রত্যাশা মতো ভাগ্য খুলে গেলে প্রাণে খুশির জোয়ার! আর নাহয় তো হতাশায় ডুবে যাওয়া... এই তো জীবন!!...
ছোটবেলায় এই রাত টির জন্যে অপেক্ষায় থাকতাম.... মোমবাতি , আতশবাজি নিয়ে আসতেন বাবা। আর মা সারাদিন ব্যাংকিং, মহিরা পরিষদ এর মামরা মোকদ্দমা - আন্দোলন সংগ্রাম সেরে বুটের ডালের হালুয়া, পরোটা, ঝাল ঝাল মুরগীর মাংস, গরুর মাংস, আরো নানান নাশতা নিয়ে বাপ্পুর বাসা, ফুইয়া দের বাসা, খালাম্মাদের বাসা , মামা দের বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা! কী অপূর্ব বন্ধন! পারিবারিক একাত্মতা ধরে রাখার একনিষ্ঠ প্রয়াস! আমি নিজের অবস্থান থেকে ভাবতে থাকি -আমার বাস্তবতা আমার পারিপার্শ্বিকতা এতো বিরূপ কেন? এখনো আম্মু তার এ চর্চা ধরে রাখতে পেরেছে! আর আমি এখনো অস্তিত্বের সংগ্রাম করে চলেছি!

আব্বু পাথরঘাটার বাড়িটা তোলার পর আমরা নীচতালায় থাকতাম। ঘরের সামনের সিঁড়ি তে সুন্দর করে নানান রঙ্গের মোম জ্বালাতাম। আব্বুর হাতে ছোট ছোট মোম আর অনেক বাজি! আমি ভাইয়া, অমি< ইশতিয়াক... সবার হাতে হাতে মোম আর বাজি!! শিশুদের আনন্দ দেবার জন্যে বাবার যে কী উৎসাহ!!
মোমের আলোয় কী সুন্দর আলোর সারি !! আর অনেক বাজির মধ্যে তারা বাজি হাতে নিলেই কী ভয় যে লাগতো! আবার আনন্দ ও পেতাম খুব!
আব্বুর মনের ভেতর আমৃত্যু এই শিশুতোষ - শিশুপ্রেমী মন ছিল। আমার বিয়ের পর ও শবেবরাতের সন্ধ্যায় বাবা একইভাবে মোম আর বাজি নিয়ে গিয়েছিলেন! আরো কতো কী যে নিতেন! লুডু ও নিয়ে যেতেন! বলতেন বাড়ির বৌয়েরা একটু অবসরে খেলবে বাচ্চাদের নিয়ে!!একটি রক্ষণশীল পরিবারে বাবার এমন প্রস্তাব এর যে কী ভয়াবহ আর বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয়েছিলো! সেসব মনে হলো হঠাৎ নিজেকে এতো বেশী অপরাধী মনে হয়!!

সব থেকেই একদিন বঞ্চিত হতে হয় মানুষ কে!

No comments:

Post a Comment