Saturday, January 13, 2018

পাপের ও বাপ থাকে প্রমাণ করলো ওয়ান-ইলেভেন- সুমি খান

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী ঘুম ভেঙ্গে খালেদা জিয়া  স্তম্ভিত হয়েছিলেন তার সহযোগী অপশক্তি পাকিস্তানী গোষ্ঠীর দোসরদের মদতে  সন্ত্রাস ধর্ষণ , নির‌্যাতন,বোমা হামলায় ধ্বংসগামী রাষ্ট্র  বাংলাদেশকে থমকে দাঁড়াতে দেখেছিলেন। ১১ বছরে অনেকটা এগিয়েছে বাংলাদেশ ।জ্বালানি ,বিদ্যুত, কৃষি,নারী উন্নয়ন এবং শিক্ষা  প্রতিটি খাতে  অগ্রগতি চমকে দিয়েছে সারা বিশ্বকে ।

তবে হঠকারী রাজনীতি থেমে নেই ।ক্ষমতাসীন দল ঘিরে যথারীতি অন্ধকারের শক্তির তান্ডবে বিপন্ন শুভশক্তি ।

২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে খালেদা ফিরেছিলেন কুমিল্লা থেকে। সেখানে থেকে ঢাকায় ফিরেছেন রাত প্রায় ১টা বেজে গেছে । পরদিন বেগম খালেদা জিয়া পরদিন যখন ঘুম থেকে জাগলেন, বঙ্গভবনে তখন সেনা প্রধান মইন ইউ আহমেদসহ অন্যরা। সেদিন সন্ধ্যা নাগাদ রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ  ২২ জানুয়ারীর একপক্ষীয় নির্বাচন বাতিল করে জরুরি অবস্থা জারি করেন।একই সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি হন ইয়াজউদ্দিন ।গভীর রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন।

পরবর্তীতে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। এর আগের ইতিহাস জানা সবার। নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করতে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে দিয়েছিল খালেদা-নিজামী সরকার। সাধারণ জনগণ সেটা মেনে না নেয়াতে দেশে এক রক্তক্ষয়ী অবস্থার সৃষ্টি হয়।

অবশেষে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের নেতৃত্বেই গঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।  অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো অভিযোগ করতে থাকে, বিএনপিকে আবার সরকারে আনার ব্যবস্থা করছেন ইয়াজউদ্দিন। এর পর আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাড়তে থাকে। আন্তর্জাতিক শক্তির চাপে সেনা বাহিনী দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়, বাংলাদেশের জনগণ মুখোমুখি হয় ওয়ান ইলেভেন এর ।সেই মুহূর্তে ‘গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি এড়ানো গেছে বলে জনগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।

মাইনাস -টু ফর্মুলা অনুযায়ী সেনা সমর্থিত  তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনীতি থেকে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে ‘মাইনাস’ করার চেষ্টা করে। জনচাপে সেটা সফল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে এবং পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ‘আলোচিত-সমালোচিত’ নির্বাচন করে ৯ বছর ধরে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে , ২০০৬ সালে  জামাত -বিএনপি যদি ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য লোভ না করতো অার প্রকৃতই একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকমও হতে পারতো।

মূলতঃ এক/এগারোর মাধ্যমে জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির সাজানো নির্বাচনে ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে ধরে রাখার লোভ বিএনপি করেছিল, পন্ড হয়ে গেল সেই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ।

No comments:

Post a Comment