Thursday, February 26, 2015

স্যালুট হুমায়ুন আজাদ স্যার ,আপনার পথে অভিজিৎ - ঘাতকদের ক্ষমা নেই-সুমি খান

প্রথাবিরোধী লেখক, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবি ড. হুমায়ুন আজাদের উপর জঙ্গী হামলার আজ ১১ বছর পার হয়ে ১২ তম দিন । এর মধ্যে ২৬ ফেব্রুয়ারী রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হলো মুক্তমতের পথিকৃৎ অভিজিৎ রায়কে। ঘাতকদের কোনভাবেই পার পেতে দেয়া যাবে না।এ পরিস্থিতিতে প্রগতিশীল শক্তির বিচ্ছিন্নতা এবং দায়িত্বহীনতা সর্বনাশকেই ত্বরান্বিত করছে।
 কিন্তু ফারাবী যখন সরাসরি হত্যার হুমকি দেবে, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম, জামায়াত, শিবির সহ উগ্র মৌলবাদী জঙ্গীরা যখন হত্যার হুমকি দেবে কিংবা সরাসরি হত্যা করবে, তাদের নিম্নাঙ্গের কেশ ছেঁড়ার ক্ষমতা বা সদিচ্ছা এই রাষ্ট্রের নেই। আবার এ দেখে অনেকের ধর্মাঙ্গ দাঁড়িয়ে সালাম ঠুকে বেহেস্তে যাওয়ার রাস্তা পরিষ্কার করবে।
৫৫ হাজার বর্গমাইলের বাঙলাদেশে যখন অন্ধকারের শক্তি  মৌলবাদ বিস্তারলাভ করতে থাকে, বিশেষ করে ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত, তখন ২০০৪ এ প্রকাশিত হয় হুমায়ুন আজাদের 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' বইটি।বইটিতে  তিনি মৌলবাদীদের ফ্যাসিবাদীদের চরিত্রের শৈল্পিক রূপ দেন। মুখোশ খুলে ফেলেন একাত্তরের ঘাতক দালাল ফ্যাসিবাদী জামাতে ইসলাম এবং তাদের দোসরদের । তারই জের ধরে ২০০৪ সালে হুমায়ুন আজাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা হয় । বইটি প্রকাশিত হলে বাংলাদেশের  মৌলবাদীরা মসজিদে এবং বিভিন্ন স্থানে ড.হুমায়ুন আজাদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। ।পরবর্তীতে জামায়াতুল মুজাহেদীন জেএমবি'র জঙ্গীরা এই হামলার দায় স্বীকার করে। 
২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত বইমেলা থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসায় যাওয়ার পথে ঘাতকদের আক্রমণের শিকার হন তিনি। বিদেশে নিবিড় চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। এর কিছুদিন পরেই জার্মান সরকার তাকে গবেষণা বৃত্তি প্রদান করে।
ষাটের দশকের কবিদের সমপর্যায়ী আধুনিক কবি। সমসাময়িক কালের পরিব্যাপ্ত হতাশা, দ্রোহ, ঘৃণা, বিবমিষা, প্রেম ইত্যাদি তার কবি সত্বার প্রধান নিয়ামক। তার প্রথম কাব্যগন্থের নাম অলৌকিক ইস্টিমার যা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালেরে জানুয়ারি মাসে। তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ জ্বলো চিতাবাঘ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮০ সালে মার্চে। সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালের এপ্রিলে। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ '’যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল'’। তার পঞ্চম কাব্যগ্রন্থ আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে প্রকাশিত হয় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর আট বছর পর ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় তার ষষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু। তার সপ্তম কাব্যগ্রন্থ পেরোনোর কিছু নেই প্রকাশিত হয় ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ সালে। এটিই হুমায়ুন আজাদের জীবদ্দশায় প্রকাশিত শেষ কাব্যগ্রন্থ। তবে হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর পর ফেব্রুয়ারি ,২০০৫ সালে এই সাতটি কাব্যগ্রন্থ সহ আরো কিছু অগ্রন্থিত ও অনূদিত কবিতা নিয়ে তাঁর কাব্যসমগ্র প্রকাশিত হয়।

No comments:

Post a Comment