Saturday, July 7, 2012


বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে জামায়াত নেতাদের সংগঠন ‘কর্ডোভা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’। মুনাফার কথা বলে দুই শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেয় ২৪ জন জামায়ত নেতাকর্মীর সমন্বয়ে গঠিত এ মাল্টিপারপাস সোসাইটি।
প্রথম দফায় টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার পর এখন গ্রহকদের কাছ থেকে পূবের্র নেয়া ব্ল্যাংক চেকে টাকার পরিমাণ বসিয়ে আবারও টাকা দাবি করা হচ্ছে। গ্রাহকরা প্রতিবেদককে জানান, (২ পৃষ্ঠা ১ কঃ দেখুন) এবার কোটি
(প্রথম পৃষ্ঠার পর)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিবির নেতা মোঃ আরিফুল ইসলাম এবং সূত্রাপুর থানা জামায়াতের নেতা মোঃ সহিদুল ইসলাম ২০০৮ সালে পুরনো ঢাকার বাংলাবাজার এলাকায় চালু করে কর্ডোভা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড। ঠিকানা ব্যবহার করা হয় ১১,১১/১ পিকে রায় রোড, ইসলামী টাওয়ার (চতুর্থ তলা) বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০। সঙ্গে রাখে আরও ২২জন জামায়াত নেতাকর্মীকে। কর্ডোভা মাল্টিপারপাস কোন নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবসা করেছে। তাদের কোন নিবন্ধন নম্বর নেই। সমবায় অধিদফতরের অনুমোদন নেয়া হয়নি বলেও জানা গেছে।
প্রতারণার কৌশল হিসেবে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মাল্টিপারপাসের পাস বইয়ের শুরুতে ব্যবহার করা হয়েছে সুরা বাকারার ২৭৫ নম্বর আয়াতের বাংলা অনুবাদ। যার অর্থ ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদকে করেছেন হারাম‘। আর সেøাগান হচ্ছে ‘ইসলামী মূলনীতি সুদমুক্ত অর্থনীতি’।
খুচরা ও ছোট ব্যবসায়ীরা বিশ্বাস করে তাদের কাছে টাকা আমানত রাখে। এছাড়া অনেকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলে দৈনিক চাঁদা দিয়ে টাকা জমা করেন কর্ডোভা মাল্টিপারপাসে। তিন বছরে ২ শতাধিক ব্যবসায়ী সঞ্চয়ী হিসাব খুলে তাদের কাছে টাকা জমা রাখে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে টাকা ফেরত বা টাকার মুনাফা দেয়নি। তাছাড়া মানুষের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করতে বাংলাবাজার এলাকায় কয়েকজন গ্রাহককে ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণও দেয় তারা। যে সব গ্রাহককে ঋণ দেয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে টাকা আদায় করে নিয়েছে কর্মকর্তারা। কিন্তু কারও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেয়নি। গত ছয় মাস ধরে তাদের ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বরং সংগঠনটি লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার পর নয়া কৌশলে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। প্রতারণার শিকার ইমতিয়াজ লাইব্রেরির মালিক জনকণ্ঠকে বলেন, তিনি ২০০৮ সালে কর্ডোভা মাল্টিপারপাসে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। সংগঠনটি তিনি সহ কাউকে টাকা ফেরত না দিয়ে পালিয়ে গেছে। পালিয়ে যাওয়ার পর নয়া কৌশলে মানুষের কাছ থেকে টাকা দাবি করে আসছে কর্ডোভার কর্মকর্তারা। মোঃ নুরুল হক নামে এক গ্রাহক প্রতিবেদককে বলেন, তিনি ওই সোসাইটির কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। তারপর তিনি প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। তার সঞ্চয় আছে ৯ হাজার তিনশ টাকার মতো। উধাও হয়ে যাওয়ার পর তার কাছে আবার ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে কর্ডোভার সেক্রেটারি আরিফ। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তারপর তাকে চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি উকিল নোটিস প্রেরণ করে। সেখানে কর্ডোভার নাম উল্লেখ করা হয়নি। উকিল নোটিসে বলা হয় চেক ডিজঅনার হওয়ার প্রেক্ষিতে এনআই এ্যাক্টের ১৩৮ ধারা মোতাবেক নোটিস প্রেরণ করা হয়। চেক ডিজঅনার হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে ওই গ্রাহক জানান, তাকে ঋণ দেয়ার সময় তার কাছ থেকে তিনটি ব্ল্যাংক চেক নেয় কর্ডোভার কর্মকর্তারা। পালিয়ে যাওয়ার পর ওই চেকে নিজেদের ইচ্ছেমতো টাকা বসিয়ে নিয়েছেন। এভাবে অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করে নয়া কৌশলে টাকা আদায় করেছে বলে জানান গ্রাহকরা। যে ব্যক্তি টাকা দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করে তার বিরুদ্ধে উল্টো প্রতারণার মামলা দায়ের করার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে তাদের সঠিক ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে বিষয়টি জানতে চাইলে সংগঠনের সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম ফোন কেটে দেন।                                                                                                                              

No comments:

Post a Comment